বাংলাদেশ নিয়ে ভাবনা, প্রত্যাশা ও সম্ভাবনার সংগ্রহমালা
বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রাক্তন মার্কিন রাস্ট্রদূত উইলিয়াম মাইলামের বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতা ও এর গতিধারা নিয়ে লেখাটি পাকিস্তান থেকে প্রকাশিত ডেইলী টাইমসে জুনের 14 তারিখে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি 1990 থেকে 1993 সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের রাস্ট্রদূত ছিলেন। বর্তমানে তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত উড্রো উইলসন সেন্টারের একজন ফেলো (http://www.wilsoncenter.org)
তিনি তার লেখায় বলেন, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থার সাংবিধানিক ধারা আপাতত নিরপেক্ষ মনে হলেও তা দলীয় প্রভাবের শিকার হতে পারে- এ নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে বাদানুবাদ ও প্রভাব বিস্তারের চেস্টা অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থার ধারাকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা ও ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যাপার নিয়ে এই দু'টি মূল দলের দ্বন্দ্ব রয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়টি বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য দেখায়।
তবে অন্তবতর্ীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা ঠিক করবে দেশে বিদেশে আগামী নির্বাচনের ফলাফলের গ্রহণযোগ্যতা।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা সংবিধানের মূল চারটি ধারার মধ্যে অন্যতম ছিল। বাংলদেশে স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল সোপান ছিল বাঙ্গালীদের স্বতন্ত্র, বর্ণগত ও সাংস্কৃতিক অভিন্নতা। এর মধ্যে ধর্মের কোন স্থান ছিল না। 1975 সালে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে জেনারেল জিয়া ধর্মভিওিক রাজনীতির প্রবর্তন করেন তার সামরিক সরকাররকে বৈধতা দেয়ার জন্য এবং আওয়ামী লীগের ধর্মনিরপেক্ষ ধারণার বিপরীতে ধর্মভিওিক জাতীয়তাবাদের সৃস্টির জন্য।
তার ভাষায়, "He (Zia) changed the constitution to reflect a territorial identity and reached out to Islamist parties and elements, which had been politically marginalised by their opposition to the war for separation of 1971. The governments he led, both military and democratic, until his assassination in 1981 consistently sought to strengthen the nationalist vision of identity by re-legitimising the Islamist parties".
ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্মহীনতা নয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের বিরোধীরা তাদেরকে ধর্মনিরপেক্ষতার কারণে ইসলাম বিরোধী বলে অভিযুক্ত করে। যদিও এই অভিযোগ একেবারে অমূলক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। জিয়ার সময় থেকে যে ধর্মভিওিক রাজনীতির ধারা সূচিত হয় তা স্পস্ট। আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষতার মূল ধারণা থেকে অনেকটা সরে এসেছে এবং তারা এককভাবে সবচেয়ে জনপ্রিয় দল।
2001 সালের নির্বাচনে তারা 42% ভোট পায় যা 1996 সাল থেকে বেশী। অন্যদিকে বিএনপি জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করাটাকে লাভজনক মনে করেছিল এবং জামাতে ইসলামীর সাথে যুক্ত হয়ে নির্বাচন করে। ধর্মভিওিক রাজনীতির বিতর্কের এই পটভূমিতে বিএনপি-জামাত ও আওয়ামী লীগের মধ্যে নির্বাচনী লড়াই পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশে অবাধ ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচন অত্যন্ত জরুরী। বাইরের লোকজনরা ভাবেন যে, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা অবাধ ও মুক্ত নির্বাচনের নিশ্চয়তা দেয়।
কিন্তু আসলে তা ঠিক নয়। নির্বাচন ব্যবস্থাকে ইতোমধ্যে দলীয়করণ করা হয়েছে। দলীয়করণের এই অভিযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি'র মধ্যে বিরাজমান বিরোধ ও বিতর্ক বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থাকে দূর্বল করে দিবে। বাইরের দুনিয়ার লোকজন এব্যাপারটি নিয়ে যথেস্ট দ্বিধান্বিত। তবে নির্বাচন নিয়ে ফ্যাক্ট ও ফিকশনকে আলাদা করে দেখার যথেস্ট প্রয়োজন যা নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন গ্রহণ করা হবে, না বর্জন করা হবে।
মূল লেখাটি পড়তে চাইলে: http://tinyurl.com/kjdmn
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।