একসময় কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে আতঙ্ক ছড়াতেন রোমারিও আর রোনালদো। ফুটবল বিশ্বে তাঁরা পরিচিতি পেয়েছিলেন রো-রো জুটি নামে। ১৯৯৭ সালের কনফেডারেশনস কাপের ফাইনালে এই দুজনের ভীতিকর চেহারাটা সবচেয়ে ভালোভাবে উপলব্ধি করেছিল অস্ট্রেলিয়া। দুজনেই করেছিলেন হ্যাটট্রিক। দুজনেই ছিলেন ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক।
১৯৯৪ সালে রোমারিও আর ২০০২ সালে রোনালদো। কিন্তু এখন একে-অপরের বিপক্ষেই লড়ছেন ব্রাজিলের এই দুই কিংবদন্তি ফুটবলার। ব্রাজিলের বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রক্রিয়া নিয়ে কথার লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছেন রোমারিও আর রোনালদো। দুজনে যেন পাল্টাপাল্টি তোপ দাগছেন!
ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার পর ব্রাজিলের কিংবদন্তি এই দুই ফুটবলার হয়ে গেছেন পুরো ভিন্ন জগতের মানুষ। হয়ে উঠেছেন একে অপরের প্রতিপক্ষও।
রোনালদো যেখানে কাজ করছেন ২০১৪ বিশ্বকাপের সক্রিয় আয়োজক হিসেবে, সেখানে রোমারিও প্রায়ই মুখর হচ্ছেন ফিফা আর ব্রাজিলের আয়োজক কমিটির সমালোচনায়। সাম্প্রতিক সময়ে এই মতভিন্নতাই রূপ নিয়েছে কথার লড়াইয়ে।
২০১০ সালে সাংসদ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পর থেকেই ব্রাজিলের বিশ্বকাপ আয়োজনের নানা ত্রুটি নিয়ে নিরন্তর সমালোচনা করে আসছেন রোমারিও। বাদ দিচ্ছেন না ফিফার শীর্ষ কর্মকর্তাদেরও। সম্প্রতি কংগ্রেসের এক শুনানিতে ফিফা প্রেসিডেন্টকে ‘চোর’ বলে আখ্যায়িত করেছেন রোমারিও।
আর তাঁর মতে, ফিফার মহাসচিব জেরোম ভালক একজন ‘ব্ল্যাকমেইলার’।
এমন নয়, বিশ্বকাপ আয়োজনেরই বিরোধী রোমারিও। তাঁর প্রধান আপত্তি এই আয়োজনের পেছনে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করা নিয়ে, ‘আমি বিশ্বকাপের বিরোধী নই। আমি শুধু এই আয়োজনের জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়টাকে সমর্থন করছি না। আমি আগেও বলেছি যে, ব্রাজিল একটা উন্নত দেশ হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করছে।
’ বিশ্বকাপ আয়োজনের নামে ব্রাজিলের সাধারণ মানুষের করের টাকার অনেক অপব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ রোমারিওর। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার জন্য রোনালদোর সমালোচনাও করেছেন তিনি।
অন্যদিকে এই ধরনের অভিযোগ একেবারেই নাকচ করে দিয়েছেন রোনালদো। প্রশ্ন তুলেছেন রোমারিওর দেশপ্রেম নিয়েও। সম্প্রতি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘বিরোধী হয়ে যে কাউকে আঘাত করাটা খুবই সহজ।
আমি সবাইকে আমার মতো করে চিন্তা করতে বলছি না বা আমার বিশ্বাসটাকে মেনেও নিতে বলছি না। কিন্তু আমাকে যখন এই কমিটির অংশ হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তখন আমি মনে করেছিলাম, বিশ্বকাপটা ব্রাজিলের অগ্রগতির জন্য খুবই ভালো একটা সুযোগ হবে। এর মাধ্যমে আমরা প্রচুর ব্যবসায়িক বিনিয়োগ ঘটানোর সুযোগ পাব। আমি এটাই বিশ্বাস করে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। ’
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।