যদি নির্বাসন দাও.................................................................. আমি ওষ্ঠে অঙ্গুরী ছোঁয়াবো আমি বিষ পান করে মরে যাবো! বিষণ্ন আলোয় এই বাংলাদেশ নদীর শিয়রে ঝুঁকে পড়া মেঘ, প্রান্তরে দিগন্ত নির্নিমেষ- এ আমারই সাড়ে তিন হাত তুমি।
হ্যাঁ এবং না। আমাদের জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ দুটি শব্দ। সেই ছোটবেলা থেকে শুরু- 'সঠিক হলে হ্যাঁ এবং ভুল হলে না লিখো'। তবে প্রতিদিন আমরা যতবার 'হ্যাঁ' বলি, 'না' বলি অন্তত তার চেয়ে দশ বার বেশি।
যেমন ধরুন, আজ একবারও জ্যামে না পড়ে অফিসে আসতে পেরেছেন? না। ঘুষ না দিয়ে কাজ করাতে পেরেছেন? না। এরকম আরো অনেক অনেক . . . । এই হ্যাঁ আর না নিয়ে বেশ মজার ঘটনাও আছে কিন্তু। তার একটা বলি।
এক শিক্ষক ক্লাসে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলছেন, পৃথিবীর তাবৎ প্রশ্নের উত্তর 'হ্যাঁ' এবং 'না' এই দুটি শব্দ দিয়ে দেয়া সম্ভব। তখন এক ত্যাদোড় ছাত্র দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো, স্যার, একটা প্রশ্ন। আপনি কি আগের মতো এখনো আমাদের ক্লাসের লাবণীকে লুকিয়ে চুমু খান? তাবৎ প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রস্তুত সেই মাষ্টারমশায় আজো এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি।
এখন আসি 'না' প্রসঙ্গে। না-এর ভূমিকা আমাদের জাতীয় জীবনে কিরকম ওতোপ্রোতভাবে জড়িত তা নিয়ে একটু চিন্তা করুন।
আমাদের রাজনীতির প্রধান দুই দল এখনো পর্যন্ত কখনো কোন বিষয়ে (এরশাদ নামক কীটটাকে অপসারণ করা ব্যতীত) একমত হতে পারেননি। তাদের ধর্মই হলো, একদল হ্যাঁ বললো তো আরেকদলকে না বলতেই হবে। কিংবা ওই দল না বললে এই দল হ্যাঁ। সে যেই ইসু্যই হোক না কেন! কারণ তাদের লক্ষ্য একটাই, শালাকে টেনে নামা, আমি উঠি। সত্যিই সেলুকাস! বড় বিচিত্র এই দেশ!
এখন প্রশ্ন হলো আমরা কি করছি।
আমরাও তো সেই তালে তাল দিয়ে যাওয়া হ্যাঁ হ্যাঁ বলা সং। আমরা ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচিত করছি। তারা ক্ষমতায় গিয়ে আমাদের ভুলে যান। আমাদের টাকায় নতুন প্লট পান, গাড়ি কিনেন, লিস্টি পাঠিয়ে রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ থেকে বাজার সারেন আরো কতো কি! উনাদের বেতন কম সেটা নাকি বিদেশে বলতে লজ্জা হয়, তাই সব মন্ত্রী-সাংসদদের বেতন বাড়ান। ওদিকে উনাদের মানুষ (!!!!! মানুষ কিনা এ ব্যাপারে যথেষ্ঠ সন্দেহ আছে) বানানোর কারিগররা দুই, তিন মাস ধরে বেতন পান না, অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটান, আমরণ অনশন করেন, তাতে তেনারা একটুও লজ্জা পান না।
জনগনের সম্পদ লুটেপুটে ভুড়ি বাড়ান দিন রাত। আরেক দল, সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে বলে একদিন গিয়ে সংসদে হাজিরা দেন, তারপর অবুঝ কিশোরীর মতো গাল ফুলিয়ে চলে আসেন। দুই মিনিট অন্তর অন্তর ওয়াকআউট করেন, দুই দিন পর পর হরতাল ডাকেন, গাড়ি পোড়ান, দোকানপাট ভাংচুর করেন, নিরীহ মানুষদের হয়রানি করেন। ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে। আপনারাই পারবেন অদূর ভবিষ্যতে শ্মশান বাংলা গড়ে তুলতে।
বারো ভূতে দেশটাকে চেটে পুটে খাচ্ছে, প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করছে, তবুও তাদের কাম অবদমিত হচ্ছে না। এমনি রক্তবীজের ঝাড়।
আশার কথা শোনাই। এখন সাধারণ মানুষ সচেতন হতে শুরু করেছে। তারা এখন সাহস করে বলতে শুরু করেছে, 'মনু, ডাইলে লবণ কম হইছে'।
সমপ্রতি, এক জরিপে দেখা গেছে, মানুষ চায় ভোটদান পদ্ধতিতে একটা না-ভোট অপশন সংযুক্ত হোক। অতি উত্তম প্রস্তাব। আমি ও একমত এর সাথে। বর্তমানে আমাদের দেশে নির্বাচনে সৎ আর যোগ্য লোক খোঁজা মানে ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হওয়ার দশা। তাই আমাদের মন্দের ভালো নির্বাচন করতে হয়।
কিছু ক্ষেত্রে মন্দের ভালোও পাওয়া যায় না। তাই যদি 'না-ভোট' অপশনটা যুক্ত করা হয় সেক্ষেত্রে, কোন আসনে যদি এই 'না-ভোট'-এর পরিমাণ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের চেয়ে বেশি হয় অর্থাৎ না-ভোট জয়ী হয়, তবে সে আসনে নতুন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে হবে। আবার নির্বাচন করতে হবে। তবেই জনগনের প্রকৃত মতামত প্রতিফলিত হওয়ার অবকাশ থাকবে। আপনারা কি বলেন?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।