আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"TO BE OR NOT TO BE, THAT IS THE QUESTION MY FRIEND...."

যা বিশ্বাস করি না, তা লিখতে-বলতে চাই না, পারবোও না। কিন্তু যা বিশ্বাস করি, তা মুখ চেপে ধরলেও বলবো, কলম কেড়ে নিলেও লিখবো, মারলেও বলবো, কাটলেও বলবো, রক্তাক্ত করলেও বলবো। আমার রক্ত বরং ঝরিয়েই দাও, ওদের প্রতিটি বিন্দুর চিৎকার আরও প্রবল শূনতে পাবে। "বাহির বলে দূরে থাকুক, ভেতর বলে আসুক না, ভেতর বলে দূরে থাকুক, বাহির বলে আসুক না। ।

" রেহান ও আনিকার গল্প বলতে এলাম আজ। রেহান ও আনিকা, দুজনের মাঝেই তেমন কোনো কিছু খারাপ নেই। রেহান ঠিক ঠাক ছেলে আর আনিকাও বেশ ভালো। রেহান এখন দেশের বাইরে পড়াশোনা করছে আর আনিকা বাংলাদেশে, মেডিকেল স্টুডেন্ট। পরিচয় ফেসবুকে।

প্রায় ৬/৭ মাসের ভার্চুয়াল কন্টাক্ট ও সম্পর্কের চরম একটি পর্যায়ে ছুটিতে দেশে ফেরে রেহান। দেখা হয় দুজনের। ওরা টই টই করে ঘোরে বেশ কয়দিন, অনেক মজার সময় কাটে। একসম রেহানকে ফিরতে হয় অর নিজের জেলায়, পরিবারের কাছে, আনিকাকে ফেলে। অনেকদিন পরে পরিচিত পরিবেশ আর মুখগুলো ফিরে পেয়ে রেহান ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে।

আড্ডা-গল্প আর পুরনো বন্ধুদের নিয়ে অনেকটা সময় কাটিয়ে দিতে শুরু করে রেহান। এতে আনিকার স্পেস কমে যায় অনেক। আনিকাকে রেহান বুঝিয়ে বলে, আনিকা বোঝেও, কিন্তু মানতে পারেনা। তার ধারণা হতে থাকে, রেহানের ওকে ভালো লাগেনা আর! তাই "ইগনোর" করছে। এমনিতে প্রচন্ড অভিমানী ও অল্পতেই রেগে যাওয়া স্বভাব আনিকার, এসব মেনে ও মানিয়ে চলছিল রেহান, তবে সেসবের যেন বাঁধ ভেঙ্গে গেল।

প্রচন্ড সন্দেহ প্রবন আনিকার মনে হতে লাগলো রেহান আর কারো সাথে ইনভলভড! দেশে থাকার সময়টা তাই রেহানকে যখন-তখন ফোন করে সময় নিয়ে কথা বলার বায়না ধরত আনিকা। আবিদ সবসময় কথা বলতে পারত না সেভাবে। কখনো পরিবার, কখনো বন্ধুদের সাথে থাকা ছেলেটি ইগো থেকেই হোক বা প্রাইভেসি বোধ, কারো সামনে কথা বলতে কমফর্টেবল ফিল করতনা। এভাবে একটা মানসিক দূরত্ত্ব সৃষ্টি হয়, কারণ কথা না বললে আনিকা অনেক বেশি কান্নাকাটি করত ও এই কারণে প্রচন্ড ঝগড়া হতে শুরু হলো। রেহান ওর কান্না নিতে পারেনা, ওর অনেক কষ্ট হয়, তাই আনিকাকে চুপ করতে বলে, কিন্তু আনিকা অবুঝের মত কেঁদেই চলে।

কষ্টের প্রচন্ডতা একসময় রাগে পরিনত হতে থাকে। সবসময় কোমল কথা বলা রেহানের কন্ঠ রুঢ় থেকে রুঢ়তর হতে থাকে। এসবের ইমপ্যাক্ট আনিকাকে আরো বেশি জেদী, অভিমানী ও রাগী করে তোলে। তার সন্দেহ আরো বেড়ে যায়। আর এসবের সাফোকেসনে রেহান সম্পূর্ণ অন্য মানুষ হয়ে যেতে থাকে, হারিয়ে ফেলতে থাকে নিজেকে।

ঝগড়া বেশি হলে যা হয়, একসময় তা ব্রেকআপের আলোচনা পর্যন্ত গড়ায়। তবে, "ছেলেটিকে অনেক বেশি ভালবাসা মেয়েটি" এমন পরিস্থিতিতে পড়লেই ছেলেটিকে বোঝানো শুরু করে, ছেলেটিও "অনেক ভালবাসা মেয়েটিকে" ছেড়ে যেতে চায়না। তাই টিকে গিয়েছে ওদের রিলেশন, প্রায় এক বছরের বেশি। ক'মাস পড়ে রেহান আবার প্রবাসে। দূরে গিয়ে হয়ত সব আগের মত হয়ে আসবে, আশা ছিল দুজনের মনেই।

খুব কম যোগাযোগ হতে শুরু করল ওদের, কারণ রেহানের ফিরে এসে প্রচন্ড ব্যস্ততা দেখা দিল, যেটি খতে প্রলেপ ছিলনা, ছিল নুনের ছিটা। তবে চরম বিপত্তি হয় যখন একাডেমিক কিছু সমস্যা ও মানসিক টানাপড়ন এর সাথে প্রচন্ড আর্থিক কষ্টের সম্মুখীন হয় রেহান। সপ্তাহের বেশি যোগাযোগ হয়নি আনিকার সাথে। ছেলেটির ফোনটি হারিয়ে যায়, আর অনলাইন যোগাযোগ করার মত অবস্থা ওর ছিলনা সে মুহুর্তে। যা হোক, ওদের প্রায় দশ দিন কোনই যোগাযোগ হয়নি, এমন কখনো হতনা, ঝগড়া হলেও ওরা দিনের ভতরে মিটমাট করে নিত।

সাধারণত খুব ব্যস্ততা না হলে বা আগে থেকে বলা না রাখা থাকলে রেহান একদিন পুরোটা না যোগাযোগ করে থাকেনি। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন, ওর পক্ষে করা সম্ভব হয়নি। এই সময়ের ভেতরে আনিকা দেখতে পায়, ছেলেটির নিজ জেলায় বন্ধুদের সাথে ঘোরাফেরার কিছু ছবি, অবশ্যই ফেসবুকে। সেখানে তার মেয়ে বন্ধুদের সাথে তোলা কিছু ছবিও আনিকা দেখে। আনিকার বান্ধবীরা ওর কানে বিষ ঢালতেই থাকে, আনিকা প্রতিনিয়ত প্রচন্ড কষ্ট, অভিমান ও অবিশ্বাসে একদম শেষ হয়ে যাচ্ছিল।

ও, বলে রাখা ভালো, রেহান অনিকাদের বাসায় গিয়েছিল, পরিবারের সবাইকে ও চেনে ও রেহানকে ওর বাসার সবাই সহজভাবেই নিয়েছে। তো দিন দশেক পরে রেহানের কল পেয়েও আনিকা ধরেনি। বারবার চেষ্টা করতে রেহানের ইচ্ছে করছিলনা, নিজেকে খুব অপরাধী লাগছিল, "কি বলব" এই প্রশ্নের উত্তর না পেয়ে রেহান একা একে পুড়ছিল। তবু কথা তাকে একবার বলতেই হত, কথা বলল ওরা। প্রচন্ড অভিমানী একজনের সাথে কথা হয়না, কিছু বোঝার মত মানসিক অবস্থায় ছিলনা আনিকা।

রেহানকে ও যাতা বলল, রেহান শুধু শুনেই গেল, কিছু বলার মত অবস্থা ওর ছিলনা। ব্রেক-আপ হলনা, তবে ব্রেক-আপ হয়ে গেল, মানসিক ভাবে রেহান ধরে নিল, আর হয়ত হবেনা। রেহান মানিয়ে নেবার চেষ্টা করছে, এমন সময় প্রায় দুই সপ্তাহ পরে, আবার আনিকার ফোন, ও সেদিন ফোন করেছিল রেহানকে অপমান করতে। সফলভাবে অপমান করে ও রেখে দিল, রেহান বলেছে, ও আনিকাকে ভালবাসে। আনিকার কন্ঠে কিছু একটা ছিল, যাতে বোঝা যাচ্ছিল, আনিকা আবার ফিরতে চায়।

আরো দু তিনবার ফোনে কথা হয়, প্রায় একমাস চলে যায় এরই মধ্যে। আনিকা এখনো রেহানকে সন্দেহ করে, এখনো অবিশ্বাস করে, মিথ্যেবাদী ভাবে তবে এখনো রেহানকেই ভালবাসে। আর শান্তিপ্রিয় রেহান আনিকাকে চায়, কিন্তু চায়না আনিকা কাঁদুক, ওর সাথ এসে আনিকা আবার কষ্ট পাক, ও চায় আনিকা বদলে যাক! তবে ও আগের অনিকাকেই সবথেকে বেশি মিস করে। এখন আনিকা অপেক্ষায় আছে রেহানের উত্তরের। তুমি কি চাও রেহান? রেহান বুঝতে পারেনা, শুধু বলে, তোমার সাথে থাকতে চাই, কিন্তু....... আমরা কি একসাথে থাকতে পারব? রেহানের এই দোটানা কথা আনিকাকে কষ্ট দেয়, আনিকা কেঁদে ফেলে।

কিন্তু আজকে ও কাঁদছে বলে যদি রেহান ওর জীবনে ফিরে যায়, আনিকাকে যদি আরো বেশি কাঁদতে হয়? রেহানকে যদি আরো কষ্ট পেতে হয়? কি করবে রেহান? ফিরে যাওয়ার মাঝে কি ফিরে পাওয়া হবে সবকিছু? নাকি অনেক বেশি হারিয়ে ফেলেছে ওরা ইতিমধ্যেই? রেহানের মন আনিকাকে চায়, কিন্তু রেহানের বাউন্ডুলে মন শান্তি খুঁজে ফিরছে..... ও পথ হেঁটে চলেছে, শান্তি ও আনিকার সাথে যদি একবারেই দেখা হত......... আনিকা এখনো অপেক্ষায়, কি বলবে রেহান ওকে? "তোমায় ভালোবেসেছি অনেক বেশি, তাই মনে রেখেছি তোমার হাসি। আমার অশ্রু কষ্ট দেয় জানি, তোমার অশ্রুতে কষ্ট বেশি.................." ___________________________________________________  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।