আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রাযুক্তিক প্রত্যঙ্গবিশিষ্ট আধুনিক নাগরিক

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

একুশ শতকে এসে আধুনিক মানুষ স্বয়ং প্রোডাক্টে পরিণত হয়েছে কারণ নাগরিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে টেকনোলজি হয়ে পড়েছে শরীরের অবিচ্ছেদ্য প্রত্যঙ্গ। যার ইউনিক ব্যবহারের মাধ্যমে এখন সে নিজেকেই মার্কেটিং করতে সক্ষম। শুধু এমপ্লয়ারের কাছে জবের জন্য মার্কেটিং নয়, দূনর্ীতি, অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে ব্যপকহারে গণসচেতনতা তৈরী করতে পারে একুশ শতকের যেকোন টেকনোলজি প্রত্যঙ্গবিশিষ্ট নাগরিক। আজকাল প্রতিটি ঘরের হোম-এপারেলসের গায়ে চমকাচ্ছে শার্প, টোসিবা, স্যামসং, নোকিয়া, সিমেন্স, সিংগার, ফিলিপস্, সনি, এরিকসন, ন্যাশনাল, হিটাচি, আইওয়া, হাইকো, গ্রেস, ওয়ার্লপুল, ওয়াল্টন, সানিও, টোসিন, কংকা, ক্যানকা ইত্যাদি অসংখ্য ব্রান্ডের লোগো। ট্র্যাডিশনাল তালাচাবিকে গুডবাই জানিয়ে ডিজিটাল লক বসেছে অনেকের বাড়ীতে।

শরীরের সাথে সংযুক্ত থাকছে কতশত যন্ত্রপাতি! আইপড, মোবাইল, ব্লু টুথ, পেন ড্রাইভ অথবা এমপিথ্রি প্লেয়ার, নোটপ্যাড, ডিজিটাল ক্যামেরা, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ডিজিটাল আইডি ইত্যাদি আরো কতকিছু। হয়তো কারো সাথে থাকছে ল্যাপটপ, ডিজিটাল রেকর্ডার অথবা ডিকশনারী। নাগরিক জীবনের প্রত্যাহিক অনুষঙ্গ রোডজ্যামেও সময় ব্যয়িত হচ্ছে কর্মব্যসত্দতায়। কারণ মোবাইল বা আইপড হয়তো কানে ছড়িয়ে দিচ্ছে লেটেস্ট রিলিজড্ কোন সিংগেল অথবা ব্রাউজ করে নেয়া যাচ্ছে প্রিয় কোন ওয়েবসাইট । প্রয়োজনে ই-মেইল চেক করা যাচ্ছে অফিসে পেঁৗছে যাবার পূর্বে।

জ্যাম আর আধুনিক মানুষকে কর্মহীন করার ষড়যন্ত্রে জয়ী হতে পারছে না। একাডেমিক পাঠ্য না হলেও কম্পিউটারের বিভিন্ন প্রোগ্রাম যেমন, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এঙ্লে, পাওয়ারপয়েন্ট, আউটলুক, এডবী, মাল্টিমিডিয়া ইত্যাদি সফটওয়ারগুলো শেখা আজকাল টিভি, ডিভিডি অপারেটিং এর মত সহজ। এসমস্ত টেকনোলজির আধুনিকতম ও অনন্য ব্যবহার ও উপস্থাপন একজন আধুনিক মানুষের ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় জীবনে নিয়ে আসতে পারে অকল্পনীয় সাফল্য। অফিস, হোম অথবা স্টৃটের যে কোন ইভেন্ট অথবা ইন্টারএ্যাকশনে এর সম্পৃক্ততা অপৃথক। লন্ডনে অবস্থিত কোন পার্টনারের সাথে মিটিং করার জন্য সময় ও অর্থ অপচয় করে ট্রাভেলের মত কষ্ট স্বীকার করার প্রয়োজন নেই।

ভিডিও কনাফারেন্সিং বিষয়টি অনেক সহজ করে দিয়েছে। বাংলাদেশে অবস্থিত বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘের সংস্থা, বিদেশী এনজিও, মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানী, ভিজুয়াল মিডিয়াসমূহ নিজেদের প্রয়োজনে স্থাপন করে নিয়েছে ভিডিও কনফারেন্সিং এর সুবিধা। সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও প্রদানে স্টেকহোল্ডারদের অবাঞ্চিত সময়ক্ষেপণ করতে হচ্ছে না । কোন অফিসে গিয়ে দূনর্ীতির সাথে সরাসরি মুখোমুখি হলে মোবাইল দিয়ে রেকর্ড করা সম্ভব কথপোকথন অথবা অব্যবস্থার ছবি। রেকর্ডকৃত ছবি অথবা কথা পাঠিয়ে দেয়া যায় কোন পত্রিকা অফিসে অথবা আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাকে।

বেসরকারী জবের জন্য বিজ্ঞপ্তি খুঁজে খুঁজে ট্রাডিশনাল ঢং এ লেখা রিজুমি অথবা সিভি পাঠানোর নিয়মটাতে একটা পরিবর্তন নিয়ে আসা যায়। ফ্রেশার অথবা জাম্পিং ইচ্ছুক উভয়ে এটা করতে পারে। পাওয়ারপয়েন্ট অথবা ফ্লাসে তৈরী করা যায় নিজের সিভি। প্রয়োজনীয় তথ্যের সাথে সাথে পৃফারড সেক্টর ও সেখানে এডুকেশন ও এঙ্পেরিয়েনস কিভাবে নিজেকে যোগ্য করে তুলেছে তা বিবৃত করা যায় চমৎকার নান্দনিকতায়। সেই সাথে রিলেভেন্ট বিষয়ের উপরে একটা প্রেজেন্টেশন তৈরী করা যেতে পারে।

ডিজিটাল রেকর্ডার নিয়ে ডেমো প্রেজেন্টেশন বা রিহার্সেল করা সম্ভব। টার্গেট সংস্থার এইচআরডি প্রধানের কাছে ল্যাপটপ সহযোগে নিজেকে প্রকাশ করা সম্ভব অনেক চমৎকার পারঙ্গমতায়। নিজের ল্যাপটপ না থাকলেও অসুবিধা নেই, হাতের কাছে হয়তো বন্ধু, পরিচিতজনদের ল্যাপটপ রয়েছে। ঘন্টাখানেকের জন্য ধার নিলেই হলো। চাকুরী প্রাথর্ী নিজের কমপিটেন্সি দেখানোর এমন সুযোগ অন্যকোনভাবে হয়তো পেতেন না, যা সম্ভব হচ্ছে তার টেকনোলজি সম্পৃক্ততার কারণে।

অবশ্য অন্য একটা সমূহ সম্ভাবনাও থেকে যাচ্ছে। চাকুরী প্রাথর্ী মূল্যবান রিসোর্স হয়ে যাবেন নিঃসন্দেহে এবং এমপ্লয়ারার তাকে ছিনতাই করে নিয়ে গেলেন ভাল জবের অফার দিয়ে। একটা দৈনিক পত্রিকার মূল্য 8 টাকা। মাসে খরচ হয় 240 টাকা। বাসায় ফোন লাইন থাকলে মাসিক 200 টাকায় সংযোগ নেয়া যায় প্রত্যহ 2 ঘন্টার ইন্টারনেট।

বাংলাদেশের সকল প্রধান দৈনিকের ওয়েব ভার্সন পার্সোনাল কম্পিউটারে ডাউনলোড করা সম্ভব। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের সব বড় বড় পত্রিকা দেখে নিতে ও এর সংবাদ সংগ্রহ করতে পারবেন ঘরে বসে। প্রত্যাহিক সংবাদের গতি-প্রকৃতি ও তথ্যাদি জমা করে স্টাডি ও ব্যবসায়িক যেকোন প্রয়োজনে রেফারেনসের স্টোরহাউস গড়ে তোলা যায়। রাজনৈতিক দুষ্ট চক্রের বক্তব্য নিরীক্ষার জন্য তখন আর রিউমার শুনতে হবে না। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া যায় শাসকের দিকে যে দক্ষতা বৃদ্ধি ছাড়া আজকের আধুনিক নাগরিকদের শাসন করা তাদের পক্ষে আর সম্ভব নয়।

এভাবে নিজের টেকনোলজি প্রত্যঙ্গ দিয়ে নিশ্চিত করা সম্ভব ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের উন্নয়নমূখী বির্নিমান যা হয়তো দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বে আশু কল্যানমূখী আপগ্রেডেশন নিশ্চিত করবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।