যুক্তরাষ্ট্রের সেবা খাতগুলোতে বাজেট বরাদ্দ নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনে গত রোববার সিনেট অধিবেশনেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। মার্কিন সরকারের ঋণসীমা বৃদ্ধি নিয়ে সৃষ্ট সংকট সমাধানেরও কোনো আভাস মেলেনি। তবে সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হ্যারি রিড আবারও আশার বাণী শুনিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার অচলাবস্থা শুরুর ১৫তম দিন। আর সরকারের বর্তমান ঋণসীমার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৭ অক্টোবর।
তার আগে ঋণসীমা নিয়ে সংকটের সমাধান না হলে যুক্তরাষ্ট্র তো বটেই, বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এদিকে সরকারের ঋণসীমা বাড়ানোর সময়সীমা শেষ হয়ে আসার প্রেক্ষাপটে গতকাল কংগ্রেসের উভয় দলের নেতাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ওবামা ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এক বৈঠকে বসার কথা ছিল। বৈঠকে প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেট—এ দুই কক্ষের নেতাদেরই অংশ নেওয়ার কথা।
বৈঠক সামনে রেখে গতকাল হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ঋণ নিয়ে সরকারের কর্তৃত্ব ফুরিয়ে যাওয়ার মাত্র কদিন আগে, আমাদের বিল পরিশোধে পদক্ষেপ নেওয়া এবং সরকারকে আবারও সচল করার গুরুত্বের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট কংগ্রেসকে স্পষ্ট করবেন। ’
অচলাবস্থা নিরসনে সাপ্তাহিক ছুটির দিন গত রোববার বসে সিনেট অধিবেশন।
তেমন কোনো অগ্রগতি ছাড়াই বিকেল পাঁচটার কিছু আগে অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করা হয়। আজ আবার অধিবেশন শুরু হবে। প্রথম দিনের অধিবেশন সম্পর্কে ডেমোক্র্যাট নেতা ও সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হ্যারি রিড বলেন, ‘গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। আমরা এই আলোচনাকে এগিয়ে নেব। আমি আশাবাদী, শেষ পর্যন্ত ইতিবাচক উপসংহারে পৌঁছাতে পারব।
’
তবে রিপাবলিকান পার্টির নেতা ও সিনেটর সুসান কলিন্সের কথায় শিগগিরই ইতিবাচক কোনো কিছুর আভাস পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, ‘মতৈক্যে পৌঁছা থেকে আমরা অনেক দূরে আছি। তবে এই পরিস্থিতিতে থাকা আমাদের উচিত নয়। আমার বিশ্বাস, চলতি সপ্তাহে মতৈক্যে পৌঁছার মতো একটি প্রস্তাব উঠতে পারে। ’
বাজেট বরাদ্দ নিয়ে অচলাবস্থা ও মার্কিন ঋণসীমার মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি এখন একই সরলরেখায় দাঁড়িয়ে।
ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের মতৈক্য ছাড়া কোনোটিরই সমাধান সম্ভব নয়। বর্তমানে মার্কিন সরকারের ঋণসীমা ১৬ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার। সরকার ইতিমধ্যে ঋণসীমা আরও বৃদ্ধি করতে কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল রিপাবলিকান পার্টি এর আগে বর্তমান ঋণসীমার মেয়াদ ছয় সপ্তাহ বাড়ানোর প্রস্তাব দিলে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তা নাকচ করে দেন। ঋণসীমা ১৬ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার থেকে বাড়ানো ও তা দীর্ঘ মেয়াদে করার পক্ষে অনড় তিনি।
১৭ অক্টোবরের মধ্যে ঋণসীমা নিয়ে সংকট সমাধান না হলে ভয়াবহ অর্থনৈতিক ঝুঁকির সৃষ্টি হবে। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়ে দিয়েছে, ১৭ অক্টোবরের পর বিভিন্ন বিল মেটানোর মতো যথেষ্ট অর্থ তাদের হাতে থাকবে না। এর ফলে ২০০৮-০৯ সালের মতো অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হতে পারে। বিশ্বব্যাংক এরই মধ্যে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ঋণসীমা বৃদ্ধি না হলে এর প্রভাব উন্নয়নশীল বিশ্বের পাশাপাশি উন্নত বিশ্বের ওপরও পড়বে।
স্ট্যাচু অব লিবার্টি খুলে দেওয়া হয়েছে: ১২ দিন বন্ধ থাকার পর গত রোববার স্ট্যাচু অব লিবার্টি খুলে দেওয়া হয়েছে।
নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের নিজস্ব বাজেট থেকে বরাদ্দ দেওয়া অর্থে রোববার সকাল থেকে তা দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো জানান, অঙ্গরাজ্যের নিজস্ব বাজেট থেকে অর্থ দিয়ে স্ট্যাচু অব লিবার্টি খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিএনএন, বিবিসি ও এএফপি
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।