কিচ কিচ কুচ কুচ কাচ কাচ কোচ কোচ!!! সেঃ পেনাইল ফ্র্যাকচার! এইটা আবার কি?
আমিঃ পুরুষাঙ্গ (Penis) এর ভিতরে একজোড়া উত্থানক্ষম পেশি থাকে যার নাম Corpora cavernosa। এই Corpora cavernosa এর চারপাশের আবরণকে বলে Tunica albuginea। পেনাইল ফ্র্যাকচার বলতে এই Tunica albuginea এর ছিঁড়ে যাওয়াকে বোঝায়।
(দেখুন পুরুষাঙ্গের স্বাভাবিক অবস্থার ক্রস সেকশন) -
(এবার দেখুন পেনাইল ফ্র্যাকচারের পর পুরুষাঙ্গের কি অবস্থা হয়) -
সেঃ আমার হইলে এটা আমি বুঝব কিভাবে?
আমিঃ বোঝা খুবই সহজ। পুরুষাঙ্গ উত্থিত অবস্থায় যদি -
১/ আপনি হঠাৎ করে “মট” করে ভেঙ্গে যাবার কোন শব্দ শোনেন,
২/ সাথে সাথেই প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন,
৩/ এরপর সাথে সাথেই যদি আপনার উত্থিত পুরুষাঙ্গ নিস্তেজ হয়ে আসে,
৪/ আর আপনি তাকিয়ে দেখতে পান যে পুরুষাঙ্গের চামড়ার নিচে রক্ত জমে ফুলে লাল বা কালো হয়ে আছে, তবেই এটা নিশ্চিত পেনাইল ফ্র্যাকচারের কেস।
সেঃ এটা কেন হয়?
আমিঃ এটা হবার আসলে একটাই কারণ, সেটা হচ্ছে উত্থিত পুরুষাঙ্গের উপর হঠাৎ কোন শক্তিশালী আঘাত (rapid blunt force on erected penis)। এটা হতে পারে যখন -
১/ আপনি সঙ্গিনীর সাথে সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স করার সময় উত্তেজনার বশে পুরুষাঙ্গ দিয়ে vagina penetrate না করে আশেপাশের অঞ্চল perineum এ penetration এর মত জোর দিয়ে আঘাত করেন,
২/ আপনি সঙ্গিনীর সাথে বিপরীত বিহারে মিলিত হন (আপনি নিচে সঙ্গিনী উপরে),
৩/ আপনি খুব aggressive ভাবে হস্তমৈথুন করেন,
৪/ পুরুষাঙ্গ উত্থিত থাকা অবস্থায় বিছানায় উপুড় হয়ে গড়াগড়ি দেন,
৫/ বেশ উঁচু থেকে আপনি উত্থিত পুরুষাঙ্গের উপর পড়ে যান,
৬/ ইট বা শক্ত কিছুর সাথে আপনার উত্থিত পুরুষাঙ্গের জোরে বাড়ি লাগে,
৭/ এমনকি খুব টাইট প্যান্টের ভিতর উত্থিত পুরুষাঙ্গের জায়গা করার জন্য আপনাকে অনেক কসরত করতে হয় ইত্যাদি।
সেঃ ভাই, এইগুলা কি বলেন? আমার তো বিশ্বাস হয় না। এই পৃথিবীতে আর কারো এই সমস্যা হইছে?
আমিঃ হ্যাঁ হয়েছে। ১৯২৪ সালে প্রথম এই ঘটনার অস্তিত্ব বইতে প্রকাশ পায়।
তারপর সারা পৃথিবীতে নানা সময়ে নানা জায়গায় আরও প্রায় ১৬০০ ঘটনা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এদের মধ্যে শুধু মুসলিম দেশগুলোতেই ঘটনার হার সারা পৃথিবীর ঘটনার হারের অর্ধেকেরও বেশি। ইরানে তো খুবই বেশি। ওখানকার একটা প্রদেশেই টানা ৯ বছরে ১৭২ টা কেস পাওয়া গেছে।
সেঃ কেন ভাই ইরানের সমস্যা কি?
আমিঃ ইরানে “তাক্বানদান” নামে একটা অভ্যাস প্রচলিত আছে, ওখানকার অনেক পুরুষই অনাকাঙ্ক্ষিত সময়ে বা স্থানে উত্থিত পুরুষাঙ্গ নিস্তেজ করার জন্য পুরুষাঙ্গের নিচটা শক্ত করে ধরে উপরের অংশ আস্তে আস্তে বাঁকিয়ে ফেলেন এবং যতক্ষণ না “মট” করে একটা শব্দ হয় ততক্ষণ এ কাজটা করে থাকেন।
শব্দ হবার পর তারা অনুভব করেন পুরুষাঙ্গ আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। এই অভ্যাসটার কারণে সেখানে পেনাইল ফ্র্যাকচারের হার অনেক বেশি।
সেঃ তাই! আচ্ছা, আমার যদি বাই চান্স পেনাইল ফ্র্যাকচার হয়েই যায় তাহলে আমি কি করব?
আমিঃ পেনাইল ফ্র্যাকচার হলে ভয় বা লজ্জা পাবার কিছু নেই। প্রত্যেক ভালো হাসপাতালেই এর চিকিৎসা রয়েছে। পেনাইল ফ্র্যাকচার একটা ইমারজেন্সি কেস, তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে।
হাসপাতালের কর্তব্যরত সার্জন অবশ্যই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাবেন, কারণ এই অপারেশনে যত বিলম্ব হবে রোগীর ভবিষ্যতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেবার সম্ভাবনা তত বাড়তে থাকবে।
সেঃ অপারেশন! অপারেশন না করলে হয় না?
আমিঃ না, হয় না। অপারেশনই এর সর্বোৎকৃষ্ট চিকিৎসা। অপারেশনের সময় সার্জন -
১/ Penis এর shaft এর distal end এর চারপাশের চামড়া কেটে ভাঁজ করে নামিয়ে পুরুষাঙ্গের অভ্যন্তরীণ অংশকে উন্মুক্ত করবেন।
২/ জমে থাকা রক্ত পরিষ্কার করবেন।
৩/ Tunica ও corpora cavernosa এর ক্ষত সেলাই করবেন।
৪/ কোন ধমনী বা শিরা ছিঁড়ে গেলে সেটাও সেলাই করবেন।
৫/ পরিশেষে নামিয়ে ফেলা চামড়া উপরে জায়গামত তুলে আবার সেলাই করে দেবেন।
সেঃ বাপ্রে! বলে কি!!
আমিঃ এতে আপনার ভয় পাবার কিছু নেই। আপনি কিচ্ছু টের পাবেন না।
আপনাকে অবশ করার ওষুধ দেয়া হবে। অপারেশনের সময় একটুও ব্যথা লাগবে না আপনার।
সেঃ আচ্ছা, ইয়ে...মানে...অপারেশন করার পর আমি ভালো হয়ে যাব তো?
আমিঃ হ্যাঁ অবশ্যই ভালো হয়ে যাবেন। তবে ৫ থেকে ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে আপনার কিছু সমস্যা হতে পারে পরবর্তীতে, যেমন -
১/ বাঁকা পুরুষাঙ্গ
২/ সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্সের সময় ব্যথা
৩/ উত্থানের সময় ব্যথা
৪/ উত্থানে সমস্যা
৫/ অস্বাভাবিক সময় ধরে পুরুষাঙ্গ উত্থিত অবস্থায় থাকা...
সেঃ থাক থাক ভাই আর বলতে হবে না, ভয় লাগে। অপারেশনের পরেও কি এত সমস্যা হতে পারে?
আমিঃ তাও তো ভাই বাকি ৭৫ থেকে ৯৫ শতাংশ একদম ভালো হয়ে যায়।
আর অপারেশন না করলে কি হয় জানেন?
সেঃ কি হয়?
আমিঃ অপারেশন না করে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিলেও ৩০ শতাংশের উপরে মানুষ আরও জটিল জটিল সমস্যা ভোগে। শুনবেন?
সেঃ বলেন।
আমিঃ উত্থানে ব্যথা, চরমভাবে বাঁকা পুরুষাঙ্গ, পুরুষাঙ্গে ভয়াবহ ইনফেকশন, পুঁজ তৈরি হওয়া, সারাজীবনের জন্য সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স করার ক্ষমতা হারানো...আরও বলব?
সেঃ না না থাক ভাই অপারেশনই করব সমস্যা নাই। আচ্ছা ভাই...খুক খুক...
আমিঃ বলেন লজ্জা নাই।
সেঃ অপারেশনের কয়দিন পর আমি...ইয়ে মানে...সেক্স করতে পারব?
আমিঃ এইটা আসলে ভাই ঐ সার্জনের উপর নির্ভরশীল।
সে যতদিন পর বলবে আপনি ততদিন পরই সেক্স করতে পারবেন সমস্যা নাই। সাধারণত অপারেশনের পরের ৪৫ দিন সেক্স করা নিষেধ থাকে। তারপর আপনি যত খুশি করেন সমস্যা নাই।
সেঃ কি যে বলেন ভাই ১৮+ কথাবার্তা লজ্জা পাই।
আমিঃ শুধু আপ্নে নাকি পাঠকও তো ভাই চরম লজ্জা পাইতেছে তাই কমেন্ট দিতাছে না কিন্তু ঠিকই নিজেরা উপকৃত হইতেছে।
কি বলেন পাঠক???
রেফারেন্সঃ ১/ প্রথম লিঙ্ক
২/ উইকি লিঙ্ক ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।