রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছিলেন একান্তে, এবার প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলে কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর ছেলে রাহুল গান্ধী বুঝিয়ে দিলেন, দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের এমপি-এমএলএ রেখে দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের আনা অধ্যাদেশ প্রত্যাহূত হতে চলেছে। আজ শুক্রবার নাটকীয়ভাবে প্রেসক্লাবে হাজির হয়ে রাহুল বললেন, ‘সরকারের অধ্যাদেশ আনার সিদ্ধান্ত একেবারেই অর্থহীন। এটা ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া দরকার। ’
রাজ্যসভায় ওঠা এ-সংক্রান্ত বিলটি যখন স্থায়ী কমিটির বিবেচনাধীন, তখন কেন তড়িঘড়ি সরকার এই অধ্যাদেশ আনতে গেল—কয়েক দিন ধরেই দেশজুড়ে সেই প্রশ্ন। প্রধান বিরোধী দল বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে অধ্যাদেশে সই না করার অনুরোধ জানান।
রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় সঙ্গে সঙ্গে আইনমন্ত্রী কপিল সিবাল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্ধে ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী কমলনাথকে ডেকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চান। আপত্তি উঠেছে খোদ কংগ্রেসের মধ্য থেকেও। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মিলিন্দ দেওরা, দলের সাধারণ সম্পাদক দিগ্বিজয় সিং, প্রিয়া দত্তরা অধ্যাদেশের বিরোধিতায় সরব হন। আর এ প্রেক্ষাপটেই নাটকীয়ভাবে বোমা ফাটালেন রাহুল গান্ধী। একেবারে সরাসরি চলে এলেন দিল্লি প্রেসক্লাবে এবং বিরোধিতা করলেন তাঁরই দলের সরকারের সিদ্ধান্তের।
আজ শুক্রবার দুপুরে প্রেসক্লাবে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান অজয় মাকেনের একটি সংবাদ সম্মেলন ছিল। অধ্যাদেশ নিয়ে নানা প্রশ্নে অজয় মাকেন যখন জেরবার, ঠিক তখনই তাঁর মুঠোফোনে রাহুলের ফোন আসে। অনুষ্ঠানের বিষয় শোনামাত্র রাহুল প্রেসক্লাবে পৌঁছান ও অধ্যাদেশ সম্পর্কে নিজের মত স্পষ্ট করে দেন।
রাহুল বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ অর্থহীন। সরকার যা করছে, তা মানা যায় না।
আমি ব্যক্তিগতভাবে এই অধ্যাদেশকে কমপ্লিট ননসেন্স মনে করি। অধ্যাদেশটা ছিঁড়ে উড়িয়ে দেওয়া উচিত। ’ তিনি বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দলই অধ্যাদেশ আনে। এটা একটা অভ্যাস হয়ে গেছে। সময় এসেছে এসব অর্থহীন বিষয়ে অধ্যাদেশ আনা বন্ধ করার।
দেশ থেকে দুর্নীতি যদি বন্ধ করতে হয়, এ ধরনের সমঝোতাও বন্ধ করতে হবে। ’
যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে ভোরবেলায় ঘুম থেকে তুলে রাহুলের মন্তব্যের খবরটি জানানো হয়। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মনীশ তিওয়ারি বলেছেন, সরকারের সদিচ্ছার কোনো অভাব ছিল না। কিন্তু সেসব ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠেছে এই প্রশ্ন যে, রাহুলের এ আপত্তির পর অধ্যাদেশের হাল কী হবে?
বিদেশ সফররত প্রধানমন্ত্রীর পক্ষেও রাহুলের মন্তব্য সম্মানজনক হলো না। ২৪ ঘণ্টা পরই নওয়াজ শরিফের সঙ্গে তিনি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসতে চলেছেন।
এর আগেই তাঁর অধিষ্ঠানকে এভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিলেন তাঁরই দলের সহসভাপতি। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, এর পরে মনমোহন সিং দেশে ফিরে ইস্তফা দিতে পারেন কি না, কিংবা আইনমন্ত্রী কপিল সিবালকে বরখাস্ত হতে হবে কি না।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।