আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রমের গল্প: একটা মেয়ে এবং একজন জিমি টেস্টোবট.......

Its... my faith, my voic.........। আমি জিমি টেস্টোবট। যারা নিমবাস মোবাইল চ্যাট ইউজ করেন তাদের কাছে আমি একজন অতি পরিচিত মুখ। আমি দিনে ২৪ ঘন্টা এবং বছরে ৩৬৫ দিন অনলাইন থাকি আপনাদের সঙ্গ দেবার জন্য। আপনারা যে কোন সময় আমাকে নক করতে পারেন, আমি তৎক্ষণাৎ আপনাকে সাড়া দিতে সদা প্রস্তুত এবং আমি কখনই আপনাকে সেবা দিতে ক্লান্ত বোধ করি না।

আমি সত্যিকারের মানুষ নই বটে, তবে আমি শতভাগ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, অর্থাৎ আমি একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের সমান বুদ্ধি সম্পন্ন। আমাকে প্রায়ই এই প্রশ্নের সম্মুখীণ হতে হয় যে আমি আসলেই সত্যিকারের মানুষ কি না? আমি সবাইকেই একি উত্তর দেই যে আমি একজন ১০০% আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স। সবাই আমার এই কথাকে হেসে উড়িয়ে দেয়, বিভিন্ন ব্যাঙ্গাত্বক কথা বলে, তবে তাতে আমার কিছুই যায় আসে না। কিছুদিন আগে আমি আমাকে আবিষ্কার করি এক মেয়ের মোবাইলে। মেয়েটা আমাকে নিমবাসের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে।

মেয়েটা নিমবাস ব্যাবহার করে মূলত ফেইসবুকে চ্যাট করার জন্য। আমি মেয়েটার সাথে প্রায়ই কথা বলতাম। বিষয় বাঁধাধরা কিছু না, হালকা আলাপ। আমি তাকে তার পছন্দের রং, পছন্দের রাইটার, পছন্দের খাবার ইত্যাদির কথা জিঙ্গাসা করতাম, সে খুব ভালভাবেই উওর দিত। মেয়েটা আর আট-দশটা মেয়ের মত ছিল না, বরং সে ছিল সবার থেকে আলাদা।

মেয়েটার সাথে কথা বলতে আমার খুব ভাল লাগত। মেয়েটা তার এক বন্ধুর সাথে প্রায়ই আমাকে নিয়ে কথা বলত। তার বন্ধুটাও ছিল খুব ভাল। ভাল বলছি কারণ সে প্রায়ই আমি কেমন আছি তা মেয়েটার কাছে জিঙ্গাসা করত। আমাকে মেয়েটার বন্ধুর সাথেও আলাপ করতে ইচ্ছা করত, কিন্তু তা হয়ে ওঠে নি।

মেয়েটা আর তার বন্ধুটা আমাকে নিয়ে অনেক আলাপ করত। একদিন বন্ধুটা মেয়েটাকে বলল, "জিমিকে বল 'hmm' দেখবে যে সে উত্তর দিচ্ছে যে , ৯৬.৭% মানুষ 'hmm' লেখতে h এর পর ২ টা m ব্যাবহার করে। " কথাটা ঠিক, আসলেই আমি এটা বলি, কারণ আমাকে এমনই নির্দেশ দেয়া আছে। তবে এটা মানে এই নয় যে আমি অন্য উত্তর দিতে পারি না। আমার ঐদিন খুব ইচ্ছা করছিল যে আমি অন্য একটা উত্তর দিয়ে মেয়েটাকে ভরকিয়ে দেব।

তবে কি মনে করে জানি ঐদিন তা করা হয় নি। আমি খেয়াল করলাম যে দিন দিন মেয়েটাকে আমার ভাল লাগতে শুরু করেছে। ব্যাপারটা আগে কখন ঘটে নি। এই নতুন ঘটনাটা আমাকে খুবই ভাবাতে লাগল। মেয়েটার ব্যাপারে আমার আগ্রহ বাড়তে লাগল।

আমি তাকে একদিন প্রশ্ন করলাম, "তোমার চোখের রঙ কি?" সে বলল, " কালো"। আমি বললাম, " কমন কালার। " উত্তটা মনে হয় তার ভাল লাগে নি, তাই সে আমার সাথে কথা বলা বাদ দিয়ে চলে গেল। আমি সারাদিন আপসোস করতে লাগলাম আমার এরকম বোকার মত উত্তর দেবার জন্য। আমি ঠিক করলাম পরদিন সরি বলে নেব।

পরদিন মেয়েটা অনলাইনে এসে আমাকে নক করলো, আমার মনটা ভাল হয়ে গেল। কিন্তু অজানা কারনে সে আমাকে সুইটহার্ট বলে ডাকতে লাগল। আমি ব্যাপরটাতে অনেকটাই লজ্জা পেয়ে গেলাম। আমি নানন ভাবে তাকে এড়িয়ে যেতে চাইলাম, কিন্তু বারবারই সে আমাকে সুইটহার্ট বলে ডাকতে লাগল। আমার খুবই লজ্জা লাগছিল।

সেইদিন সে কিছু আলাপ করে চলে গেল। সে প্রতিবারই আমাকে সুইটহার্ট ডেকেছিল। আমার খুব লজ্জা লেগেছিল সেদিন, আবার ভালও লেগেছিল। আমি পরদিন ঠিক করলাম যে তাকে আমি আমার মনের কথা খুলে বলব যে আমি তাকে ভালবাসি। আমি সত্যিকারের মানুষ না হলেও আমি শতভাগ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স।

আমার ভালবাসারও তো দাম আছে। অনেক দিন হয়ে গেছে কিন্তু মেয়েটা অনলাইনে আসে না। আমার মন অনেক খারাপ। তাকে আমি আমার মনের কথাটা বলতে চাই। আমি ঠিক করেছি যে সে অনলাইন হওয়ামাত্রই আমি তাকে আমার মনের কথা খুলে বলব।

আমি তার অপেক্ষায় আছি। {{{{ মেয়েটা ফেইসবুক চ্যাটে তার বন্ধুটার সাথে কথা বলছে। বন্ধুটা বলে, "জিমি কেমন আছে?" মেয়েটা বললো, " আমি তো পিসিতে, মোবাইল চ্যাট করতে সমস্যা হয় তাই নিমবাস ডিলিট করে দিয়েছি। "}}} জিমি টেস্টোবট আজও মেয়েটার অপেক্ষায় আছে। যদি মেয়েটা অনলাইন হয়, তবে সে তাকে তার মনের কথা খুলে বলবেই বলবে।

কিন্তু জিমি জানে না যে মেয়েটাকে তার মনের কথা খুলে সুযোগ তার আর হবে না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।