আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জগৎমল্ল ও ঊনসত্তর পাড়ায় এখনো সাকার ‘ভুত’

মঙ্গলবার রায়ের পর হিন্দু অধ্যুষিত ওই এলাকা ঘুরে সবার মুখে আতঙ্কের ছাপ দেখা গেছে। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে অনেকে মুখ খুলতেই চাননি; যারা কথা বলেছেন, তারাও পরিচয় প্রকাশে রাজি হননি।
চট্টগ্রামের রাউজানে সালাউদ্দিন কাদেরের নৃশংসতার সবচেয়ে বেশি প্রকাশ ঘটেছিল একাত্তরে। পাকিস্তান আমলে তার বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী ছিলেন ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি, তবে ‘৭০ এর নির্বাচনে হারতে হয়েছিল তাকে।
স্বাধীনতার পরও ওই এলাকা থেকে সালাউদ্দিন কাদের নিজেসহ তার পরিবারের সদস্যরা সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছেন একাধিকবার।

প্রভাবশালী এই পরিবার ওই এলাকার হিন্দুদের ভোট কেন্দ্রেও যেতে দিত না বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঊনসত্তর পাড়ায় একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এক দিনে প্রায় শতাধিক হিন্দুকে হত্যা করা হয়। ওই অভিযোগে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে সালাউদ্দিন কাদেরের ফাঁসির আদেশ হয়েছে।
জগৎমল্ল পাড়ায় এক বাড়ির আঙিনায় ৩২ জন হিন্দুকে জড়ো করে হত্যার দায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্যকে ২০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর ওই শহীদ পরিবারের সন্তানরাও নিজেদের পরিচয় গোপন করছেন সংবাদকর্মীদের কাছে।

সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন অনেকে।
একাত্তরে নিহত নূতন চন্দ্র সিংহের কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ে গিয়ে দেখা যায়, মূল ফটক বন্ধ।
সেখানকার নিরাপত্তারক্ষীরা জানান, বাড়িতে কেউ নেই।
সংবাদকর্মীদের ওই বাড়িতে ঢুকতে দেয়া হয়নি। যে নিরাপত্তা রক্ষী কথা বলেছেন তিনিও নিজের নাম প্রকাশ করেননি।


একাত্তরে প্রার্থনারত নূতন চন্দ্রকে টেনে হিঁচড়ে এনে গুলি চালিয়ে হত্যা করেন সালাউদ্দিন কাদের। এই হত্যাকাণ্ডের দায়েও তার মৃত্যুদণ্ড হয়েছে।
দুপুরে জগৎমল্ল পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, গ্রামটির অধিকাংশ পুরুষ সদস্যই এলাকাছাড়া। হাতে গোনা কয়েকজন বয়োবৃদ্ধ পুরুষ রয়েছেন।
এই এলাকায় কয়েকটি বাড়িতে গিয়ে একাত্তরের ঘটনা জানতে চাইলে তারা সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে দরজা বন্ধ করে দেন।


স্থানীয় কয়েকজন বলেন, স্বাধীনতার পরও বিভিন্ন সময় এই এলাকার বাসিন্দারা হুমকি ও হামলার মুখে পড়েছিলেন। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে তারা এখন মুখ খুলতে চাইছেন না।
অনেক অনুনয় বিনয়ের পর কথা বলেন ঊনসত্তর পাড়ার বাসিন্দা অজিত মহাজন। একাত্তরে শহীদ হন অজিতের বাবা যোগেশ চন্দ্র মহাজন ও ভাই রঞ্জিত মহাজন।
নিজের পরিচয় জানালেও কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন অজিত।


তিনি বলেন, “আমি কোনো রকমে দোকান করে সংসার চালাই। আজ পুলিশ আছে। কাল তো থাকবে না। তখন আমাদের কে দেখবে?”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহীদ পরিবারের একাধিক ব্যক্তি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই এলাকায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের অনেক ‘গুপ্তচর’ ঘোরাফেরা করছে।
“সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার তথ্যে পেলে পরে হামলা হতে পারে।

তখন কে নিরাপত্তা দেবে?” নিরবতার পক্ষে যুক্তি দেখান একজন।   

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.