আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

Bangladesh ... An Exotic Beauty!!!

"" It is a difficult thing to tell the story of a life;and yet more difficult when that life is one's own. ""

হলিডে !!! একটা ম্যাজিক ওয়ার্ড ! এই একটি শব্দ পৃথিবীর সবথেকে নিরস মানুষের মুখেও হাসি ফোটায় ! সারা বছরের কাজের ব্যস্ততা থেকে,ক্লান্তি থেকে,সমস্ত চিন্তা থেকে মুক্তি দেয় এই একটি শব্দ ! পৃথিবীতে প্রতিবছর লক্ষ কোটি মানুষ শুধুমাত্র এই খাতে ব্যায় করছে প্রচুর পরিমাণ অর্থ। আমরা যদি কয়েকটি দেশের দিকে লক্ষ করি যেমন - নেপাল,মালদ্বীপ,থাইল্যান্ড,ইন্দোনেশিয়া অথবা ফিজি তবে দেখবো এই প্রতিটি দেশের আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে তাদের পর্যটন শিল্প। এই পর্যটন শিল্পের উপর ভিত্তি করে দাড়িয়ে আছে এই দেশগুলোর অর্থনৈতিক অবকাঠামো। শুধুমাত্র সঠিক ব্যবস্থাপনা,সরকারের একান্ত সহযোগিতা এবং উপযুক্ত প্রশিক্ষণের কারণে আজ এই দেশের মানুষগুলো পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করেছেন এবং বিশ্বের অর্থনৈতিক বাজারে নিজেদের একটি শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছেন। এছাড়াও ভারত,চীন,কোরিয়া,জাপান,অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপ অ্যামেরিকার অধিকাংশ দেশের অর্থনীতিতে তাদের পর্যটন শিল্প একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

তাই এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সে দেশের পর্যটন শিল্প একটি বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশ...দক্ষিন এশিয়ার ছোট্ট এই দেশটাকে প্রকৃতি তার দুই হাত ঢেলে সাজিয়েছে। প্রাকৃতিক এবং ঐতিহাসিক বৈচিত্রের এক দারুণ মিশেল হল আমাদের এই বাংলাদেশ। আমাদের এই দেশটাতে এমন অনেক কিছুই আছে যা দিয়ে আমরা বহির্বিশ্বের পর্যটন বাজারকে দারুণ ভাবে আকৃষ্ট করতে পারি। কিন্তু এর জন্য আগে দরকার সঠিক পরিকল্পনা এবং তার শতভাগ প্রয়োগ।

এবং এর জন্য সরকারের তরফ থেকে সার্বিক সহায়তা প্রয়োজন কারণ সরকার যদি পর্যটন শিল্পকে ঢেলে না সাজায় এবং এর উন্নয়নের জন্য সঠিক পদক্ষেপ গ্রহন না করেন তবে কারো ব্যক্তিগত চেষ্টায় আমাদের আসল লক্ষ কখনো পূরণ হবেনা। সুতরাং সঠিক পরিকল্পনা,সর্বাত্মক দলীয় প্রচেষ্টা এবং সকলের সহযোগিতাতেই আমরা আমাদের পর্যটন শিল্পকে বিশ্ব বাজারে পেশ করতে পারি যা দিয়ে আমরা কেবল অর্থনৈতিক মুক্তিই লাভ করবোনা আমরা গড়ে তুলব আমাদের "স্বপ্নের বাংলাদেশ" !!! আমি আমার এই লেখায় আমাদের কি আছে না আছে সেসবের বর্ণনায় যেয়ে শুধু শুধু আমার লেখার পরিধি বড় করবোনা । আমরা সবাই সেসব কম বেশী জানি যেমন - কক্সবাজার,সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ,সুন্দরবন,পার্বত্য চট্টগ্রাম কিংবা আমাদের ৪০০ বছরের ঐতিহ্যের ঢাকা । আমার আজকের এই লেখার মুল উদ্দেশ্য হল কিভাবে আমরা আমাদের পর্যটন শিল্পকে আজকের বিশ্ব বাজারে তাদের চাহিদা মত উপস্থাপন করতে পারি তা নিয়ে। তাই প্রথমেই আমি আমাদের কিছু অবকাঠামোগত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করব।

১/যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ আমাদের দেশের একটি প্রধান সমস্যা হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিদেশী পর্যটকরা যখন আমাদের দেশে বেড়াতে আসবেন তখন তারা নিশ্চয়ই ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা আশা করবেন কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার যেই দুর্দশা তাতে শুধু বিদেশী পর্যটক কেন আমরাই প্রতিদিন অনেক ক্ষেত্রে নাজেহাল হয়ে থাকি। কোন একটা সিএনজি অটোরিকশা বা ট্যাক্সি ক্যাবের ড্রাইভার মিটারে যেতে চায়না। একটা ট্যাক্সি পেতে হলে না না ভোগান্তি পোহাতে হয়। এছাড়া ট্রেন কিংবা দূরপাল্লার বাসেও অনেক সময় অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়।

তাই সরকার তথা যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এই দিকে বিশেষ ভুমিকা রাখা বাঞ্ছনীয়। এছাড়া ট্র্যাফিক জ্যাম কিংবা ভাঙা রাস্তাঘাটও যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটি বড় বাঁধা। তাই পর্যটন শিল্পের তথা সামাজিক জীবনের উন্নয়নের জন্য ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা অপরিহার্য। ২/নিরাপত্তাঃ বর্তমানে আইনশৃঙ্খলার যে অবনতি তাতে বিদেশী পর্যটকরা কতটুকু নিরাপদ সেটা আমাদের ভাবতে হবে। কারণ যখন কেউ কোথাও বেড়াতে যায় তখন তাদের কাছে নগদ অর্থ,দামী ক্যামেরা সহ অনেক কিছুই থাকে।

তাই এসব নিয়ে তারা যেন নির্ভয়ে যে কোনখানে যে কোন সময়ে যাতায়াত করতে পারে সরকারের সেদিকে নজর রাখতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পূর্ণ সহযোগিতা এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের মনে রাখতে হবে একজন বিদেশী নাগরিক যখন আমাদের দেশে আসবেন তখন তার জানমালের নিরাপত্তার দায় আমাদের দেশের উপরই বর্তায়। ৩/বর্ণবাদ সমস্যাঃ শুনতে হয়তো খুবই উদ্ভট লাগছে কিন্তু আমাদের দেশে এটা আসলেই একটি বড় সমস্যা। রাস্তা-ঘাটে,শপিং মলে আমরা যখন কোন ভিন্ন চামড়ার মানুষ দেখি (অ্যামেরিকান,ইউরোপিয়ান,চাইনিজ ইত্যাদি) তখন আমরা অনেকেই তাদের উক্তক্ত করে থাকি,শপিং মলে তাদেরকে না না ভাবে নাজেহাল করে থাকি কিংবা তাদের কাছে কোন পন্যের অতিরিক্ত দাম চেয়ে থাকি।

এছাড়া পর্যটন স্থানগুলোতেও যে কোন পর্যটকদের কাছ থেকে (দেশী - বিদেশী) বিক্রেতারা আকাশকুসুম দাম দাবী করেন এবং নানা ভাবে তাদের হেনস্ত করেন। তাই সরকারের উচিত এসব ছোটখাটো ব্যাপার নজরে এনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার কারণ এসব কিছুর সাথে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি জড়িত। ৪/প্রশিক্ষিত জনবল ঃ উন্নত বিশ্বের সব দেশেই বর্তমানে হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট,হোটেল ম্যানেজমেন্ট,ট্যুরিজম ও কমার্শিয়াল কুকারি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাদের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে এই বিষয়ের উপর বিভিন্ন কোর্স - ডিগ্রী রয়েছে। যার ফলে এসব বিষয়ে আগ্রহী ছেলেমেয়েরা এসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে ট্যুরিজমের বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করে।

এতে একদিকে যেমন এসব ক্ষেত্রে সুস্থ কাজের পরিবেশ তৈরি হয় তেমনি পর্যটন শিল্পের মানও অনেক উন্নতি হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও আমাদের দেশে এখনো সেই অর্থে তেমন কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা ইন্সটিটিউশন নেই যেখানে ট্যুরিজমে আগ্রহী ছেলেমেয়েরা এসব বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা গ্রহন করবে এবং তারপর নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে দেশের পর্যটন শিল্পকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে। এছাড়া আমাদের দেশের বেশিরভাগ বাবা-মা'রাও এখনো ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁদের নিজেদের সন্তানকে দেখতে চান না। তাঁরা মনে করেন এসব পেশায় তাঁদের সন্তানদের কেউ সম্মান করবেনা। তাই এক্ষেত্রে আমাদের নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন অত্যাবশ্যকীয়।

৫/মান নিশ্চিতকরণঃ এছাড়াও সর্বক্ষেত্রে সার্ভিসের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য দক্ষ এবং সৎ সরকারি কর্মকর্তা প্রয়োজন যারা নিয়মিত ভাবে জেলা ভিত্তিক-শহর ভিত্তিক পর্যায়ে সকল হোটেল,রেস্টুরেন্টের মান নির্ণয় করবেন এবং মান নিশ্চিত না হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন যাতে ভবিষ্যতে সেই হোটেল বা রেস্টুরেন্ট সেই ভুল আর না করেন। উপরোক্ত বিষয়গুলো যদি সরকার গুরুত্তের সাথে পালন করেন তবে নিশ্চিতভাবে আমাদের দেশ বিশ্বের কাছে একটি নিরাপদ পর্যটন দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে আর আমরা লাভ করব প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা । কিন্তু যে কোন পণ্য বিক্রয়ের জন্য চাই সঠিক প্রচারণা বা মার্কেটিং। তাই আমরা তথা বাংলাদেশ সরকার কি কি উপায়ে আমাদের পর্যটন শিল্পকে বিশ্বের বাজারে সঠিক ভাবে উপস্থাপন করতে পারি তার কিছু দিক নিয়ে এখন আলোচনা করব। ১/সারা বিশ্ব এখন ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীল।

তাই প্রথমেই চাই আমাদের দেশের পর্যটন শিল্পের উপর আকর্ষণীয়,আধুনিক এবং আপডেটেড ওয়েবসাইট। যেখানে আমাদের দেশের বিভিন্ন মনোমুগ্ধকর স্থানের সকল তথ্য এবং ছবি থাকবে। এতে করে বিশ্বের মানুষ চাইলেই ল্যাপটপের এক খোঁচায় ভার্চুয়ালি আমাদের দেশের প্রেমে পরে আমাদের দেশে ঘুরতে আসবে। ২/আমাদের দেশে বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইন্স আছে। সরকার থেকে যদি সেসব এয়ারলাইন্সের সাথে চুক্তি করে আমাদের ট্যুরিজমের ব্রোশার( Brochure ) সেসব এয়ারলাইন্সের যাত্রীদের কাছে পৌঁছানো যায় তবে সেটা খুবি ভালো হবে।

এতে আমরা বিভিন্ন দেশের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হব। ৩/শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে আমাদের সার্ক দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে শিক্ষাসফরের মাধ্যমে ব্যবসায়িক আদান-প্রদান করা যেতে পারে। এছাড়া পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরকেওলজি এবং হিস্ট্রির ছাত্রছাত্রীদের জন্য কিছু প্যাকেজ প্রোগ্রামের পরিকল্পনা করা যেতে পারে যাতে করে বহির্বিশ্বের ছাত্রছাত্রীরা আমাদের দেশে আসতে উৎসাহী হয়। এসব প্যাকেজে প্লেন ফেয়ার থেকে শুরু করে থাকা খাওয়া এবং যাতায়াতের বান্ডেল প্রোগ্রাম থাকবে যা কি না ছাত্রছাত্রীদের জন্যও সুলভ হবে এবং আমরাও আমাদের পর্যটন শিল্পকে প্রসারিত করতে পারব। ৪/ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে বাংলাদেশ অত্যন্ত বৈচিত্রপূর্ণ একটি দেশ।

এখানে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ও উপজাতীয় নানান ধর্মের মানুষের এক অপূর্ব সহাবস্থান। এখানে প্রতিবছর যেমন মুসলিম বিশ্বের ২য় বৃহৎ জমায়েত "বিশ্ব ইজতেমা" পালিত হয় তেমনি হয় হিন্দু ধর্মের বিখ্যাত "রথযাত্রা"! আবার এ দেশেই রয়েছে অতিশ দীপঙ্করের পুণ্যভূমি! এছাড়া আমাদের সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে অনেক প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী মসজিদ,মাজার শরীফ,মন্দির,গির্জা,প্যাগোডা এবং বৌদ্ধ মঠ । তাই সরকার এবং ধর্ম মন্ত্রণালয় যদি এই বিষয়ে সুনজর দেন তবে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষরা আমাদের দেশের আতিথি হয়ে আসতে আরও আগ্রহী হবেন। এতে করে যেমন বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষের মাঝে সৌহার্দ বাড়বে আমরা তেমনি আমাদের কৃষ্টি-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে পারব। ৫/বাংলাদেশ পল্লী গানের দেশ।

বাংলাদেশ লালনের দেশ,হাসন রাজা,রাঁধারমণের দেশ,বাংলাদেশ শাহ্‌ আব্দুল করিমের দেশ। আমাদের দেশে বিভিন্ন সময় এসব মহাত্মাদের স্মরণে তাঁদের সৃষ্টি নিয়ে তাঁদের আখড়ায় মেলা হয়,উতসব হয়। আমরা যদি সঠিক প্রচারণার মাধ্যমে উপমহাদেশ তথা বিশ্বের সঙ্গীত প্রেমীদের এসব উতসবের কথা জানাতে পারি তবে নিঃসন্দেহে অনেকেই এসব উতসবে যোগ দিতে আমাদের দেশে আসবেন। ৬/এছাড়া পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশী ট্র্যাভেল এজেন্সি গুলোও সরকারি এবং বেসরকারি সহযোগিতায় বাংলাদেশ ট্যুরিজমের প্রচারনা করতে পারে। ৭/বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক ফটোগ্রাফার আছেন।

তারা প্রত্যেকে যদি তাদের নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পেজে তাদের তোলা বাংলাদেশের বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন ছবি দিয়ে অ্যালবাম করে তবে সেটাও একদিক দিয়ে আজকের ইন্টারনেট প্রধান বিশ্বে একধরণের প্রচার হবে। ফোকাস আমাদের এই ছোট্ট দেশটাতে এমন দুটো জায়গা আছে যার মাধ্যমে আমরা সারা পৃথিবীর কাছে "টুরিস্ট আইকন" হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে পারি !!! ১/ কক্সবাজার, ও ২/সুন্দরবন। কক্সবাজার হল পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত আর সুন্দরবন হল পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন। এবং দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে এত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আমরা এই দুটো জায়গার যথাযত ব্যবহার করতে পারছিনা ! তাই সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার মাধ্যমে আমরা এই দুটি স্থানকে আন্তর্জাতিক টুরিস্ট স্পট হিসেবে তৈরি করতে পারি। সারা বিশ্বে সমুদ্রে "সার্ফিং","ফিশিং","ডাইভিং","সেইলিং" অত্যন্ত জনপ্রিয়।

তাই আমরা যদি কক্সবাজারকে বিশ্বের দরবারে তার উপযোগী করে তুলতে পারি তাহলে প্রতি মৌসুমে লক্ষ লক্ষ বিদেশী পর্যটক আমাদের দেশে আসবে। আমি বিশ্বাস করি ভারতের "গোয়া" কিংবা থাইল্যান্ডের "পাতায়া বীচ" থেকে আমাদের কক্সবাজার অনেক বেশি সুন্দর এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর শুধু দরকার সঠিক পরিকল্পনা এবং তার যথাযত প্রয়োগ। এমনিতেই কক্সবাজারে প্রচুর ভাল হোটেল,মোটেল এবং রেস্টহাউস রয়েছে। শুধু একটি আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর,সঠিক নিরাপত্তা এবং সঠিক পরিচর্যা পেলেই আমরা কক্সবাজারকে নিয়ে যেতে পারি উৎকর্ষের শীর্ষে। প্রাথমিক ভাবে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সঠিক বিনিয়োগ করে যদি কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলা যায় তবে অদূর ভবিষ্যতে এই কক্সবাজারই হবে আমাদের "স্বপ্নের বাংলাদেশ" এর পর্যটন রাজধানী !!! এছাড়া সুন্দরবনের প্রতিও আমাদের আরও বেশী যত্নশীল হতে হবে।

আমরা যদি সুন্দরবনের বিভিন্ন পয়েন্টে কিছু ভালো মানের হোটেল-মোটেল-কটেজ তৈরি করি এবং যথাযত লোকবল (গাইড,ফরেস্ট গার্ড,বোটম্যান,কুক, ইত্যাদি) সরবারহ করতে পারি তবে বিশ্বের অনেক অ্যাডভেঞ্চার প্রেমী মানুষ আমাদের সুন্দরবনে আসতে আগ্রহী হবেন। এই সুন্দরবনের মাধ্যমে আমরা বিশ্বের পর্যটকদের "ওয়াইল্ড লাইফ" এর এক নতুন পৃথিবী উপহার দিতে পারব। আর বিশ্ববাসিও জানবে যে "রয়েল বেঙ্গল টাইগার" এর আসল দেশ কোথায় !!! উপরোক্ত বিষয় গুলো যদি আমরা সঠিক ভাবে সরকারের একান্ত সহযোগিতায় প্রয়োগ করতে পারি তবে আমাদের দেশও ট্যুরিজম বিশ্বের এক অনন্য উদাহরণ হবে ইনশাল্লাহ। এসবের পাশাপাশি আমাদের যোগ্য জনবল তৈরি করতে হবে এবং তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে। এবং যোগ্য জনবল বলতে আমি এখানে শুধু ম্যানেজার বা হোটেল মালিক তৈরির কথা বলছিলা... যোগ্য জনবল বলতে সৎ ড্রাইভার,টুরিস্ট গাইড,সমুদ্রের লাইফ গার্ড,হোটেলের হাউজ কিপিং,লন্ড্রি,ওয়েটার,কুক থেকে শুরু করে বিভিন্ন লজিস্টিক ও হ্যান্ডিম্যান এর কথা বলছি।

কারন ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রি পুরোটাই একটা টিম ওয়ার্ক! আর এসব ক্ষেত্রে ভাষা জ্ঞ্যান অত্যন্ত জরুরি। তাই ইংরেজি ভাষাটার উপর এসব ক্ষেত্রে খুবই জোর দেয়া প্রয়োজন। আমার জানা মতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের অনেক ছেলে মেয়ে আছে যারা এসব বিষয়ে অনেক দক্ষ এবং অভিজ্ঞ। এবং তাদের মধ্যে অনেকেই দেশের ট্যুরিজমের প্রসারের জন্য কাজ করতে আগ্রহী। তাই সরকার চাইলেই এসব যোগ্য এবং অভিজ্ঞ তরুণদের সাথে নিয়ে দেশের ভগ্ন পর্যটন শিল্পকে নিয়ে যেতে পারে সাফল্যের শীর্ষে ।

এতে দেশ যেমন আর্থিক ভাবে সচ্ছল হবেন তেমনি দেশের মানুষও নতুন কর্মসংস্থান পাবেন। জীবন যাত্রার মান বাড়বে এবং দেশ আগাবে সমৃদ্ধির পথে। আর আমরা পাব আমাদের "স্বপ্নের বাংলাদেশ" ! ============================================ লেখাটি Rahat Shantonu এর থেকে নেয়া

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।