কাব্য-দিনের কথাঃ স্পর্শের আগুনে! অন্যদিগন্ত: www.fazleelahi.com
স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে (ধারাবাহিক সত্য ঘটনাবলী)
=============================
মনে পড়ে যেভাবেঃ
ক'দিন থেকেই তো লেখালেখিকে ছুটি দিয়ে রেখেছি; কিন্তু ব্লগে এক-আধটু করে চোখ রাখতে ভুলছি না। হঠাৎ কাল চোখে পড়লো !@@!443091-এর নোটিশ: "!@@!443094 !@@!443095 !@@!443096 !@@!443097 !@@!443098"। বাসা পরিবর্তনের ঝাক্কি সামলাতেই রাত আড়াইটা, পৌঁছে দেখি ওরা সবে ঘুমিয়ে অস্থির; যেখানে চলে নিয়মিত ভুরিভোজ। কি আর করা ডিব্বার মুড়ি-চানাচুরই হলো আপাতত ফজর অবধি সম্বল; তাই চিবুলাম বসে বসে। যথারীতি ফজরের পর ডুব দিলাম 'ঘুম-কম্বল'-এর তলে।
স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে এসে দেখা দিল নতুন পোষাকী ব্লগ; ডেমরার বাঁধভাঙ্গার ছবির পরিবর্তে দেখলাম মন্দা-সোনালী পটে হাতে আঁকা লগো, যেখানে রয়েছে ডাল-পাতা; ঠিক বোঝাতে পারছি না লিখে, যদি আঁকিয়ে হতাম তো এঁকে নিতাম জেগে উঠেই। তারপর রেজিষ্ট্রেশনে দেখলাম কয়েকটি বিভাগ, যেখানে রয়েছে "ফ্রি" থেকে শুরু করে আরো দু'তিন ধারার "সাবস্ক্রিপশন সিস্টেম" এবং রীতিমত সুবিধার ব্যবধানে অর্থের বিনিময়ে। আরো কিছু নতুন পলিসি দেখলাম পোষ্টানো নিয়ে; সব মিলিয়ে অদ্ভুত আর পরিচ্ছন্ন এক স্বপ্ন দেখা হয়ে গেল। অবশ্য হাসিন কি পরিবর্তন করছেন বা করে ফেলেছেন, অফিসে আসার পূর্বে তা দেখে উঠা সম্ভব হয়নি। (বলাই বাহুল্য যে, এখন অফিস থেকে লিখছি।
) (নাহঃ বাসায় এসে তেমন পরিবর্তন দেখিনি )
অদ্ভুতুড়েদের সাথে স্বাপ্নিক সংঘাতঃ
-------------------------------
স্মরণপটের জীবনটাই এমন যে, কোথাও এতটুকু আঁচড় লাগলে জীবনজোড়া সমস্ত আঁচড়গুলো ভেসে উঠে স্মৃতির পর্দায়; যদিও ব্যথা অথবা আনন্দ ততটুকু নয় যতটুকু তখন হয়েছিল। বয়সটা এমন ছিল যে, প্রিয়জনেরা তখনো কোলে তুলে নিতেন, ঘুম পাড়িয়ে দিতেন; যদিও ততবড় ছেলেকে সচরাচর কেউ কোলে নেয় না। কিন্তু না নিয়ে কি উপায় আছে, আমি যে চোখ বন্ধ করলেই এমনসব অদ্ভুতুড়ে জানোয়ার দেখতে পেতাম, যা পৃথিবীর কোথাও নেই। ওরা আমায় দারুন ভয় দেখাত, তেড়ে আসত দাঁত বের করে, থাবা উঁচিয়ে; বুক কাঁপানো সে ভয়ে আমি ঘুমুতে পারতাম না সহজেই। যদিও ঘুম পাড়িয়ে দিতেন আম্মু, খালাম্মা কিংবা নানী, ঘুমের ঘোরে স্বপ্নেই ওরা এসে হাজির হত, তারপর সে-ই ভোর রাত থেকে নিয়ে সকাল অবধি ওরা ক্রমাগত ভয় দেখিয়ে চলতো।
নানী তার অতি আদুরে নাতিকে নিয়ে চিন্তায় অস্থির, কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না, যে-ই আসতো তার কাছেই বলে বলে পরামর্শ চাইতেন। তো এলেন এক নানার দেশের নানীবুড়ি, এখন ঠিক মনে পড়ছে না তিনি কে? অবস্থা শুনে বললেনঃ "নানুভাই, যখনি ওরা তোমাকে ভয় দেখাতে আসবে, তুমি ঘুমের মধ্যেই আচ্ছা করে মেরে দেবে তাদেরকে; কি পারবে না? একবার মেরে দিতে পারলে দেখবে আর তোমাকে ভয় দেখাবে না। " অবুঝ হৃদয়ে কথাটি গেঁথে গেল।
সেদিন রাতেই স্বপ্নেঃ
------------------
সন্ধ্যা হয় হয় লগ্নে প্রায় "টেঁঠা" (আঞ্চলিকে- বাঁশের কঞ্চির গোড়ায় শিক বেঁধে মাছ শিকারের হাতিয়ার) নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম মাছ শিকারে। নানাবাড়ীর দহজিলের মাঝামাঝি নানাদের সীমানায় আছে দু'টো জোড়া পুরুষ তালগাছ, তার বিপরীতে পুকুরে দেখলাম সোলমাছের পোনা, একটু পর উঁকি দিল সোল মাছটিও।
দেরি না করে দিলাম ঘাই, আনন্দে আত্মহারা হয়ে তুলে দেখি একি! মাছের মাথার পরে পুরো শরীরটাই যেন একটা তালপাতার পাখা; মানে তার লেজ, পানিতে তো এমন দেখিনি। ভয়ে গা কাঁটা দিয়ে উঠলো, টেঁঠাসহ মাছ ওখানেই ফেলে আস্তে আস্তে চারদিক দেখে দেখে দৌড়ে পালানোর চিন্তা করছিলাম; অমনি দেখি সেই জোড়া তালগাছের ওপাশ থেকে ধীরে ধীরে মাথা উঁচিয়ে উঠে আসছে এক বুড়ি, গায়ে শততালি দেয়া ছিন্ন বস্ত্র-চাদর, মুখে কোনরূপ শব্দ না করে সে-ই স্বপ্নে-জাগরণে দেখা অদ্ভুতুড়েদের মত করে আমার দিকে এগিয়ে আসছেই আসছে!
কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না; বয়স যাই হোক তখন বাজারের চা দোকানের টিভি দেখতাম মাঝে মাঝে, এছাড়া বন্ধুদের কাছ থেকে ও স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে মারপিট-কারাতে ইত্যাদি সম্বন্ধে জানতাম; তাই দিনের সেই নানীবুড়ির কথাকে মনে করে সাহসে ভর করে এগিয়ে গিয়ে ছুঁড়লাম এক উঁচানো লাথি সেই ভুতুড়ে বুড়ির চেয়াল-বুক লক্ষ্যে। তারপর আর পায় কে আমাকে, "সাহসী বীর" মোটেও পিছন ফিরে দেখার সাহস করিনি যে ভুতুড়ে বুড়ির কি হলো; দে ছুট্ এক্কেবারে কাঁথা-কম্বল নিয়ে খাটের বাইরে। অদ্ভুত আনন্দের ব্যাপার ছিল যে, ঠিক সেই মুহূর্ত থেকেই দু'চোখের পাতা থেকে অজাগতিক প্রাণীগুলো বিদায় নিল; যাদেরকে আর কখনোই দেখিনি স্বপ্নে অথবা কল্পনায়।
(((চলবে কিছুদূর)))
ছবির জন্য !@@!443671 যেখানে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।