প্রত্নতত্ত্ববিদরা মাটি খুঁড়ে মহেঞ্জোদারো, হরপ্পা নগরী, মহাস্থানগড় আবিষ্কার করেছিলেন। আমার মনে হয় আজ থেকে শত বা হাজার বছর পর প্রত্নতত্ত্ববিদরা বাংলাদেশের মাটি খুঁড়লে অসংখ্য ভিত্তিপ্রস্তর পাবেন। তবে পাবেন না শুধু বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর। কারণ ওটা রিমোট কন্ট্রোলে হয়ে গেছে। গত সোমবার চ্যানেল আইর টকশো 'আজকের সংবাদপত্র'-এ প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মূসা এ কথা বলেন।
মীর মাশরুর জামানের উপস্থাপনায় তিনি বলেন, এখন তো নির্বাচন নিয়ে জনগণের দুশ্চিন্তারও কারণ নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটা কাজে আমি সমাধান পেয়ে গেছি। অনেকে মনে করবেন আমি বোধ হয় পরিহাস করছি। তবে সত্যি বলছি, নির্বাচন নিয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হওয়ার কারণ নেই। রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র কীভাবে করতে হয় প্রধানমন্ত্রী দেখিয়ে দিয়েছেন।
রিমোট কন্ট্রোলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করলেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী তার নিজের এলাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করতে যাওয়ার সময় পেলেন না! এতে অনেকেই অবাক হয়েছেন। গেলে অন্তত আরেকটা ভিত্তিপ্রস্তর হতো। তবে পরিষ্কার হয়ে গেছে নির্বাচন নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। কারণ ওটা হবে রিমোট কন্ট্রোলে।
জীবনে বহু ধরনের নির্বাচন দেখেছি। কারচুপি দেখেছি, একদলীয় নির্বাচন দেখেছি। এখন শেষ ইচ্ছা রিমোট কন্ট্রোলে কীভাবে নির্বাচন হয় সেটা দেখা। কলামিস্ট মূসা বলেন, আমরা কত উদার! এখন পর্যন্ত ভারতের কাছ থেকে তিস্তার পানি পেলাম না। ফেলানীর বিচার নিয়ে তামাশা করা হলো।
আমার নদীর বুক চিরে রাস্তা করে ভারতবর্ষ একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে মালামাল নেওয়ার ব্যবস্থা করল। আর সুন্দরবন ধ্বংস হবে জেনেও রিমোট কন্ট্রোলে কুষ্টিয়া বসে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করলাম। অথচ বিদ্যুৎকেন্দ্রটা ভারতে করার কথা ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার লোকজন নিয়ে এমন খেদানি দিয়েছে যে সেখানে করতে পারল না। এখন আমার সুন্দরবন ধ্বংস করতে এখানে করছে।
এবিএম মূসা বলেন, নির্বাচন নিয়ে গত দুই বছর ধরে নানা বিতর্ক হচ্ছে। মানুষের মাঝে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচন হবে কি হবে না সেটা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। একজন বলছেন, নির্বাচন হবেই, করেই ছাড়ব। আরেকজন বলছেন, হতেই দেব না, ঠেকাবোই।
সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তায় আছে সাধারণ মানুষ। এই যে করবই আর ঠেকাবোই_ এ দুটোর মধ্যে পড়ে পাটা-পুতোর ঘষাঘষিতে জনগণের নাজেহাল অবস্থা। তিনি রসিকতা করে বলেন, আমি বলি নির্বাচন নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তার দরকার নেই। সবাই নাকে তেল দিয়ে ঘুমান। রিমোট কন্ট্রোলে নির্বাচন হয়ে যাবে।
ভোটকেন্দ্রে যাওয়ারই দরকার নেই। ঘরে বসে চাবি টিপলেই কোন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ কত পেয়েছে আর বিএনপি কত পেয়েছে তা দেখা যাবে। তবে বিষয়টা ভালোভাবে জানতে স্নেহভাজন প্রযুক্তিবিদ মোস্তফা জব্বারের সঙ্গে বসতে হবে। রিমোট কন্ট্রোলে কীভাবে নির্বাচন করা যায় বা এটা ঠেকানোর কোনো ডিজিটাল পদ্ধতি আছে কিনা এটা তার থেকে জানতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি ঘরে ঘরে আন্দোলন গড়ে তুলে নির্বাচন ঠেকাতে চাইছে।
রিমোট কন্ট্রোলে নির্বাচন হলে ঠেকাবে কীভাবে? রিমোট কন্ট্রোলে নির্বাচন হলে তা রিমোট কন্ট্রোলেই ঠেকাতে হবে। ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলে কাজ হবে না। আন্দোলন করার সুযোগই পাবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।