আমি আঁধারে তামাসায় ঘেরা জীবন দেখেছি, আমার বুকের ভেতর শূন্যতা থেকে শূন্যরা এসে বাসা বেঁধেছে, আমি খুঁজেছি তোমাকে সেই আঁধারে আমার মনের যত রঙলীলা; আজ সাঙ্গ হতেছে এই ভবের বাজারে।
প্রচ্ছদঃ কনক চাকমা
কবিতাটির প্রথম প্রকাশকালঃ ১৯৯৮
সময়ের নীলিমাধারে অলিক দেবী ফিরে যায়,
ম্যানগ্রোভ প্রজাতিরা তারে দেহের বায়ুতে চায়,
যুগল বিকৃত বদনিকায় শিউলির নকশা আঁকা,
অনুরণনে পাচকিত নগরীর দেহখানি ফাঁকা ,
মরনের প্রহসনে পরিজনের নিমিত্তে অতৃপ্ত প্রেম;
বেঁধেছে তারে কৈশিক জালিকা সমীহ করে,
আপন ভেবে পাবে নৈতিকতার গহীনে তারে।
বিক্ষিপ্ত সবই মাটির গড়নে,
যেন এক বিপন্ন বিস্ময়;
আবারো মানব মস্তিষ্কের বিস্তৃতিতে।
রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ, কায়কোবাদ,
জীবনের আলেখে নত –
অশ্রুর ভাষা কবিতায়।
যে জীবন কোন মানব – মানবীর নয়,
তবে কেন হবে সে জীবন আমার ?
আঁধারে নিভে – নিভে ভেবেছি বহুবার।
কবিরাই তবে জ্ঞানী !
জীবন কোথাকার কোন এক বিলীন সমাচার,
যেন তারে ঘষলে নবীন,
পোড়ালে মরনেই বিলীন,
জীবন যেন এক বিলীন সমাচার।
আমার তিমিরে মালতী তোমার হৃদয় রেখার জোছনা নেই।
যদি একবার আমার বেদনার খোলস মোচন করে যায় ফাগুন সারা,
আমার দরজায় রেখে যেও কৌমুদী তোমার মরমী সুর।
বেলা বয়ে এলে সাঁঝের মিথুন গ্রহনে মালতী বেদী,
প্রনয় নগরী উজাড় করে বসে থেকো ঝিলের পারে;
আমি দেহের যতনে গড়ে নেবো মন পবনের নায়ের বৈঠা ।
নরকের কীট যদি এসে বসে সোনালী ধানের শীষে,
পাটের পচন যদি হয় আঁটি বেঁধে পুকুরের জলে,
আমারও মরন তবে হবে ধরণীর নীড়ে নরকের পাপে।
প্রণয় তপ্যাসার ক্ষত ফুরোলে তীর্থের মরনে হৃদয় জুড়োয়;
দেহের জঞ্জাল নিয়তির ভীতিতে ভাসিয়ে দিয়ে নদীর অলকে,
তবেই মালতী বেদী তুমি নিশিতের কৌমুদী নারী।
ধীরে অতি ধীরে চলো, মালতী বেদী
আমার যে আজ আর দ্রুত পথচলা হয়ে ওঠেনা তেমন।
মৃত্যু যেমনি জীবনের অমোঘ নিয়তি,
তুমি তেমনই আমার হৃদয়ের চির প্রেয়সী।
মানুষের স্মৃতি হতে পারে –
তার জীবনের পেছনে ফেলে আশা অতীত নিয়ে;
আমার স্মৃতিতে কেবলই প্রিয় জন্মভূমি –
আমার বাংলাদেশ;
এ দেশেরই এক নারী তুমি।
মৃত্যুতে বিদায়ের লগনে যদি কখনো বসন্ত আসে,
সে বসন্ত হবে তুমি আমার স্বপ্ন শিশির।
যেখানে তোমার আঙিনায় রংধনু সাত রং,
সেখানে দাড়িয়ে আমি দেখতে পারি
বিশাল ওই আকাশ হবার স্বপ্ন।
দেখো তাকিয়ে পথের প্রতিটি বর্গে ধুলোর শিল্পমেলা;
এখানে – ওখানে ছড়িয়ে আছে –
পলিথিন, সিগারেটের জীর্ণ ফিল্টার, ঝরা পাতা,
আর জীবনের যত নষ্ট আবর্জনা;
এ পথেই আমাদের প্রতিদিনের পথ চলা,
এ পথেই চলে যায় একদিন আমাদের মরদেহের ভেলা।
পথের দ্বিতীয় মোড়ে এসেই যেন থেমে গেছে,
জীবন আজ শূন্যের কোঠায়;
তবুতো যেখানে তোমার বাগানে শিউলির শুভ্র বাহার,
সেখানে ঘুমিয়ে আমি দেখতে পারি,
হেমন্তের ওই স্নিগ্ধ ভোর হবার স্বপ্ন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।