একজন অর্থনীতিবিদ রেমিটেন্সের হার কমে যাওয়ার পেছেনে হুণ্ডিকে দায়ী করেছেন।
গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি রেমিটেন্স এসেছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া হিসেবে মতে, সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে ১০২ কোটি ৬০ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। অগাষ্টে এসেছিল ১০০ কোটি ৫৭ লাখ ডলার।
২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল ১২৩ কোটি ৮৫ লাখ ডলার।
হুণ্ডির মাধ্যমে অর্থ প্রবাহ বেশি আসায় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স কমে গেছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক জায়েদ বখত।
বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “গত বছরের এ সময়ে ডলারের বিপরীতে টাকার মান বেশ খানিকটা বেড়ে গিয়েছিল। সে কারণে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে বেশি রেমিটেন্স পাঠানোয় এর প্রবাহ বেশ উর্ধ্বমুখী ছিল।
“কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে টাকার মান বেশ পড়ে গেছে। হুণ্ডির মাধ্যমে পাঠালে পরিবার-পরিজনের সদস্যরা বেশি টাকা পাচ্ছে; সে কারণে অনেক প্রবাসী এখন ব্যাংকিং চ্যানেলে না পাঠিয়ে হুণ্ডির মাধ্যমে পাঠাচ্ছে বলে আমার কাছে মনে হচ্ছে।
“তবে দুই ঈদের মাঝখানে হওয়ায় সেপ্টেম্বরে রেমিটেন্স কম এসেছে। প্রতি বছরই এমন হয়। বাকি মাসগুলোতে রেমিটেন্স বাড়বে আশা করা যায়,” বলেন জায়েদ বখত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ এন্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোরবানির ঈদকে সামনে প্রবাসীরা বেশি রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন। এখনও ঈদের কয়েক দিন বাকি আছে।
এ কয়দিনে আরও বেশি রেমিটেন্স দেশে আসবে। ”
ফলে অক্টোবরে অন্য যে কোনো মাসের চেয়ে বেশি রেমিটেন্স দেশে আসবে বলে প্রত্যাশা ছাইদুর রহমানের।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিটেন্স সংক্রান্ত যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ৩২৭ কোটি ৩ লাখ ডলারের রেমিটেন্স দেশে এসেছে।
২০১২-১৩ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এসেছিল ৩৫৫ কোটি ৮৬ লাখ ডলার।
২০১১-১২ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে এসেছিল ২৯৭ কোটি ২৮ লাখ ডলার।
আন্ত:ব্যাংক মুদ্রাবাজারে বুধবার প্রতি ডলার ৭৭ টাকা ৭৫ পয়সায় বিক্রি হয়েছে। গত চার মাসের বেশি সময় ধরে ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার একই জায়গায় স্থির রয়েছে।
গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে প্রতি ডলার ৮২ টাকা থেকে ৮৫ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে।
রেমিটেন্স প্রবাহ কমলেও বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় ভাল অবস্থায় রয়েছে। বুধবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৬ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার।
যা দিয়ে সাড়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ অর্থ রিজার্ভে মজুত থাকতে হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রেমিটেন্স সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ১ হাজার ৪৬০ কোটি ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১২ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি।
২০১১-১২ অর্থবছরে ১ হাজার ৮৪০ কোটি ডলারের রেমিটেন্স দেশে আসে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।