ইচ্ছা থাকলেও মাঠে গিয়ে ক্রিকেট খেলতে পারিনা। মাঠ নেই, আর সেই আগ্রহ কারো মাঝে দেখি না। একটা সময় গেছে সকাল থেকে সন্ধা ক্রিকেট নিয়ে পড়ে থাকতাম।
২০০০ সাল থেকে পুরোপুরি ভাবে ক্রিকেটকে মজে যাই। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন ট্রফির কথা খুব ভালোভাবে মনে আছে আমার।
আমি তখন দ্বিতীয় শ্রেনীতে পড়ি। ক্রিকেট কিছুই বুঝি না তবুও বাংলাদেশ বাংলাদেশ বলে চিৎকার করেছি। রঙে রঙিন হয়েছি। বালতি বালতি রঙের খেলা আজো সেরা স্মৃতি হয়ে আছে। জানিনা আর কোন দিন মানুষ এমন করে আনন্দ করবে কিনা।
আকরাম খানের স্টেডিয়াম পার করা ছ্ক্কা। সেদিন প্রথম ক্রিকেটের একটা নিয়ম শিখলাম উড়ে মাঠের বাইরে বল গেলে ছয়। এর পরদিন একটা নারকেলের কান্ডদিয়ে ব্যাট ব্যাট বানিয়ে প্লাস্টিকের বলদিয়ে প্রথম খেললাম ক্রিকেট।
তার পর থেকে টানা দশবছর ক্রিকেটে মজে ছিলাম। ধান ক্ষেতের নাড়া কেটে পিচ আর মাঠ বানানো।
পাড়ায় পাড়ায় খেলতে যাওয়া। কৈশরের প্রায় পুরোটা সময় ক্রিকেট খেলে কাটিয়েছি। খুবমনে পড়ে রমজান মাসের কথা। রোজা রেখে সারাদিন ক্রিকেট খেলতাম। শুধু নামাজের সময় বিরুতি।
খা খা তপ্ত রোদ তাতে কি খেলা বন্ধ নেই।
বিশ্ব ইজতেমার মাঠে খেলতে যেতাম সপ্তাহে একদিন। তখন বাসা থেকে ২ টাকা বাস ভাড়া ছিল। সেখানে খেলা যে কতটা কষ্টকর ছিল তা এখন বুঝি। ইজতেমা মাঠে এপার থেকে অপার হলে বোঝা যায়।
তপ্ত রোদ একবার পিপাসা লাগলে পানি আনতে আনতে আবার পিপাসা লেগে যেত। এখন বুঝি কতটা নেশা ছিল ক্রিকেটের। কোন কষ্টই কষ্ট মনে হতো না।
শুক্রবার দিনটি ছিল দু দফা খেলার আয়োজন একপাড়া আমাদের পাড়ায় খেলতে আসতো আবার আমরাও যেতাম অন্যপাড়ায় খেলতে। কোন স্বার্থ ছাড়া খেলা।
কোন কিছু হবার জন্য নয় শুধু আনন্দের জন্য খেলা।
আজ মনটা অনেক কষ্ট হয় আমরা যেই বয়সে ব্যাট বল নিয়ে মেতে ছিলাম সেই বয়সের ছেলেরা মাদকে আসক্ত। তাদেরও অনেক ক্ষেত্রে কিছু করার নেই। মানুষ লোভে তার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শৈশব , কৈশরকে গলাটিপে হত্যা করেছে। আজ যে স্মৃতিচারন করছি তার থেকে অনেক দুরে থাকবে ভবিষ্যতের কান্ডারীরা।
যেই ক্রিকেট আমাকে দিয়েছে অবারিত আনন্দ সেই ক্রিকেট আমার জীবনের সেরা মুহুর্ত হয়ে আছে হয়ে থাকবে। তবে একটা আক্ষেপ চিরদিনই কাঁদাবে ভবিষ্যতে মাঠের ক্রিকেটের স্বাদ থেকে দুরে থাকবে অনেই। তবুওক্রিকেট চলুক তার আপন গতিতে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।