ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, সোমবার বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন কৈলাশে স্বামীর ঘরে। পিতৃগৃহ এই ধরণীতে তিনি আবার আসবেন এক বছর পর।
সোমবারই ছিল বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার শেষ দিন। সারাদেশের মতো রাজধানীতেও এদিন প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুর্গোৎসব।
হিন্দু পঞ্জিকা মতে, এবার দেবী এসেছেন দোলায় (পালকি) চড়ে, যাবেন গজে (হাতি) চেপে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, দোলায় চড়ে দেবির আগমণ প্রাকৃতিক দুর্যোগের বার্তা দেয়। তবে তিনি হাতিতে চড়ে বিদায় নেয়ায় পৃথিবী হয়ে উঠবে সুজলা-সুফলা, শস্য শ্যামলা।
রাজধানীর অধিকাংশ মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন হয় সদরঘাটে বুড়িগঙ্গা নদীতে। এর আগে শোভাযাত্রা নিয়ে সব প্রতিমা নিয়ে পলাশীর মোড়ে জড়ো হয় ভক্তরা।
ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির প্রতিনিধিরা জানান, মূলত ‘দর্পণ বিসর্জনের’ মাধ্যমে সকালেই দেবীর শাস্ত্রীয় বিসর্জন সম্পন্ন হয়।
মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে প্রতীমা থেকে ঘটে এবং ঘট থেকে আবার ভক্তের হৃদয়ে মাকে নিয়ে আসাকে বিসর্জন বলে।
প্রতিমা বিসর্জনের পালা শুরু হয় বিকাল থেকেই। রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে কেন্দ্রীয় বিজয়া শোভাযাত্রা বের হয় বেলা আড়াইটার দিকে। এর আগেই নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিমা জড়ো করা হতে থাকে পলাশী মোড়ে।
শঙ্খ আর উলুধ্বনি, খোল-করতাল-ঢাক-ঢোলের সনাতনি বাদ্যের সঙ্গে আধুনিক উচ্চস্বরের সাউন্ড সিস্টেমে দেবী বন্দনার গানের মধ্য দিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক দিয়ে কয়েক হাজার মানুষের এ শোভাযাত্রার সময় বিভিন্ন সড়কে সৃষ্টি হয় যানজটের।
পলাশী থেকে পুরান ঢাকার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে বুড়িগঙ্গা তীরে শেষ হয় শোভাযাত্রা।
বিকাল ৩টা ৫০ এ বীণাস্মৃতি স্নানঘাটে বিসর্জন দেয়া হয় রথখোলা রোডের আদি মরণচাঁদ মণ্ডপের প্রতিমা। এরপর জলে ভাসানো হয় পাতলা খান লেনের সবুজ স্বপন সংঘ মণ্ডপের প্রতিমা।
ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বসুদেব ধর জানান, রাজধানীর ২১৪টি মণ্ডপের দেবী প্রতিমা বীণাস্মৃতি স্নানঘাট, তুরাগ নদীর বিআইডব্লিউটিএ ঘাট ও পোস্তগোলায় বিসর্জন দেয়া হবে।
প্রতিমা ঘাটে নিয়ে আসার পর শেষবারের মতো ধুপধুনো নিয়ে আরতিতে মেতে ওঠেন ভক্তকূল।
শেষে পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মধ্যদিয়ে দেবীকে নৌকায় তুলে বিসর্জন দেয়া হয়।
বিসর্জনের এ পর্ব অবশ্য রাত পর্যন্ত চলবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।