সোমবার রাত পৌনে ৭টায় এ অভিযান শুরু হতে দেখেছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক উত্তম সেনগুপ্ত।
ওই মাদ্রাসার ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে বিস্ফোরণের পর বিকাল থেকেই লালখান বাজার মাদ্রাসা নামে পরিচিত ওই মাদ্রাসাটি ঘিরে রাখে বিপুল সংখ্যক পুলিশ।
এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সেখানে আরো পুলিশ আসে। তারপর শুরু হয় তল্লাশি।
তল্লাশি শুরুর পর মাদ্রাসা থেকে কাউকে বের হতে দিচ্ছে না পুলিশ।
এদিকে অভিযান শুরুর পর লালখান বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ সমর্থকরা মাইক নিয়ে মিছিল শুরু করেছে। তারা হেফাজতবিরোধী স্লোগান দিচ্ছে।
এর আগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. শহীদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ছাত্রাবাস থেকে তিনটি তাজা হ্যান্ড গ্রেনেড ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
তারও আগে বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম জানান, ওই মাদ্রাসায় বড় ধরনের বিস্ফোরকের মজুদ রয়েছে।
সোমবার সকালে লালখান বাজার মাদ্রাসার দারুল ইত্তা নামের একটি চারতলা ছাত্রবাসের তৃতীয় তলার দুই নম্বর কক্ষে বিস্ফোরণে পাঁচ জন আহত হয়।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সকালে বিস্ফোরণের পর জানায় কম্পিউটারের আইপিএস বা ইউপিএস বিস্ফোরণে এ ঘটনা ঘটে।
সন্ধ্যায় এডিসি শহীদুল্লাহ বলেন, “বোমা তৈরির সময়ই বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করছি। উদ্ধার করা তিনটি তাজা হ্যান্ড গ্রেনেড ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম ছাড়াও এখানে আরও অনেক বোমা তৈরির সরঞ্জাম আছে বলে আমাদের ধারণা। ”
বিস্ফোরণে পাঁচ জন আহত হওয়ার পর দুপুরে নগরীর হালিশহর এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে আহত দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে এডিসি শহীদুল্লাহ বলেন, এদের মধ্যে নুরুন্নবী নামের একজন পলিটেকনিক ইন্সিটিউটের শিক্ষার্থী।
বিস্ফোরণের পর মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি ইজাহার পুলিশকে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছিল কি না- এ প্রশ্নের জবাবে এডিসি শহীদুল্লাহ বলেন, তদন্ত শেষে এ বিষয়ে জানাব।
বিস্ফোরণে পর মুফতি ইজাহার সাংবাদিকদের বলেন, ছাত্রাবাসের ওই কক্ষে থাকা ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের ইউপিএস বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে।
পাশের কক্ষটি হারুন ইজাহারের
দারুল ইত্তা ভবনের তৃতীয় তলায় যে কক্ষে বিস্ফোরণ ঘটে তার পাশের কক্ষটি মুফতি ইজাহারের ছেলে আরেক হেফাজত নেতা মুফতি হারুন ইজাহারের বলে জানিয়েছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষার্থী।
এক শিক্ষার্থী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছাত্রাবাসটি দেখাশোনার দায়িত্বও হারুন ইজাহারের। এখানে শুধু উঁচু ক্লাশের ৫০জন ছাত্র থাকে।
“তবে বাইরের বিভিন্ন মাদ্রাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এসে এ ভবনে থাকে। তারা মাদ্রাসা ছাত্রদের বন্ধু পরিচয়ে সেখানে থাকে। ”
ওই মাদ্রাসার ভেতর দরজগাহ নামের আরেকটি দ্বিতল ছাত্রাবাস আছে। এ ছাত্রাবাসে বসবাসকারী শিক্ষার্র্থী সংখ্যা ২৫০ জন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী জানায়, বিস্ফোরণের পর ওই কক্ষ থেকে বেরিয়ে একজনকে দৌড়ে যেতে দেখেছেন তিনি।
তার মুখমণ্ডল ঝলসানো এবং একটি হাতের কবজি পর্যন্ত প্রায় বিচ্ছিন্ন ছিল।
জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ২০১০ সালের ১৩ ডিসেম্বর মুফতি ইজাহারকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।