বাংলাদেশ নিয়ে ভাবনা, প্রত্যাশা ও সম্ভাবনার সংগ্রহমালা
সকাল বেলা ঘুম ভাঙ্গার পর বিছানার পাশের ঘড়িটাকে খুব বিরক্তিকর মনে হলো। টিক টিক করে সময়ের কাঁটা হেঁটে চলছে। ঘড়িটাকে একটা বিশ্রী উপদ্রব বলে মনে হয়। নীচে গিয়ে তাজা চা বানালাম। লিপটন নামটা ভালই রেখেছে।
চা তাজা কি-না জানি না। তবে চায়ে চুমুক দিয়ে চাঙ্গা হওয়ার ব্যর্থ চেস্টা করলাম। হাত বাড়িয়ে ফোনটা নিলাম। অফিসে ম্যাসেজ দিলাম, কাজে যাব না। অফিসে কাজের চাপ আছে।
কিন্তু কাজের ভারে নিজেকে আর ভারাক্রান্ত করতে চাই না। চাই একটু অবসর। একটু বিশ্রাম। নিজের মতো সাজিয়ে সময় কাটানো। সকল তাড়া, ডেডলাইন, আর ফোনের তর্জন-গর্জনের নিকুচি করি।
সত্যি ঘড়ির কাঁটার পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে বড়ই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। সমপ্রতি একটা ছুতো পেয়ে হাতঘড়িটাকে বিদায় দিয়েছি। দু দু'বার ব্যাটারী বদলেও ঘড়িটা চলে না বলে ঠিক করেছি ঘড়ি ছাড়াই চলে দেখি। হাতঘড়িকে বাদ দিলেও সময়ের কাঁটাকে নির্বাসন দিতে পারিনি।
এক সময় সোফা থেকে উঠে চলে এলাম পড়ার রুমে।
এরকম সময়ে মৌসুমী ভৌমিককে খুব ভাল লাগে। মৌসুমীর গলা আর কথাগুলো নিজেকে খুব স্থবির করে দেয়। বাজতে থাকে, "এই সময়ের বুকে ক্ষত জমে আছে...কিছু দেখি..কিছু দেখতে পাই না"। জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছি। ঘড়ির কাঁটাটাকে আড়াল করে দিয়ে নিজেকে খুব বিজয়ী মনে হচ্ছে।
বইয়ের র্যাক থেকে ধার করলাম, জীবনানন্দকে। গানের সুরের সাথে চোখ বুলাতে লাগলাম সময়ের কাছে পংক্তিমালার উপর:
"সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি।
সেই সব একদিন হয়তো বা কোন এক সমুদ্রের পারে
আজকের পরিচিতি কোন নীল আভার পাহাড়ে
অন্ধকারে হাড়কঙ্করের মতো শুয়ে
নিজের আয়ুর দিন তবুও গণনা ক'রে যায় চিরদিন..."।
সময়ের নিষ্ঠুর আগল ভেঙ্গে শুরু হলো একটি নিরুপদ্রব অথচ একান্ত নিজস্ব সকাল। মন্দ না...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।