আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিয়ান্ডার্টালদের কি পরকালে বিচার হবে?



অনেকগুলো ধর্মে মৃত্যুর পরে কোন একসময়ে বিচারের ব্যবস্থা আছে। চুলচেরা বিশ্লেষনের পরে পাপ-পুন্যের ওপর ভিত্তি করে মানুষকে স্বর্গ বা নরকের টিকেট ধরিয়ে দেয়া হবে। এখন ঘটনা হচ্ছে অন্যান্য বিলুপ্ত প্রজাতির মানুষ যেমন নিয়ান্ডার্টাল, হোমো ইরেকটাস, এমনকি এবু গোগোদের ব্যপারে ঠিক কি করা হবে বুঝতে পারছি না। আরেকটা লেখায় লিখেছিলাম জেনেটিক বিশ্লেষন থেকে বোঝা যায় নিয়ান্ডার্টাল আর আমরা আলাদা প্রজাতি, সেক্ষেত্রে পরকালের বিচারের খড়্গ ওদের ঘাড়ে আছে কি না পরিস্কার নয়। নিয়ান্ডার্টালরা কগনিটিভ স্কিলের দিক থেকে মানুষের চেয়ে পিছিয়ে থাকতে পারে, হয়তো ওদের ভাষা ছিল না, বা থাকলেও মানুষের ভাষার মতো সফিস্টিকেটেড হয়তো ছিল না।

সুতরাং ওদেরকে এদিক থেকে নির্বোধ প্রানীর দলে ফেলা যায়। তাই বলে অপরাধ প্রবনতায় আমাদের চেয়ে ভীষন পিছিয়ে থাকার কারন নেই। হালের প্রচলিত সৃষ্টিকর্তার উপাসনা ওরা করত বলেও মনে হয় না, অন্তত এরকম কোন প্রমান নেই। সমস্যা হচ্ছে কয়েকদিন আগে পুর্ব ইউরোপের রোমানিয়াতে 40 হাজার বছর আগের মাথার খুলি পাওয়া গেছে, যেটাতে নিয়ান্ডার্টাল এবং আধুনিক মানুষ দুইরকম বৈশিষ্ট্যই আছে। দেখা যাচ্ছে এই মাথার খুলি যার সে নিয়ান্ডার্টাল এবং আধুনিক মানুষ (হোমো স্যাপিয়েন্স স্যাপিয়েন্স) দুটোই এক সাথে।

তাহলে এই লোকের বিচার কে করবে? ভালোবাসা, শোক, সহমর্মিতা, ঈর্ষা, অপরাধ প্রবনতা এগুলোকে সচরাচর আমরা মানবীয় গুনাবলি (মতান্তরে দোষাবলী সহ) ভাবি। ঘটনা হচ্ছে এগুলোর কোনটাই শুধুমাত্র মানুষের মধ্যে আছে তা নয়। অন্যান্য প্রানীর মধ্যেও এগুলো কমবেশী আছে। মা-বাবা মরলে আমরা যেমন শোক করি, দুঃখ পাই; শিম্পাঞ্জি, গরিলা, বনোবোও তাই করে। শোকে কান্নাকাটি করে, একটা টিভি প্রোগ্রামে দেখেছিলাম মা মরার পর বাচ্চা শিম্পাঞ্জি না খেয়ে 4/5 দিন মায়ের মৃতদেহের আশে পাশে গাছে বসেছিল।

ঈর্ষা তুলনামুলক ভাবে আরও সহজলভ্য। সামাজিক প্রাইমেটগুলোর মধ্যে ঈর্ষা নিয়ে গোলমাল লেগেই আছে। মানুষ যেমন গলা টিপে একজন আরেকজনকে মেরে ফেলে শিম্পাঞ্জিরাও একদম একই কৌশলে খুন করে। অনেকসময় কে দলনেতা হবে এই নিয়ে যখন মারামারি হয়, তখন সবাই মিলে একজোট হয়ে গনপিটুনি দিয়ে অন্যদেরকে মেরে ফেলে। মানুষের মতই সাইকোলজি কাজ করে ওদের ভেতর, এই নিয়ে অনেক ডকুমেন্টারি আছে, দেখলে বিশ্বাস হয় না যে মানুষ ছাড়া অন্য কোন প্রানী এরকম সিস্টেমেটিক ওয়েতে অপরাধ করতে পারে।

তাহলে অপরাধ করলে মানুষকে যদি দোজখে যেতে হয়, শিম্পাঞ্জিকে কেন ছাড় দেয়া হচ্ছে। আরো গুরুতর হচ্ছে নিয়ান্ডার্টাল, হোমো ইরেকটাসকে ছাড় দেয়া হলে তো বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে হয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.