কোরবানির মাংসের দৃশ্যমান চর্বি মাংস কাটার সময়ই বাদ দেওয়া যায়। রান্নার আগে মাংসকে আগুনে ঝলসে নিলেও কিছু চর্বি কমানো যায়। আবার মাংসকে হলুদ-লবণ দিয়ে সিদ্ধ করে ফ্রিজে ঠাণ্ডা করলেও কিছু চর্বি মাংস থেকে বেরিয়ে জমাট অবস্থায় থাকবে। তখন বাড়তি চর্বিটুকু চামচ দিয়ে অাঁচড়ে বাদ দেওয়া সহজ। আবার মাংসকে র্যাক বা ঝাঁঝড়া পাত্রে রেখে অন্য একটি পাত্রের উপর বসিয়ে চুলায় দিলে নিচের পাত্রটিতে মাংসের ঝরে যাওয়া চর্বি জমা হবে।
খাবারের সঙ্গে সালাদ রাখতে হবে।
সালাদ এবং শাক-সবজি খাবারের চর্বিকে শরীরে শোষিত হতে বাধা দেয়। বিজ্ঞানীদের মতে, প্রতিদিন ১০ গ্রামের মতো দ্রবণীয় অাঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করলে কোলেস্টেরলের পরিমাণ ৫-১০ শতাংশ কমতে পারে। রেডমিট বা লাল মাংসের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে শুনতে শুনতে অনেকেরই মনে হতে পারে লাল মাংস তথা গরু-খাসির মাংসের বুঝি কোনো ভালো গুণই নেই। আসলে রেডমিট সম্পর্কে সতর্কবাণীর প্রায় পুরোটাই বয়স্কদের জন্য। যাদের বয়স ৩০-এর নিচে, রক্তে কোলেস্টেরল মাত্রা ঠিক আছে, মেদাধিক্য নেই, ওজনও স্বাভাবিক তাদের জন্য লাল মাংসের এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ঠিক হবে না।
রেডমিট বা লাল মাংস অনেকেই মজা করে খান। কিন্তু অবাক ব্যাপার হচ্ছে, কেউ কেউ গরুর মাংসকে অস্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসেবে ভাবতে শুরু করেছেন। এর কারণ রেডমিটের পক্ষ এবং বিপক্ষ- দুই দলই চরম পক্ষপাতিত্বের বিবেচনায় রেডমিটকে বিচার করেছেন। আসলে কৃশকায় গরুর মাংসকে স্বাস্থ্যকরই বলা চলে। কারণ তাতে কোলেস্টেরল থাকে কম।
এ ধরনের গরুর সাধারণ মাংস দৈনিক ৫০-১০০ গ্রাম গ্রহণে খুব একটা অসুবিধা নেই। তবে কথা হচ্ছে, হৃদরোগ কিংবা ক্যান্সার ঝুঁকি থাকলে রেডমিট এড়িয়ে চলা উচিত।
আবার এ কথাও ধ্রুব সত্য, গরুর মাংস বা রেডমিট হচ্ছে প্রাণীজ প্রোটিন, আয়রন, জিঙ্ক, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, সেলেনিয়াম এবং ভিটামিন বি-১২-এর অন্যতম উৎস। এ গরুর মাংসই হতে পারে স্বাস্থ্যকর খাবার যদি গরুর মাংসের চর্বি বাদ দিয়ে ছোট ছোট টুকরা করে খাওয়া যায়। পাশাপাশি এ রেডমিটই আবার হৃদরোগ এবং কোনো কোনো ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
কিন্তু কৃশকায় গরুর মাংস কিংবা চর্বি বাদ দেওয়া গরুর মাংসে এ সম্পৃক্ত চর্বি খুবই কম পরিমাণে থাকার জন্য ঝুঁকিও কম। গবেষণায় দেখা গেছে, কৃশকায় কম চর্বিসম্পন্ন গরুর মাংসের কিছু এমিনো এসিড, টরাইন এবং আর্জিনাইন উল্টা সিসটোলিক (উপরের) রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। কম চর্বিযুক্ত গরুর মাংসের চেয়ে বরং অতিরিক্ত ভাত খাওয়া বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কোরবানির পোলাও-মাংসের আয়োজনে কোলেস্টেরল যাতে শরীরে ঢুকতে না পারে আর খাবার খেয়ে কোষ্ঠকাঠিন্যও যাতে না হয় সে জন্য নজর দিন সালাদের প্রতি। শসা, টমেটো, লেবু সহযোগে এক বাটি সালাদ যেন প্রতিবারের খাবারে থাকে।
মাংস খাওয়ার পাশাপাশি সালাদ গ্রহণ করা উচিত। মাংসের কোলেস্টেরল যাতে শরীরে শোষিত হতে না পারে সেই কাজটিও করে দই। তাই ঈদের যেকোনো খাবারের পর দই খেতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।