সাবের হোসেন চৌধুরীর পক্ষ নির্বাচনে আসেনি। ২৩ জনের মধ্যে ১৯ জনই তাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। নির্বাচনের সব জৌলুশ ওখানেই শেষ! তার পরও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে আজ হবে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের বহুল আলোচিত নির্বাচন। যে নির্বাচন মূলত এসে ঠেকেছে দুই ক্রিকেটারের লড়াইয়ে।
নির্বাচনী লড়াইয়ে লড়ছেন আসলে তিন ক্রিকেটার।
তবে ক্যাটাগরি-১-এ নাঈমুর রহমানের লড়াইটা কোনো ক্রিকেটারের সঙ্গে নয়। ঢাকা বিভাগে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জামালপুরের কাউন্সিলর মির্জা জিল্লুর রহমান ও মুন্সিগঞ্জের কাউন্সিলর মনজুর কাদের। ক্রিকেটারদের আসল লড়াইটা তাই হবে ক্যাটাগরি-৩-এর নির্বাচনেই। এই শ্রেণীর একমাত্র পরিচালকের পদটি পেতে সম্মুখ সমরে দুই সাবেক অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন ও খালেদ মাহমুদ।
গাজী আশরাফ হোসেনের নির্বাচনী প্রস্তুতি বেশ গোছানো।
নির্বাচনী ইশতেহার ছেপে তাতে বিসিবির পরিচালক হিসেবে বিগত দিনের সাফল্য তুলে ধরেছেন। তার মধ্যে আছে জাতীয় ক্রিকেট লিগে খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি ও প্রাইজমানি বাড়ানো, জাতীয় লিগের পাশাপাশি আরেকটি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট আসর বিসিএল চালু করা, ১২০ ক্রিকেটারকে মাসিক বেতন ও বিমার আওতায় আনা ইত্যাদি। একাডেমির দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে তাঁর কর্মকাণ্ডের বর্ণনাও দিয়েছেন। সঙ্গে নির্বাচিত হলে ভবিষ্যতে কী করতে চান, গাজী আশরাফ সুনির্দিষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন সে রকম এক ডজন পরিকল্পনাও।
কয়েক দিন ধরে ভোটারদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী হয়ে উঠেছেন গাজী আশরাফ।
যদিও মুখে বললেন, ‘এখন তো এটা সিঙ্গেল উইকেট কম্পিটিশন হয়ে গেছে। দুজনই উইন উইন সিচুয়েশনে আছি। ’ ভোটারদের কিছু ক্ষোভ-অভিযোগের ব্যাপারেও তাঁকে সচেতন মনে হলো। আত্মপক্ষ সমর্থন করে সেসবের ব্যাখ্যা দিলেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক ও ম্যানেজার, ‘অনেকে বলছেন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলা বন্ধ করে দিয়েছি। বাস্তবে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সর্বশেষ সুযোগ পায় ২০০৪-০৫ মৌসুমে।
এরপর তা বন্ধ হয়ে গেলেও তখন তো আমি বোর্ডেই ছিলাম না!’ তিনি বরং দাবি করেছেন, ‘২০০৮-০৯ মৌসুমে দুটি সার্ভিসেস ও ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়েকে নিয়ে আমিই একটা পৃথক টুর্নামেন্টের উদ্যোগ নেই। যদিও টুর্নামেন্টটি এক মৌসুম হওয়ার পর বিভিন্ন যৌক্তিক কারণে আর হতে পারেনি। ’ নির্বাচিত হলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর টুর্নামেন্টের জন্য বিসিবি থেকে আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন গাজী আশরাফ।
বিসিবির নির্বাচনের অন্য সব প্রার্থীর তুলনায় ব্যতিক্রমই বলতে হবে তাঁকে। কয়েক মাস ধরে সবাই ‘নির্বাচন নির্বাচন’ করে মুখে ফেনা তুলে ফেললেও নির্বাচিত হলে দেশের ক্রিকেটের জন্য কে কী করবেন, সেসব বলার প্রয়োজন মনে করেননি কেউ।
গাজী আশরাফের প্রতিদ্বন্দ্বী খালেদ মাহমুদ অবশ্য তার পরও আশাবাদী, ‘সবার সঙ্গে কথা বলেছি, সবার সমর্থন চেয়েছি। আমাকে তাঁরা সমর্থন করছেনও। তার পরও ভোটে জেতা সহজ নয়। ভোটাররা যাঁকে যোগ্য মনে করবেন তাঁকেই ভোট দেবেন। ’ প্রতিপক্ষ গাজী আশরাফের প্রশংসাও ঝরেছে জাতীয় দলের সাবেক এই সহকারী কোচের কণ্ঠে, ‘লিপু ভাই (গাজী আশরাফ হোসেন) সব দিক দিয়েই আমার চেয়ে অভিজ্ঞ।
আমার ক্যাপ্টেন ছিলেন তিনি। আমাদের দুজনের উদ্দেশ্য একই। দুজনই ক্রিকেটের জন্য কিছু করতে চাই। ’
মোহাম্মদ আশরাফুলের জবানবন্দি অনুযায়ী ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগ আর বিপিএলে কোচিং করানোর জন্য বিসিবির অস্থায়ী কমিটি থেকে পদত্যাগের ঘটনা দুটি বিপক্ষে গেলেও খালেদ মাহমুদ অগ্রজ গাজী আশরাফকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাই ‘উপহার’ দেবেন বলে মনে হচ্ছে।
ক্যাটাগরি-৩-এ ভোট হবে ঢাকা বিভাগ থেকে দুজন ও রাজশাহী বিভাগ থেকে একজন পরিচালক নির্বাচনে।
রাজশাহী বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রাজশাহীর রাফিউস শামস (প্যাডি) ও পাবনার সাইফুল আলম (স্বপন)। ঢাকা বিভাগ থেকে নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে দারুণ আত্মবিশ্বাসী জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক, নির্বাচক ও বর্তমানে বিসিবির অস্থায়ী কমিটির সদস্য নাঈমুর রহমান, ‘সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সবাইকে খুব ইতিবাচক মনে হয়েছে আমার ব্যাপারে। খেলোয়াড়, অধিনায়ক এবং নির্বাচক হিসেবে ক্রিকেটকে কিছু দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এবার সুযোগ পেলে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও ক্রিকেটের সেবা করতে চাই।
’
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।