আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আরও বড় লড়াই শুরু হবে

এখন ওঁরা সবাই একটু জিরোতে চান, একটু শান্তি ও নিশ্চিন্তের ঘুম। বদ্রি সিং, আশা দেবী, গৌরব ও মনুর এখন এর বেশি আর চাহিদা নেই। এই চারজন তাঁদের নামের বাইরে বেরিয়ে এখন বেশ পরিচিত। কারণ, তাঁরা ‘নির্ভয়া’র বাবা, মা ও ভাই। ২৩ বছরের নির্ভয়ার ধর্ষণ-হত্যার ঘটনা তাঁদের সম্মিলিত জীবন শুধু বদলেই দেয়নি, নীরব এক শপথেও শরিক করে তুলেছে।

না হলে গত শুক্রবার আদালতের ঐতিহাসিক রায়ের তিন ঘণ্টা পর দিল্লির দক্ষিণ-পশ্চিমে দ্বারকায় সরকারের দেওয়া তিন কামরার ফ্ল্যাটের এক চিলতে বারান্দায় বসে ক্লান্ত অথচ তৃপ্ত বদ্রি সিং বলতে পারতেন না, ‘এখন থেকে আমাদের আরও বড় লড়াই শুরু হবে। শয়ে শয়ে হাজার হাজার নির্ভয়ার হয়ে লড়তে হবে আমাদের। তার আগে একটানা নয় মাসের ধকল কাটাতে একটু নিশ্চিন্তে ঘুমাতে চাই। ’গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হন মেডিকেল কলেজের ছাত্রী নির্ভয়া (ছদ্মনাম)। তাঁর সঙ্গে থাকা ছেলেবন্ধুটিও মারধরের শিকার হন।

দুজনকেই চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয়। পরে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন নির্ভয়ার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। নির্ভয়ার জীবনের এ আকস্মিক পরিণতি প্রাথমিকভাবে পরিবারটিকে বিহ্বল ও স্থবির করে দিয়েছিল। কিন্তু সর্বস্তরের মানুষের সমবেত ক্রোধ, ধিক্কার ও প্রতিবাদে সরকার যখন বিপন্ন বোধ করতে শুরু করে, সমাজ যখন ফুঁসে ওঠে, বদ্রি সিংয়ের পরিবার তখন নতুনভাবে বাঁচার রসদ খুঁজে পায়।

সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে মেয়ের মৃত্যুর পরপরই শুরু হয় আইনি লড়াই। লড়াইটা তত দিনে পরিবারের গণ্ডি পেরিয়ে সর্বজনীন হয়ে গেছে। পিতৃদত্ত নাম বিস্মৃত হয়ে ‘নির্ভয়া’ হয়ে দাঁড়িয়েছে আপামর নির্যাতিত নারীর প্রতীক। বেসরকারি বিমান সংস্থার সাধারণ এক কর্মী বদ্রি সিং তত দিনে বুঝে গেছেন, তিনি বা তাঁর পরিবার ছাড়িয়ে অবিরাম প্রতিধ্বনিত হচ্ছে নির্যাতন বন্ধের ও ন্যায়বিচারের দাবি। তাই তিনি বললেন, ‘এ জয় আইনের জয়, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের জয় এবং গণমাধ্যমের জয়।

এ জয় আমাদের মেয়ের অশান্ত আত্মাকে শান্ত করবে। ’।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।