আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা চাকুরী জীবনের 10(দশ) বছর পূর্ণ হলো আজ, আগামী কাল 11 (এগারতম) বছরের যাত্রা শুরু করবো

২০০৩ সাল। ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করে মাত্র বাসায় এসেছি। বাসায় এসে দেখি বিছানার উপর একটি হলুদ খাম। খামটি খুলতেই দেখি আমার চাকুরির নিয়োগ পত্র। নিয়োগ পত্রটি হাতে পেয়ে খুব বেশি খুশি হয়েছি কিনা তা জানা নেই।

তবে কিছুক্ষণের মধ্যে খুব চিন্তিত হয়ে পড়তে হয়েছে। কারণ চাকুরীতে যোগদান করা না করা সম্পূর্ণ আমার ব্যাপার। এ বিষয়ে কেউ আমাকে কোন সিদ্ধান্ত দিতে রাজি নয়। চাকুরীটি আমার হয়েছি যশোরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে, ট্রেড ইন্সট্রাকটর পদে। ২য় শ্রেণীর বেতন স্কেল।

আমার বাড়ি থেকে চাকুরীর স্থান অনেক দূরে ছিল। তাছাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চাকুরীর বেতন প্রাপ্তি নিয়ে কোন অভিজ্ঞতা ছিল না। অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম যে, আমি চাকুরীতে যোগদান করবো। ১৫ জানুয়ারি ২০০৩। কনকনে শীতের সকাল ছিল।

ঐ দিনই ছিল আমার কর্মজীবনের প্রথম দিন। শীতের তীব্রতা তখন এতই ছিল যে, চাকুরীর যোগদান পত্রটি ঠিকভাবে লিখতে পারছিলাম না, শীতের কারণে শুধু হাত কাপতো। ২ বার পৃষ্ঠা নষ্ট করার পর অবশেষে যেভাবে লিখেছি সেভাবেই জমা দিলাম। এরপর হল আমার কর্মজীবনের যাত্রা শুরু। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন প্রধান শিক্ষক।

এ সময় অনেকে আমার বয়স জেনে হতবাক হলেন। মাত্র ১৯ বছর বয়সে আমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। তা ও আবার বালিকা বিদ্যালয়ের। এরপর চাকুরী জীবনের অভিজ্ঞতা বড়ই তিক্ত। আগেই বলেছিলাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বেতন প্রাপ্তি নিয়ে আমার কোন অভিজ্ঞতা ছিল না।

দীর্ঘ ১৬ মাস বেতন বিহীন আমাকে চাকুরী করতে হয়েছে। অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা এর মাঝে আমার হয়েছে। সরকারী অফিসে ঘুষ লেন-দেন কিভাবে হয় তা বুঝেছি। যদিও চাকুরীটি আমি কোন প্রকার ঘুষ লেন-দেন ছাড়াই পেয়েছি। দূর্নীতির এই যুগে বর্তমানের এই চাকুরীটাও আমি ঘুষ ছাড়াই পেয়েছি।

যাই হোক এরপর সাড়ে তিন বছর ঐ প্রতিষ্ঠানে সুনাম ও দক্ষতার সাথে চাকুরী করি। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক, শিক্ষার্থী সকলের কাছে ছিলাম অত্যন্ত জনপ্রিয়। ঐ অঞ্চলে আমার অনেক ভাল বন্ধু, শুভাকাঙ্খী পেয়েছি, যাদের সাথে আজ নিবিড় সম্পর্ক বজায় রয়েছে। গতকালও একজন ফোন করে বেড়াতে যাওয়ার জন্য খুব অনুরোধ করেছে। সাড়ে তিন বছর চাকুরী করার পর বর্তমান চাকুরীটিতে যোগদান করি।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করে আজ ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কর্মরত আছি। ১০ বছরের চাকুরী জীবনে সরকারি ভাবে মালেয়শিয়া ও ফিলিফাইন যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। হয়েছে বিচিত্র অভিজ্ঞতা। এই সব অভিজ্ঞতাকে সাথে নিয়ে ১১তম বছরের পথ চলা শুর হবে আগামী কাল ১৫ জানুয়ারি ২০১৩ থেকে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।