জানি না কেন লিখি! তবু লিখি মনের খেয়ালে, পরিবর্তন করার মানসে, পরিবর্তিত হওয়ার মানসে। যদিও জানি সব ব্যর্থ হচ্ছে। তবুও আমি আছি সেদিনের সেই আলোকময় প্রত্যুষার আগমনের অপেক্ষায় ‘আযাদী’ বা ‘স্বাধীনতা’ মানুষের এক পরম আরাধ্য বিষয়, মানবজাতির চির আকাঙ্খার বস্তু। যুগে যুগে মানুষ স্বাধীনতার আকাঙ্খায় লড়াই করেছে প্রতিকুল পরিবেশে, প্রবল প্রতাপান্বিত শক্তিশালী শত্র“র বিরুদ্ধে, যদিও সে জানতো তার শত্র“র সামনে সামান্য খড়কুটো মাত্র। শক্তির এই বিশাল ব্যবধান তাকে থামিয়ে রাখতে পারেনি শত্র“র মোকাবেলা করা থেকে।
স্বাধীনতা মানব চরিত্রের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা কখনোই মানব অস্তিত্ব থেকে আলাদা করা যায় না। পরম কাঙ্খিত সেই স্বাধীনতা লাভের জন্য যুগে যুগে যে সংগ্রাম চোলেছে, তা-ই মুলত মানবজাতির ইতিহাস। কোন কোন মহামানব পরাধীন কোন জনসংখ্যাকে দেখিয়েছেন স্বাধীনতার পরম সুখ-স্বপ্ন। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে আতœাহুতি দিয়েছে বারংবার। আদায় করে নিয়েছে কাঙ্খিত সেই স্বাধীনতা।
আবার পথ হারিয়ে মানুষ নেতাদের দ্বারা বিভ্রান্তও হয়েছে বার বার। স্বাধীনতা নামের সোনার হরিণ ধোরতে গিয়ে নিজেদের জড়িয়েছে সোনার শিকলে, আষ্টেপিষ্টে নিজেরা জড়িয়ে গেছে শয়তানী জালে। আমাদের নিকট ইতিহাসে আমরা দেখতে পাই বহুদিন যাবত ইউরোপে প্রচলিত রাজতন্ত্রে সামন্তবাদী রাজাদের স্বেচ্ছাচারিতা, অত্যাচার, শোষন, খৃষ্টধর্মের ব্যর্থতার ফলে রাজা ও পোপদের সংঘাতের ফলে সৃষ্ট সংঘাত, হানাহানি ইত্যাদির বিরুদ্ধে জনগণকে ক্ষেপিয়ে তুলে, রাজাদের বিরুদ্ধে বিপ্লব ঘোটিয়ে, তাদের উৎখাত করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো ধনতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্র। কিন্তু এই ধর্মহীন, আতœাহীন, পুজিবাদী, সুদভিত্তিক অর্থনীতি, জড়বাদী জীবন ব্যবস্থার ফলে সৃষ্টি হয় মানুষে মানুষে বিভেদ, অর্থনৈতিক শ্রেনীবিন্যাস। ফলশ্র“তিতে লক্ষ লক্ষ লোক দুর্ভিক্ষে রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকলো, না খেয়ে মারা গেলো, সর্বত্র শুধু ক্ষুধা আর হাহাকার; চুরি, ছিনতাই ইত্যাদি সামাজিক অপরাধে ছেয়ে গেলো সর্বত্র।
অপরদিকে গুটি কয়েক মানুষ কুক্ষিগত করে ফেলে সমস্ত সম্পদ। অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়ায় যে এই অবস্থা থেকে মুক্তির লক্ষে তৎকালীন চিন্তাবিদগণ চিন্তিত হয়ে পড়েন। ব্যাপক চিন্তা ভাবনার পর তারা আবিষ্কার করেন আরেক মতবাদ, সাম্যবাদ। “কেউ খাবে কেউ খাবে না, তা হবে না, তা হবে না” এই মোহময়ী শ্লোগানে সাম্যবাদের হর্তাকর্তারা মানুষকে দেখিয়েছিলো স্বাধীনতার স্বর্গ সুখের প্রলোভন। মুক্তিকামী সাধারণ জনতাও সেই ঘোষনায় প্রভাবিত হয়ে গ্রহণ করে নেয় সাম্যবাদ তথা কম্যুনিজমকে।
সাম্যবাদের প্রবক্তারা তাদের এই শাসনব্যবস্থাকে ঘোষনা করে চধৎধফরংব বা স্বর্গ বোলে। তারা বহুবার বহুভাবে আকারে ইঙ্গিতে কিংবা প্রকাশ্যভাবে তাদের রেডিও, টেলিভিশন, সংবাদপত্রে প্রচার করে যে তাদের গৃহিত এই ব্যবস্থা হলো স্বর্গ সুখের সমান। কিন্তু যেই তারা এই জীবন ব্যবস্থার ফল ভোগ করতে শুরু কোরলো, তারা দেখতে পেলো এ তো স্বাধীনতা নয়, স্বর্গসুখ নয়, বরং এতো সামন্তবাদী রাজাদের শাসনের চেয়ে আরো নিকৃষ্টতম পর্যায়, এ যেনো কড়াই থেকে চূলোয় লাফ দেয়ার মত, নরক। ফলে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার অল্প কিছুকাল পরেই তাদের মোহভঙ্গ হলো। এই ব্যাবস্থায় তাদের মতপ্রকাশের অধিকার নেই, স্বাধীনতা নেই।
শাসনযন্ত্র প্রচণ্ড শক্তিশালী হয়ে উঠে এবং এই শক্তি রাষ্ট্রের জনগণকে নিয়ন্ত্রনে ব্যবহৃত হোতে শুরু কোরলো। অবস্থা এরকম দাঁড়ালো যে সরকার যা চায় শুধুমাত্র তার খবরই সীমানার বাইরে যেতো। বড় বড় দূর্ঘটনার খবর ছাড়া আর কোন খবরই বাইরের পৃথিবীতে যেতে পারতো না। ফলশ্র“তিতে বাইরের দুনিয়ায় সাম্যবাদের আওতাভুক্ত সোভিয়েট ইউনিয়নের নাম হয়ে গেলো ওৎড়হ পধৎঃধরহ. আর এই ব্যবস্থা গ্রহণকারী চীনের নাম হয়ে গেলো ইধসনড়ড় পঁৎঃধরহ. সাধারণ জনগণ আরো দেখতে পেলো এই ব্যবস্থায় ব্যাক্তির সম্পদ অবৈধ ঘোষনা দিয়ে তা রাষ্ট্র তা দখল করে নেয়। মানুষ রাষ্ট্রের জন্য উদয়াস্ত পরিশ্রম করার পর দেখতে পেলো এতে তাদের কোন রকম ভোগ করার হক নেই, মালিকানা নেই, অধিকার নেই।
দীর্ঘ লাইন দিতে হয় শুধুমাত্র দু’ টুকরো রুটির জন্য। ব্যক্তি মালিকানাহীন এই ব্যবস্থা তাদের প্রচণ্ড রকমের হতাশ করে। সব মিলিয়ে এই স্বর্গভুমি(!) থেকে কিভাবে পালানো যায় তাই নিয়ে মানুষ ব্যস্ত হয়ে গেলো, যদিও তা সহজ কথা নয়, কারণ কথিত স্বর্গ থেকে বের হবার অর্থ নিজেদের দেশ, লক্ষ স্মৃতি বিজড়িত প্রিয় জন্মভুমি চিরদিনের জন্য ত্যাগ করে সম্পূর্ণ অজানা অচেনা দেশে, অচেনা সমাজে বাস করা, যাদের ভাষা পর্যন্ত অজানা। কিন্তু কথিত এ স্বর্গ এমনই স্বর্গ যে সেখান থেকে সেখানকার অধিবাসিরা না পালিয়ে পারলো না, পালাতে বাধ্য হলো। কিন্তু তাদের গৃহিত জীবনব্যবস্থা তাদের এমনভাবেই শৃঙ্খলিত কোরলো যে তারা সেখান থেকে পালানোরও কোন পথ পেলো না।
মরিয়া হয়ে তবু তারা পালাতে লাগলো, পালাতে গিয়ে তারা সীমান্তরক্ষীদের গুলিতে নিহত হলো, তাদের হাতে বন্দী হলো, চিরতরে পঙ্গু হলো হাজারে হাজারে।
কম্যুনিষ্ট পূর্ব বার্লিন থেকে পশ্চিম বার্লিনে পালিয়ে যাওয়া বন্ধ করতে রাশিয়ানরা বিখ্যাত বা কুখ্যাত বার্লিন দেয়াল তৈরী কোরলো। দেয়াল তৈরী করেও মানুষ পালানো বন্ধ করা যায়না দেখে দেয়ালের উপর প্রতি পঞ্চাশ গজ অন্তর অন্তর স্তম্ভ (ডধপয ঞড়বিৎ) তৈরী করে সেখানে মেশিনগান বসানো হলো। হুকুম দেয়া হলো দেয়াল টপকে কাউকে পালিয়ে যেতে দেখলেই যেনো গুলি করা হয়। তবু লোক পালানো বন্ধ হয়না দেখে পরিখা খনন করা হলো, দেয়ালে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া হলো, নানা রকম বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি বসানো হলো পলায়নকারীদের খুজে বের করে হত্যা বা বন্দী করার জন্য।
কিন্তু কিছুতেই এই স্বর্গ থেকে পলায়ন করা বন্ধ করা গেলো না। মানুষ মরিয়া হয়ে বিভিন্ন আতœঘাতী পথ ধোরলো, যার বিররণ পাওয়া যাবে গত শতাব্দীর কম্যিউনিজম কালের ইতিহাস ঘাটলে। এ কেমন স্বর্গ যেখান থেকে মানুষ পালিয়ে যায়, জীবনকে তুচ্ছজ্ঞান করে দেয়াল টপকে পালিয়ে যায়! এ ঘটনা শুধুমাত্র রাশিয়ার ক্ষেত্রেই ঘোটেছে তাই নয়, ইহুদী খৃষ্টান বস্তুবাদী যান্ত্রিক সভ্যতার উগ্রতম রূপ কম্যিউনিজমকে যারাই স্বাধীন-স্বর্গভুমি পাওয়ার নীতি বোলে বিশ্বাস করে গ্রহন করেছে তাদের প্রত্যেকেরই একই অবস্থা হয়েছে। পৃথিবীর অপর ভাগ ধনতান্ত্রিক গণতন্ত্রের ধ্বজাধারীদের হস্তক্ষেপে সোভিয়েট রাশিয়া ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে কম্যুনিজমের পালে বৈরী হাওয়া লাগে। তাদের এই আসন্ন পতনের ফলে মুক্তির ত্রাতা হয়ে মানুষের সামনে হাজির হয়েছে পশ্চিমা সভ্যতার আধুনিক গনতন্ত্র।
স্বাধীনতা প্রাপ্তির আশায় বুকভরা আশা নিয়ে মানুষ গ্রহণ করে নিলো পশ্চিমা সভ্যতার আরেক ব্যবস্থা, গণতন্ত্রকে। পশ্চিমা সভ্যতা সারা বিশ্বে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন,স্বাধীনতা, সমতা, অর্থনৈতিক মুক্তি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মানবধিকার ইত্যাদি বুলি আওড়িয়ে ফেরী করে বেড়ালো গণতন্ত্রকে, আর মানবজাতি হুমড়ি খেয়ে গিললো তাদের এই বুলি। কিন্তু তাদের কি দিতে পেরেছে ধনতান্ত্রিক পুজিবাদী পশ্চিমাদের গণতন্ত্র? গত শতাব্দীর শুরু থেকে দুই দুইটি বিশ্বযুদ্ধের অবসানের মধ্যদিয়ে বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত জাতিসংঘ শুধুমাত্র কয়েকটি ক্ষমতাশালী রাষ্ট্রের আজ্ঞাবহ হয়ে তাদেরই চাওয়াকে বাস্তবায়নে তৎপর থেকেছে অনবরত। এই একচোখা নীতির কারণে যারা পশ্চিমা সভ্যতার ঘৃনিত এক চোখা নীতিকে ঘৃণা করে তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে তারা পতিত হয়েছে মানবাধিকারের ফেরীওয়ালা, মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রতিশ্র“তিদানকারীদের তোপের মুখে। আর তাদের শায়েস্তা করতে যেয়ে এই সভ্যতা গোপনে প্রকাশ্যে এমন এমন সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যা মানবসভ্যতার ইতিহাসে ইতিপূর্বে আর ঘোটেনি।
শুধুমাত্র তাদের বশ্যতা স্বীকার না করার অপরাধে দিনের পর দিন বিভিন্ন জনগোষ্টিকে অর্থনৈতিক অবরোধ করে রেখেছে, সামরিক লক্ষবস্তুতে পরিণত করেছে, লক্ষ লক্ষ শিশুদেরকে হত্যা করা হয়েছে, জেলে বন্দি করা হয়েছে, অমানবিক নির্যাতনের মাধ্যমে খুন করা হয়েছে। চলতি শতাব্দীতে সন্ত্রাস দমনের নামে সন্দেহভাজনদের বছরের পর বছর গোপন ঘাটিতে আটক করে বিচারবহির্ভুতভাবে অকথ্য, অমানবিক নির্যাতন করেছে। তাদের গৃহিত নীতির ফলে দেশে দেশে আজ যুদ্ধ, বিগ্রহ, মারামারি, অন্যায়, অত্যাচার, গৃহযুদ্ধ ইত্যাদিতে পরিপূর্ণ। যে কোন পরিসংখ্যান বোলে দেবে যে কম্যুনিজমের আমলে যত যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, যত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, যত মানুষ আহত, বিকলাঙ্গ হয়েছে, যত নারী ধর্ষিত হয়েছে, যত পিতামাত তার সন্তানকে হারিয়েছে, যত সন্তান তার বাবা মা হারিয়েছে, তার চাইতে হাজার গুণ ছাড়িয়ে গেছে এই আধুনিক গণতন্ত্রের অধীনস্থ পৃথিবী। দেশে দেশে আইন শৃঙ্খলা, সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধি পেয়ে অবস্থা আজ এই রূপ হয়েছে যে পৃথিবীর আর বাকীসব অনুন্নত, দরিদ্র রাষ্ট্রের কথা বাদ দিলাম, একক ক্ষমতাসম্পন্ন পরাশক্তির অধিকারি, অর্থনৈতিক দিক দিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত, যাদের বাহিনী পৃথিবীর আর সব বাহিনী থেকে শ্রেষ্ঠ এবং সর্বাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত, সেই রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান নিজেই প্রকাশ্যে ঘোষনা করেন যে, “আমরা আমাদের সন্তানদেরকে (সন্ত্রাসিদের হাত থেকে) রক্ষা করতে অক্ষম।
” নিরূপায় মানুষ আজ বিকৃত সব পথ বেছে নিচ্ছে, বিচিত্রসব উপায়ে আতœহত্যা করে বেরিয়ে যেতে চাইছে এই অবস্থা থেকে। জীবন বাচানোর তাগিদে, প্রানভয়ে আতঙ্কিত মানুষ পৃথিবীর আসন্ন ধ্বসযজ্ঞ থেকে বাঁচার লক্ষ্যে মাটি খুড়ে, বাঙ্কার বানিয়ে মাটির গভীরে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে বসবাস আরম্ভ করেছে। এসব বিষয় ছাড়াও মানবজাতির সামনে আরো ভয়ংকর বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে পারমানবিক বোমা আতংক। এই সভ্যতা আজ মানবজাতিকে এমন অবস্থায় দাঁড় কোরিয়েছে যে, তারা যে সংখ্যক পারমানবিক বোমার মজুদ ঘোটিয়েছে তা দিয়ে শুধু পৃথিবী নামক এই গ্রহকেই নয়, একসাথে কয়েকটি পৃথিবী ধ্বংস করতে সক্ষম। আর তাতে যে শুধু এই সভ্যতার যুদ্ধবাজ নেতাদের আতœহত্যা হবে তাই নয়, সাথে সাথে আতœহত্যা হবে গোটা মানব জাতির।
সুস্থ মানুষ এই ভেবে আজ দিশেহারা। মরিয়া হোলেও এই অবস্থা থেকে বের হয়ে যাওয়ার কোন পথ নাই। কল্পিত সীমানা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে মানুষকে। আল্লাহর সৃষ্টি এই বিশাল পৃথিবী, মানুষের জন্যই তৈরী করেছেন তিনি স্বাধীন, মুক্তভাবে চলাফেরা করার জন্য। যার যেখানে প্রয়োজন, যেখানে ইচ্ছা স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াবে, ভ্রমন কোরবে।
কিন্তু ভিসা, পাসপোর্ট, ভৌগলিক সীমানা, জাতিগত ভেদাভেদ ইত্যাদি নানাবিধ জটিল সিষ্টেমের মাধ্যমে ছোট একটি ভুখণ্ডে অধিক সংখ্যক জনসংখ্যাকে আটকে রাখা হয়েছে, সংখ্যা এবং সম্পদের আনুপাতিক ব্যবধানের কারণে মানুষ অনাহার অর্ধাহারে ভুগছে, অপরদিকে বিশাল ভুখণ্ডে স্বল্পসংখ্যক মানুষ বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদকে ভোগ কোরছে পাশবিকভাবে।
পশ্চিমা সভ্যতার এই উন্নতি, এই প্রযুক্তিগত ক্ষমতা, যান্ত্রিক প্রগতি মানুষকে তাহোলে কি দিলো? কোথায় তাহলে তাদের মানবধিকার, কোথায় তাদের ন্যায়বিচারের প্রতিশ্র“তি? তাহলে আসলে এ-ই কি মানবসৃষ্ট জীবনবিধানগুলির অধীনে সভ্যতাগুলির পরিণতি, এই কি নেট ফল, এই-ই তাদের প্রদত্ত স্বাধীনতার নমুনা! এ যে স্বাধীনতা নয়, তা আর মুখে বোলে দিতে হবে না, এ যে প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়, তা মানুষ আজ হাড়ে হাড়ে টের পেয়ে গেছে। কিন্তু মানুষের পালাবার পথ কোথাও নাই। ইহুদী খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতার নখদর্পের বাইরে আজ পৃথিবীর এক ইঞ্চি মাটি কিংবা পানিও নেই। এমনকি আজ আকাশের বিশাল এলাকায়ও তাদের প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে।
সুতরাং পালিয়ে যাওয়ার পথ কোথাও নাই। আসলেই কি কোন পথ নেই?
পথ আছে, এবং অবশ্যই আছে। সামন্তরাজাদের রাজতন্ত্র, ধনতান্ত্রিক বুর্জোয়া গণতন্ত্র, সাম্যবাদ এই ব্যবস্থাগুলি একটার ব্যর্থতার মাধ্যমে আরেকটার জন্ম হয়েছে। শান্তির লক্ষ্যে পাগলপ্রায় মানুষ অন্ধকারে হাতরে বেড়িয়ে তাদের ক্ষুদ্র জ্ঞানে আবিষ্কার করেছে একটার পর একটা ব্যবস্থা। কিছুদিন না যেতেই দেখতে পেয়েছে এর ফলাফল, ব্যর্থতা।
তাদের সীমাবদ্ধ জ্ঞানে তারা বুঝতে পারেনি যে তারা যে ব্যবস্থাগুলি চালু করেছে তা অপূর্ণাঙ্গ এবং এসকল জীবন ব্যবস্থাগুলি শুধুমাত্র জীবনের একটা অঙ্গনকে মুখ্য ধোরে এগিয়ে গেছে। কোন কোন জীবনব্যবস্থায় সমষ্টিগত জীবন থেকে ধর্মকে বিতাড়িত করে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক উন্নতিকে, প্রগতিকে প্রাধান্য দিয়ে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে উন্নতি লাভ করেছে বটে, কিন্তু তারা আতিœক দিক দিয়ে দেউলিয়া হয়ে প্রায় পশু পর্যায়ে নেমে পড়েছে। দিন দিন তারা বস্তুবাদী এবং ভোগ বিলাসে পাশবিকভাবে মত্ত হয়ে গেছে। পরিনামে তারা ব্যর্থ হয়েছে মানবজাতির কাঙ্খিত সেই শান্তি এবং স্বাধীনতা প্রাপ্তি থেকে।
এইসব মতবাদের স্রষ্টারা ভেবে দেখেননি যে তাদের সৃষ্ট মতবাদগুলি মানবজীবনের সার্বিক দিকটি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে।
মানুষের শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সমস্যাই বড় নয়। মানুষকে সমাজে সুখে শান্তিতে এবং নিরাপত্তায় বসবাস করতে হোলে অর্থনৈতিক উন্নতির পাশাপাশি আতিœক, মানসিক, পরিবেশগত অনেক নিয়ামকের উপর নির্ভর করতে হয়। মানবজাতির সব সমস্যাকে উপলদ্ধি করতে হোলে তার অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতকে জানতে হয়, মানুষের শারিরীক, আতিœক চাওয়া পাওয়া ও বিকাশকে জানতে হয়। সীমিত জ্ঞানের অধিকারি মানুষ তার অতীতকে জানে খুবই অল্প, ভবিষ্যত সম্পর্কে তার কোন জ্ঞানই নেই, অপরদিকে বর্তমান বলতে মানুষের কিছূই নেই। মানব মনের জটিলসব প্রক্রিয়া নিয়ে এ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে নিজেরাই মতামত দিয়েছেন যে তারা মানব মনের জটিলসব গঠনপ্রণালী এবং গতিবিধির খুব অল্পই জানতে পেরেছেন।
মানব মন যদি সাগর হয় তবে এ পর্যন্ত তারা তার সৈকতে পৌঁছেছেন মাত্র। সুতরাং মানবজাতি ভবিষ্যতে আজ থেকে দশ বছর কিংবা একশো বছর পর কিভাবে সুখে শান্তিতে, নিরাপত্তায় বসবাস করতে পারবে তা নির্ধারণ করে তাদের পক্ষে কিভাবে সম্ভব মানবজাতিকে একটি সত্যিকার জীবনবিধান দেওয়া?
তা যেমন সম্ভব নয়, তেমনি তারা পারেনিও। মানবজাতিকে এমন একটি নির্ভুল এবং সবদিক দিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থা দেওয়া তাঁর পক্ষেই সম্ভব যিনি এই সৃষ্টির স্রষ্টা। তিনিই জানেন মানুষের মন কিভাবে গঠিত, এর গতি প্রকৃতি কি, তিনিই জানেন কোন নিয়ম নীতি দিলে তারা পাবে কাঙ্খিত সেই সুখ-শান্তি এবং নিরাপত্তা। এখন প্রশ্ন হলো তিনি কি এমন একটি জীবনবিধান আমাদের দান করেছেন? দিয়ে থাকলে এই জীবনবিধানই যে মানবজাতির অনাগত কালের সব রকম সমস্যার সমাাধান দিতে পারবে তার নিশ্চয়তা কি?
মানুষের স্রষ্টা, সর্বগুণের অধিকারি, মহান আল্লাহ মানুষকে দয়া করে সেই জীবন বিধান আমাদের দান করেছেন।
যুগে যুগে তিনি তাঁর প্রেরিত নবী রসুলদের মাধ্যমে প্রতিটি জনগোষ্টিতে তিনি স্থান, কাল এবং পাত্রের উপর ভিত্তি করে সৃষ্টির শুরু থেকে দিয়ে এসছেন। এর ক্রমধারায় সর্বশেষ আজ থেকে চৌদ্দশত বছর আগে মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হযরত মোহাম্মদ (স) এর মাধ্যমে সারা মানবজাতির জন্য দান করেছেন যা পৃথিবীর বাকী আয়ুষ্কালের জন্য প্রযোজ্য। এই দীনকে তিনি তৈরী করেছেন প্রাকৃতিক নিয়মের অধীনে নির্ভর করে। এর কোন বিধান আজ থেকে একহাজার বছর আগে যেমন প্রযোজ্য, আজ থেকে দশহাজার বছর পরেও তেমনি করে প্রযোজ্য হবে। এর কোন ব্যত্যয় ঘোটবে না।
উদাহরণ হিসাবে বলা যায় আল্লাহ যে সকল বিধানগুলি আমাদের দান করেছন তার মধ্যে একটি হুকুম হোচ্ছে ঐক্যবদ্ধ হওয়া, ঐক্যভঙ্গ হয় এমন কোন কাজকে তিনি সবচাইতে জঘন্য অপরাধ হিসাবে আমাদের সামনে প্রকাশ করেছেন। রসুলাল্লাহ ঐক্যভঙ্গ করার মত কোন কথা, কাজ বা ঈশারা ইঙ্গিতকেও কুফর অর্থাৎ এই জাতি থেকে বহিস্কার হিসাবে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। বার বার আল্লাহ তাঁর বিধানে ঐক্যের কথা উল্লেখ করেছেন। আল্লাহর দীনের ক্ষেত্রে ঐক্যের বিষয়টি ভিত্তিমূল হিসাবে কাজ করেছে।
এবারে আসা যাক ঐক্যকে নিয়ে কিছুটা বিশ্লেষন করা যাক।
ঐক্য এমন এক প্রাকৃতিক ব্যপার যে ঐক্যবদ্ধ কোন জনগোষ্টি ঐক্যহীন কোন জনগোষ্টির বিরুদ্ধে মুখোমুখি হোলে ঐক্য শতকরা একশো বার জয়ী হবে, যদিও তারা সংখ্যায় তাদের চেয়ে শতগুণ বেশীও হয়। এই সত্য যেমন হাজার বছর আগে প্রযোজ্য ছিলো, বর্তমানেও প্রযোজ্য হবে এবং অনাগত ভবিষ্যতের হাজার বছর পরেও প্রযোজ্য হবে। এই মহাসত্য, চিরন্তন সত্যকে আশা কোরি কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। এমনি করে আল্লাহ প্রদত্ত বিধানগুলির প্রত্যেকটি বিধান আল্লাহ তৈরী করেছেন প্রাকৃতিক নিয়মের উপর ভিত্তি করে।
অর্থনৈতিক ব্যপারে আল্লাহ তাঁর বিধানে বার বার মানুষকে খরচ করার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন।
দান খয়রাত, গরীব মিসকিনকে দান, মুসাফির, ঋণগ্রস্থকে ঋণ থেকে মুক্তি, যাকাত প্রদান ইত্যাদি নানাভাবে শুধু খরচ করার তাগিদ দিয়েছেন। অর্থ জমা করার ব্যাপারে কোন ধরণের বক্তব্য পাওয়া যায় না। অর্থ জমা করার সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক হোচ্ছে জমানো অর্থ থেকে জাতি কোনভাবে উপকৃত হোতে পারে না। অপরদিকে একটি মাত্র টাকাও যদি খরচের মাধ্যমে দিনে একশো জন লোকের হাত বদল হয় তবে একশো জন লোক তা থেকে উপকৃত হবে। এই অবস্থায় সম্পদ সর্বত্র ছড়িয়ে পোড়বে, সবাই এই অর্থ থেকে লাভবান হবে।
অপরদিকে পুঁজিবাদী সুদভিত্তিক অর্থনীতিতে সম্পদশালী ব্যক্তির অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে শুধুমাত্র ব্যক্তিই লাভবান হবে। একপর্যায়ে সমস্ত সম্পদ পুজিবাদী কয়েকজন লোকের হাতে জমা হবে, বাকী মানুষ পুজি হারিয়ে নি:স্ব হয়ে পোড়বে। সৃষ্টি হবে সম্পদের ভারসাম্যহীনতা।
প্রাকৃতিক নিয়মের উপর ভিত্তি করা রসুলাল্লাহর উপর আল্লাহ প্রদত্ত এই দীন, এই জীবন বিধান যখন অর্ধ দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো তখন এর জনগোষ্টি কি রকম অর্থনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় নিরাপত্তা লাভ করেছিলো তা ইতিহাস। মানুষ সোনা রূপার দোকান খোলা রেখে চোলে যেতো, কোন চুরির ভয় ছিলো না, অর্থনৈতিকভাবে এমন সক্ষমতা অর্জন করেছিলো যে যাকাতের টাকা হাতে নিয়ে তারা ঘুরতো দান করার জন্য, যাকাত নেওয়ার লোক খুজে পাওয়া যেতো না।
ধর্মীয় স্বাধীনতার এমন এমন নজীর স্থাপিত হয়েছিলো যে অন্য ধর্মের লোক তাতে মুগ্ধ হয়ে স্বেচ্ছায় এই দীনে প্রবেশ করেছে। বাকস্বাধীনতার এমন চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে যে অর্ধদুনিয়া যার অঙ্গুলি হেলনে উঠতো আর বোসতো, যার একটি হুকুমে সহস্র জীবন যাওয়া বা থাকার অবস্থা হোতো, সেই প্রতাপশালী খলিফা ওমর (র) প্রকাশ্য জনসমক্ষে, মোসলেমদের সাপ্তাহিক সমাবেশ, জুমআর দিনে সাধারণ একজন নাগরিক দ্বারা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিলেন, তাও যেই সেইভাবে নয়, রীতিমত জামার কলার চেপে ধোরে। এতে সেই ব্যক্তি কোন প্রকার বৈরী আচরণ পেয়েছেন বোলে কোন প্রমাণ নাই, বরং তিনি প্রসংসিত হয়েছিলেন। এই অনুপম দৃষ্টান্ত পৃথিবীর ইতিহাসে সম্ভবত আর নেই। লেখার কলবর বৃদ্ধি হয়ে যাবার আশংকায় এ ব্যাপারে আর বিস্তারিত আলোচনায় গেলাম না।
তথ্যাভিজ্ঞ (যওি তথ্যাভিজ্ঞ লোকই খুব কম) লোকেদের, যারা ভাসা ভাসাভাবেও এ জাতির ইতিহাস পড়েছেন তাদের বলতে হবে না যে এ জাতি জ্ঞানে বিজ্ঞানে, শিক্ষাদীক্ষায়, অর্থনীতি, নতুন নতুন আবিষ্কারে, গবেষণায়, সামরিকভাবে এক কথায় তারা এমন পর্যায়ে পৌছেছিলো যে তারা সর্বদিক দিয়ে পৃথিবীর শিক্ষকের আসনে বোসে গিয়েছিলো, যদিও তারা এসলামপূর্ব মাত্র কিছুকাল আগেও ছিলো আরবের সবচেয়ে অবহেলিত, দরিদ্র, হানাহানি, যুদ্ধ-বিগ্রহ ইত্যাদিতে লিপ্ত সম্ভবত: তৎকালীন দুনিয়ার সর্বনিকৃষ্ট জাতি। তাদের জীবন যাত্রা এমন পর্যায়ে পৌছেছিলে যে জীবন জীবিকা নিয়ে তাদের কোন রকমের চিন্তা করতে হোতো না। জ্ঞানের অন্বেষায়, অভিযানে, নতুন নতুন আবিষ্কারের তাড়নায় প্রায় সারা দুনিয়ায় তারা ছড়িয়ে পড়েছিলেন। পর্যটনের উদ্দেশ্যে তারা যখন দুনিয়া চোষে বেড়াতেন, তখন তাদের জন্য এই রাষ্ট্রের জনগণ এবং রাষ্ট্র এমন সব ব্যবস্থা করে রেখেছিলো যে তাদের থাকা খাওয়া ইত্যাদির কোন সমস্যাই হোতো না। অজানা অচেনা এই লোকদের তারা অতিথি হিসাবে আপ্যায়ন করতে।
অনাবিল শান্তি আর নিরাপত্তা বিরাজ করতো সর্বত্র।
এই জাতির শিক্ষক, মানবজাতির মুকুটমনি, সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হযরত মোহাম্মদ (স) আল্লাহর কাছ থেকে আনীত দীনকে সারা দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পেয়েছিলেন এবং তাঁর অবর্তমানে তাঁর অনুসারীদের উপর সেই দায়িত্ব বর্তেছিলো। সেই উম্মাহ তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছে, কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো এই যে, মাত্র ৬০/৭০ বছর পর্যন্ত সংগ্রামের মাধ্যমে অর্ধদুনিয়ায় এই দীন কায়েমের পর তারা এই সংগ্রাম ত্যাগ করেন। যদি তারা এই সংগ্রাম ত্যাগ না করতেন, সারা দুনিয়ায় এই দীনকে কায়েম করতেন, তখন মানব রচিত বিধানগুলির স্রষ্টাদের চিন্তা গবেষণা করে অন্য সব জীবনবিধান তৈরী করার প্রয়োজন হোতো না। এই জীবন বিধান অনুসরণ করার ফলে তারা পৃথিবীর বাকী আয়ুষ্কালের জন্য অনাবিল শান্তিতে বসবাস করতে পারতো।
তবে এনশা’আল্লাহ খুব শিঘঘিরই সারা দুনিয়ায় আবার তার এই দীন পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠা পাবে, কেননা আল্লাহ তা’আলা মানবজাতির জন্য সর্বশেষ প্রেরিত হযরত মোহাম্মদ (স) কে উপাধি দিয়েছেন ‘রহমাতুল্লিল আলামিন’, অর্থাৎ সমগ্র মানবজাতির উপর রহমত। ‘সমগ্র দুনিয়ায় রহমত’ উপাধি তখনি সার্থক হবে যখন আল্লাহর দেয়া বিধান সারা দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবজাতির মধ্যকার সকল প্রকার অন্যায় অত্যাচার, অবিচার, মারামারি, কাটাকাটি , যুদ্ধ-বিগ্রহ দূর হয়ে অনাবিল শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে, পৃথিবীর সব সীমানা উঠে যাবে, সমস্ত মানব জাতি একটি মাত্র জাতিতে পরিণত হবে, সাদা কালোর কোন ব্যবধান থাকবে না, কে পশ্চিমের, কে পূর্বের, কে দক্ষিণের, কে উত্তরের এই প্রশ্ন থাকবে না। পৃথিবীর এক প্রান্তের মানুষ কোন ধরণের অভাব বোধ কোরলে অন্য প্রান্তের মানুষ তাদের সহযোগিতায় ঝাপিয়ে পোড়বে, সারা মানবজাতি হবে একটি জাতি, সবাই ভাই ভাই। পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের মানুষ যেখানে খুশি ভ্রমন করতে পারবে, যেখানে খুশি বসবাস করতে পারবে, যে বৈধ খাবার খেতে মন চায় তাই তারা খেতে পারবে। বাক স্বাধীনতা, লেখার স্বাধীনতা এমন দেয়া হবে যে তারা যা খুশি বলতে পারবে, লিখতে পারবে, শুধুমাত্র মিথ্যা ছাড়া।
যে কোন সঙ্গীত গাইতে পারবে, যে কোন নৃত্য করতে পারবে-শুধুমাত্র অশ্লীলতা ছাড়া, যে কোন পোশাক পড়তে পারবে শুধুমাত্র সীমালংঘন ছাড়া, যার যে পেশা খুশি সে পেশা গ্রহণ করতে পারবে। মানুষ ফিরে পাবে তার কাঙ্খিত, চির আরাধ্য মুক্তি, স্বাধীনতা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।