আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শেরশাদ আর আলেকজান্ডার

পচা কথা বলি। আবালেরা অফ যাও।

শেরশাদ বললেন, "সালামালাইকুম। আপনি কোন আলেকজান্ডার?" আলেকজান্ডার ক্ষেপে গেলেন। মাকেদোনিয়ার লোকজন এমনিতেই বদমেজাজি, তার ওপর বিশ্বজয়ী আলেকজান্ডারকে না চেনা! তিনি তরবারি উঁচিয়ে বললেন, "হাল্লা পেঙ্কির পো আলেকজান্ডার কি একটার বেশি দুইটা হয় নিকি? এক্কেরে জানে মাইরা ফালামু কোয়া দিলাম!" শেরশাদ হাসলেন।

বললেন, "খোঁজখবর তো রাখেন না দুনিয়ার। কতো আলেক-বালেক-খালেকজান্ডার দিয়ে রাস্তাঘাট ছয়লাপ এখন! ঐ দ্যাখেন ঐ অশ্লীল সিনেমার পোস্টারে নায়কের নাম কী লেখা!" আলেকজান্ডার পোস্টার পড়ে এসে মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললেন, "যাই হোক, আমি দিগবিজয়ী মাকেদোনিয়ান বীর আলেকজান্ডার বিন ফেলিপ। এখন বলিস না আমাকে চিনতে পারছিস না। " তুই তোকারি শুনে শেরশাদ ক্ষেপে গেলেন। "দ্যাখেন, তুই তুই করবেন না! আপনিও জেনারেল আমিও জেনারেল, মান সম্মান আগলায় রেখে কথা বলেন!" আলেকজান্ডার হো হো করে হেসে উঠলেন।

"জেনারেল? আমি তো ফিলড মার্শালদের দিয়ে ঠ্যাং মালিশ করালাম কতোবার! নিজে কমসে কম পঞ্চাশটা বড় বড় যুদ্ধে মারপিট করে জিতেছি। আর তুই ব্যাটা পুরা জেনারেলও হতে পারলি না, লেফটেন্যান্ট জেনারেল হয়ে টক্কর নিতে চাস আমার সাথে? চড় মেরে গোঁপ ফেলে দোবো বেয়াদব কোথাকার!" শেরশাদ সগর্বে বললেন, "ঐ আমলে দুইতিনহাজার লোক নিয়ে যুদ্ধ করেছেন, কপাল ভালো ছিলো দেখে দারিউসের হাতে ধোলাই খান নাই। খালি তো মারপিট আর দাঙ্গাফ্যাসাদ করেছেন আমার অভীক-নিরুকদের মতো, যুদ্ধ শেষে মদ খেয়েছেন, গান বাজনা শুনেছেন আর নিজের নামে শহরের পত্তন করেছেন! আর আমি দশ কোটি লোকের দেশে বুঙ্গি বাজিয়ে নয় বছর শাসন করেছি। দশ কোটি লোক মনে হয় তখন গোটা দুনিয়াতেও ছিলো না। আসতেন আমার আমলে, সিনেমায় মোটা মোটা নায়িকা কোলে নিয়ে পেটের ভাত জুটাইতে হইতো!" আলেকজান্ডার কিছুক্ষণ চিন্তা করলেন, তারপর বললেন, "যা যা ব্যাটা, তুই যাদের কাছে ট্রেনিং পেয়েছিস, সেই মুল্লুকের রাজা পুরুকে আমি রীতিমতো ঠেঙিয়ে লাট করেছি, আসছিস পাঙ্গা নিতে!" শেরশাদ হো হো করে হাসলেন।

"সৎলেজ পার হয়ে পূর্ব দিকে আসেন নাই দেখে জান নিয়ে আর সম্মান নিয়ে ভাগতে পেরেছিলেন আঙ্কেল! জঙ্গাল মুল্লুকের লোকদের তো চিনেন না, তামশা দেখিয়ে ছাড়তো আপনাকে! যান যান, অন্য কোথাও আলেকজান্ডারগিরি করে খান!" আলেকজান্ডার চোখ টিপে বলেন, "আরে এতো তাড়া কিসের। বসি একটু, গল্পসল্প করি! তাছাড়া আমিও হোমো তুমিও হোমো ... ...। " শেরশাদ চমকে উঠে দাঁড়ান, তারপর গর্জে উঠে বলেন, "মানে?" আলেকজান্ডার হাসিমুখে বলেন, "ও মা, সবাই তো তোমাকে আলহাজ্জ হোমো শেরশাদ ডাকে!" শেরশাদ ভীমগর্জনে বলেন, "কক্ষণো আমি হোমো না! আমি যা কিছু করেছি সুন্দরী নারীদের সাথে করেছি! পুরুষের সাথে কিছু করি নাই! আপনি আমার নামে এই অপবাদ দিতে পারেন না!" আলেকজান্ডার বল্লম উঁচিয়ে বললেন, "চোপ ব্যাটা! কত বড় বড় জেনারেলের ইয়ে মেরে বারোটা বাজালাম আর তুই একটা পাতি লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসছিস আমার সাথে, আলেকজান্ডার বিন ফেলিপের সাথে গরম নিতে? খোল, খোল প্যান্ট! আজকে যদি তোর ইজ্জৎ না মারি তো আমার নাম আলেকজান্ডারই না!" এই বলে তিনি বল্লমের বাঁট দিয়ে শেরশাদের পেটে খোঁচা মারেন। শেরশাদ এক লাফে বিছানায় উঠে বসেন! মাদিশা তাঁর মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন, "ওগো, চিল্লানোর কিছু নেই, দুঃস্বপ্ন দেখেছো, দুঃস্বপ্ন! আহারে, শেরু, একেবারে বোবায় ধরেছিলো তোমাকে! ... কী দেখেছিলে হানি, বলো, আমাকে বলো ...?" শেরশাদ চাদরে ঘাম মুছে বলেন, "কিছু না ডার্লিং, দেশের চিন্তায় ঘুম আসে না, বড় পেরেশানিতে আছি!"

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.