সংশোধনবাদীতায় কেউ কম যায় না, আহমদীয়া সমপ্রদায়ের বিশ্বাস এবংইসলামকে দেখার ভঙ্গি একটু আলাদা, খাতমে নবুয়তের ধারনাটা এমন ভাবে প্রচলিত যে মুহাম্মদই শেষ নবী এবং প্রেরিত রসুল, আহমাদীয়াদের ধারনায় বিষয়টা আরও একটু আলাদা, তাদের ভাবনায় নবুয়তের মোহর শব্দটা ধরা দিয়েছে ভিন্নার্থে, তাদের বক্তব্য মুহাম্মদের মোহরানা থাকবে পরবর্তি নবীদের উচর, মুহাম্মদের স্ব ীকৃতি অনুসারে পরবর্তি নবী আসবে। ইহুদিদের ধারনায় নবী শব্দটা শিক্ষক এবং পথপ্রদর্শকের, মুহাম্মদের শিক্ষা প্রচারের জন্য যুগের বদলের সাথে নতুন শিক্ষক আসবে এই ধারনাটা বেশ চমৎকার একটা ধারনা,
ইহুদিরাও এমনটাই ভাবে যে যখনই প্রয়োজন হবে তখনই বনী ইসরাইলকে পথ দেখানোর জন্য একজন আসবে পৃথিবীতে। মুহাম্মদের অনুসারীদের ভেতরেও এমন একটা ধারনা আছে, সত্যের সৈনিক হিসেবে ইমাম মেহেদির আগমন ঘটবে। তার উপরে নতুন কোনো কেতাব অবতীর্ব হবে না তবে তিনি মুহাম্মদের এবং একত্ববাদের ধারনাকে নতুন প্রান দিবেন।
এই ধারনাটার বদল হবে যুগের সাথে, ধর্ম পরিবর্তনশীল, যুগের দাবি পূরন করতে গিয়ে ধর্ম সংস্কারের প্রয়োজন চলে আসছে, বিশ্ব জুড়ে ইসলামী স্কলাররা এই কাজটাই করছেন, তারাও ধর্মের নতুন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, ছবি তোলার বিষয়টা একেবারে নিষিদ্ধ হলেও যুগের প্রয়োজনের ধর্মপ্রাণ মুসলিম রা ছবি তোলাতেও আপত্তি করছে না, তাদের ঘরে ছবি সাজাতেও আপত্তি নেই, কিন্তু এই শিক্ষক মেনে নেওয়ার ঘটনায় এক দল মানুষ একটা ইমামের শিক্ষা মেনে নিচ্ছেন- তার ব্যাখ্যা করা ইসলামের অনুভব ধারন করছেন- কোরান হাদিসের স্পষ্টতার অভাবটা এভাবেই তারা নিজের মনমতো পূরন করছেন।
কোরানে বর্নিত আছে শুধু মাত্র চারপেয়েদের তৈরি করা হয়েছে চলাচলের সহায়ক মাধ্যম হিসেবে, উট ঘোড়া, এসবের পিঠে চেপে ইসলাম সামনে এগিয়েছে, এখন প্লেন, বাস, ট্রেন এসব নিয়েও চলছে, পর্দাপ্রথার বিষয়েও বিভিন্ন ব্যাখ্যা আছে, এসব শিক্ষা মানতে পারলেও তাদের স্পষ্ট আপত্তি নবী শব্দটাতে, এছাড়া সমস্যাটা নেই, যদি আহমাদিয়া সমপ্রদায় তাদের নেতাকে নবী ঘোষনা না দিয়ে ইমাম ঘোষনা দিতো হয়তো তাদের প্রতি সহানুভুতিশীল আচরন করে একটু বিবেচনার চেষ্টা করতো মুসলিমেরা। বাংলাদেশের পীরের শিক্ষায় শিক্ষিত মুসুল্লি কম নেই, তারাও এই ব্যাখ্যা মেনে নিয়েছে, অথচ সেই সব পীরের মুরিদানরা কোনো মতেই আহমাদিয়া সমপ্রদায়কে মেনে নিতে নারাজ।
সমস্যা কি ? কেতাব আছে 1400 বছর পুরোনো,এখনও মানুষ জন সেইগুলোকে নতুন আলোকে দেখছে, বুকাইলি সাহেব সৈদি সরকারের টাকায় আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে কোরানের সঙ্গম ঘটিয়েছেন সফল ভাবে, কোরানের আয়াতের ব্যাখ্যার এই নতুনত্ব মেনে নিতে আগ্রহী হলেও আহমাদিয়াদের কোরানের ব্যাখ্যা মেনে নিতে সমস্যা কি?
তারা থাকুক তাদের বিশ্বাস নিয়ে, তাদের উপাসনাপদ্ধতি তাদের অনুভব একটু আলাদা হলে কোনো ক্ষতি নেই,
নবুয়তের সিলমোহর বলে বিবেচিত মুহাম্মদের বিষয়ে এই ব্যাখ্যাটা আমার কাছে যুক্তিসংগত মনে হচ্ছে, সিল মোহর যদি বলাই হয় তাহলে মুহাম্মদ কোথায় মোহরানা বা নিজের নামাংকন করবে? আহমাদিয়া সমপ্রদায় বলছে মুহাম্মদের মোহরানা অংকিত হলেই নতুন যুগে নতুন নবী আসবে, ইসলামের শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার চেষ্টায় সংস্কারের চেষ্টায় যুগে যুগে শিক্ষক আসবেন-
আব্দুল কাদের জিলানীর বিষয়েও এমন কিছু ধারনা প্রচলিত, তাকে মেনে নিতেও কোনো সমস্যা নেই কারো।
বান্না সাহেবের র্যাডিক্যাল ইসলামের ব্যাখ্যা, মাওদুদির ইসলামের ব্যাখ্যা, তাবলিগ এ জামাটের ইসলামী ব্যাখ্যা ও শিক্ষা গ্রহন করার মানুষ আছে অথচ আহমাদিয়াদের বিষয়টা মেনে নিতে সমস্যা কি?
আহমাদিয়ারা কিছুটা শক্ত, নিজস্ব বিশ্বাসকে শুদ্ধ মনে করলে এমন একটা অবস্থান চলেই আসে, মুসলমানরা শুধুমাত্র কেতাবধারীদের বিয়ে করতে পারবে, তবে মুসলিম মেয়েদের জন্য শুধুমাত্র মুসলিমকে বিয়ে করার রেওয়াজ, আহমাদিয়ারাও একই রকম ধারনায় বিশ্বাস করে, দোষের কিছু নেই , তারা অন্য আহমাদিয়া ইমাম ছাড়া অন্য কোনো ইমামের পেছনে নামাজ পড়বে না, কোনো মুসলিম গীর্যার ফাদারের ইমামতিতে নামাজ পড়ে না। কোনো মুসলিম োান্য ধর্মের কোনো মানুষের জানাযায় অংশগ্রহন করে না, আহমাদিয়ারাও অন্য ধর্মের মানুষদের জানাযায় অংশগ্রহন করে না, মুসলিমদের যা যা দোষ আছে আহমাদিয়া সমপ্রদায়ও ঠিক সেই সেই নিয়মে নিজেদের বন্ধ রেখেছে,তারাও আহমাদিয়া ছাড়া অন্য কারো সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনে নারাজ- তারাও আহমাদিয়া না হলে তাদের জানাযায় অংশগ্রহন করতে চায় না, তারা আহমাদিয়া বিশ্বাসের বাইরের ইমামের পেছনে নামাজ পড়তে ইচ্ছুক না,
মুসলিমদের ধারনায় মুহাম্মদকে বিশ্বাস না করা সকল মানুষই কাফের, আহমেদিয়ারাও ঠিক একই রকম দঃারনায় বলছে, যেহেতু নবুয়তের সিলমোহরের দঃারনাটাকে ভিত্তি করে আমাদের ঘোষনা আমাদের শিক্ষক এসেছেন, তার শিক্ষায় বিশ্বাস করা সবাই মুসলিম এবং এর বাইরে যারা আছে তারা কাফির।
বেশীর ভাহ মুসলিমের এই ধারনা পছন্দ হচ্ছে না, তারা নিজেদের কাফের ভাবতে রাজি না।
তবে যুক্তিগুলো ভেবে দেখতে পারে। অন্য সব ধর্মেই এমন কিছু সমপ্রদায় আছে যারা বিভিন্ন বিশ্বাস নিয়ে চলছে, তাদের আলাদা ব্যাখ্যা আছে, এবং তারা সেই ব্যাখ্যামোতাবেক জীবন যাপন করে। এবং তাদের ব্যাখ্যা যারা মেনে চলে না তাদের অশুদ্ধ ধর্মাচারি ভাবে,
আহমাদিয়ারাও এমন ধারনা নিয়ে চলছে, তাদের মুসলিম না বলার কোনো যৌক্তিক কারন নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।