অবসরের আড্ডা!!!
নির্বাচন কমিশনে সিইসি বিচারপতি এমএ আজিজ যাননি, এটিই ছিল বুধবারের সবচেয়ে বড় খবর। গত দেড় বছরে একটি দিনও তিনি সকাল 9টার পর অফিসে যাননি। অন্যান্য দিনের মতো বুধবারও সবাই ধরে নিয়েছিলেন সিইসি আসবেন যথাসময়েই। সংবাদ মাধ্যমের বিপুল সংখ্যক কর্মিসহ অপেক্ষায় ছিলেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। যথারীতি সকাল 9টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মাহফুজুর রহমান ও মাহমুদ হাসান মনসূর অফিসে যান।
কিন' সিইসি অফিসে যাননি এ খবর চারদিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে_ সিইসি হয় ছুটি নিয়েছেন, না হয় পদত্যাগ করেছেন। নির্বাচন কমিশনার স. ম জাকারিয়াও সকাল 10টার মধ্যে অফিসে না পেঁৗছায় তাকে নিয়েও নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে। সকাল সোয়া 10টায় তিনি ইসিতে যাওয়ার পরই এ গুজবের অবসান ঘটে। সিইসির পদত্যাগ বা ছুটির দরখাস- বঙ্গভবনে পেঁৗছানো হয়েছে কিনা তা নিয়ে শুরু হয় জল্পনা-কল্পনা।
বেলা দেড়টায় নির্বাচন কমিশনের সচিব আবদুর রশিদ সরকার দাওয়াত খেতে যাওয়ার কথা বলে বঙ্গভবনে যান। তিনি অত্যন- সংগোপনে বঙ্গভবনের দক্ষিণ দিকের কর্মচারীদের গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করায় বিষয়টি বঙ্গভবনের গেটে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের চোখ এড়িয়ে যায়। এদিকে সিইসির দরখাস- নিয়ে সচিব বঙ্গভবনে গেছেন_ এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নির্বাচন কমিশনে অপেক্ষমাণ শতাধিক সাংবাদিকের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ইসি সচিব 2টার দিকে সাংবাদিক প্রতিনিধি দলকে জানান, তিনি বিকাল 3টায় ব্রিফিং করবেন। এই ব্রিফিংয়ের জন্য সাংবাদিকরা দোতলায় সচিবের কক্ষের সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন।
বিশেষ করে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে কি হচ্ছে সে সম্পর্কে প্রতি ঘণ্টায় সরাসরি খবর সম্প্রচার করেন। বিকাল সাড়ে 3টায় যুগ্মসচিব মোহাম্মদ জকরিয়া সাংবাদিকদের জানান, সচিব তাকে জানিয়েছেন তিনি আসতে পারবেন না। তাকে বঙ্গভবনে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। সিইসি ছুটি না পদত্যাগের সিদ্ধান- নিয়েছেন_ এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনও এ বিষয়গুলো চূড়ান- হয়নি। এ বিষয়ে বলার সময়ও আসেনি।
বিকাল সোয়া 4টায় ইসি ত্যাগের সময় নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মাহফুজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, সিইসির সঙ্গে কোন কথা হয়নি। তিনি পদত্যাগ করেছেন কি ছুটি নিয়েছেন সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। টেলিফোনে তার সঙ্গে কথাও হয়নি। এটা ডেলিকেট (জটিল) ব্যাপার। সিইসির অনুপস্থিতিতে আপনাকে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিইসি চলে গেলে কি হবে তা এখনও নিশ্চিত হয়নি।
এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার স. ম জাকারিয়া কোন মন-ব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। বিচারপতি মাহফুজুর রহমান বিকাল সোয়া 4টায় কমিশন ত্যাগের পর স. ম জাকারিয়ার কক্ষে প্রবেশ করেন অপর নির্বাচন কমিশনার মাহমুদ হাসান মনসূর। সন্ধ্যা পর্যন- তারা দু'জন একান-ে বৈঠক করেন। বৈঠকের বিষয়বস' সম্পর্কে কেউ মুখ খোলেননি। নির্বাচন কমিশনে স. ম জাকারিয়া বহাল থাকছেন কিনা এ প্রশ্ন ছিল ইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুখে মুখে।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মনে করেন, সিইসি বিচারপতি এমএ আজিজ অনেকটাই সহজ সরল ও পাগলাটে। তিনি ততটা ক্ষতিকর নন। কিন' নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে ক্ষতিকর ব্যক্তি হচ্ছেন স. ম জাকারিয়া। তিনিই সব অনিষ্ট-অনিয়মের হোতা। ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জনকও তিনি।
সিইসি বিদায়ের পরও যদি স. ম জাকারিয়া নির্বাচন কমিশনার পদে বহাল থাকেন তবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় এবং মাঠ পর্যায়ের কোন কর্মকর্তাই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবেন না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।