আবীর শাকরান মাহমুদ
ছেলেটা বেশি কিছু চায়নি।
শুধু চেয়েছিল, চুলে হাত বুলিয়ে বিলি কেটে কেউ তার ঘুম পাড়িয়ে দিক।
কিংবা, কেউ তার গায়ের উপর পা তুলে দিয়ে জড়িয়ে ঘুমাক।
আর সেই ঘুম ভাঙ্গুক মেয়েটির নিঃশ্বাসে।
চেয়েছিল, তার সকালটা ভরে থাকুক
ভোরের আলোতে নয়, মেয়েটির কালোতে-
ঘুম-চুমু-প্রেম-কাম ও ঘামে।
ছেলেটা আর বেশি কিছু চায়নি।
চেয়েছিল, অফিসে যাওয়ার সময় তার টাইটা একটু ঠিক করে দিক কেউ।
অথবা দেখিয়ে দিক, ওই স্ট্রাইপের শার্টটার সাথে তো কাল প্যান্টটাই তো মানাবে। কিংবা অফিসে খালি ফোন করে জ্বালাতে থাকুক অবিরত,
মিটিংয়ের মাঝে এস.এম.এস এর রিপ্লাইয়ের জন্য,
“ঠিকমত পানি খেয়েছ তো? কিংবা নিয়েছ কি মেডিসিন?”
ছেলেটা আর বেশি কিছু চায়নি।
চেয়েছিল তার জ্বালানো কেউ সহ্য করুক।
বা বিরক্ত হয়ে
কেউ বলুক, “আমার লাইফ তুমি কয়লা কয়লা করে দিস। ”
কিংবা, গাল ফুলিয়ে কেউ বসে থাকুক। রিপ্লাই না দিক একের পর এক কলের।
দিন শেষে তবুও বসে থাকুক ছেলেটির আসার অপেক্ষায়। ইনবক্সে মেসেজ আসুক,
“সমস্যা কি তোমার? বাসায় আস না কেন??”
ছেলেটা আর বেশি কিছু চায়নি।
চেয়েছিল, কেউ তাকে সিগারেট খেতে বারণ করুক।
মুখ থেকে আধ খাওয়া গোল্ডলিফের তামাকের স্টিক
কেড়ে নিক। কিংবা, পাঞ্জাবীর পকেট থেকে বেনসনের প্যাকেটটা।
হঠাৎ করেই তার ধূমপান ছাড়াটা হয়ে উঠুক
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চেয়েও ইম্পর্টেন্ট কোন ইস্যু।
বাসায় হরতাল হোক।
লাগাতার, অবিরাম।
ছেলেটা আর বেশি কিছু চায়নি।
চেয়েছিল, ইচ্ছে করে এনিভার্সারির ডেট ভুলে থাকার ভান করতে।
যাতে কেউ তার উপর রাগ দেখাক, করুক অভিমান ।
রাগ ভাঙ্গাতে যাতে ছুটে যেতে হয় তাকে,
বেইলি রোডের ফুলের দোকান থেকে ‘হার্টস অন ফায়ার’ পর্যন্ত।
ছেলেটি চেয়েছিল, মেয়েটি তার সাডেন সারপ্রাইজে অবাক হোক।
“কারো কারো রাগ ভাঙ্গানোর জন্য নাকি দুনিয়া ওলট-পালট করাও যায়েয। ”
-ছেলেটা বলেছিল অবলীলায়।
ছেলেটা আর বেশি কিছু চায়নি।
চেয়েছিল, যখন মাঝরাতে খিধে পায়,
না বলা সত্ত্বেও কেউ ফ্রিজ থেকে খাবার গরম করে দিক।
কিংবা, ডেটে গেলে কেউ হঠাৎ করে আবদার করুক ফুচকা খাওয়ার।
তাও আবার বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে? বিলিভ হয়? কী জ্বালা!!
অগত্যা আর কি করা! কে এফ সি বাদ দিয়েই এটাই সই।
ছেলেটা আর বেশি কিছু চায়নি।
চেয়েছিল তার বেসুরো গলার গান শুনুক মেয়েটি।
তার আজাইড়া গল্প-কবিতাগুলো পড়ুক বসে বসে।
অথবা, তার বস্তাপচা পুরানো জোকসেও হেসে উঠুক।
কেউ তাকে বলুক, “তুমি এত ফানি কেন?”
ছেলেটা আর বেশি কিছু চায়নি।
চেয়েছিল মেয়েটি বলুক, “বিশ্বসংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনো কিন্তু ১০৮টা নীলপদ্ম। ”
কিংবা “আমার জন্য পারবে কি বল লিখতে পঁচিশ পংক্তির প্রেমপদ্য?”
ছেলেটা আর বেশি কিছু চায়নি।
চেয়েছিল মেয়েটিক বলতে,”তুমি আমার সম্পত্তি নও, সম্পদ।
”
অথবা, “তুমি শুধু আমার নারী নও, আমার রমণী। ”
বিশ্বাস কর, মেয়ে!
ছেলেটা চেয়েছিল তোমাকে।
এর চেয়ে আর বেশি কিছু সে চায়নি।
৫ নভেম্বর, ২০১৩
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।