আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'হ্যাগো গদির টানাটানিতে আমরা না খাইয়া মরি'

‌''রাজনীতিবিদ? হ্যারাতো রাজার পোলা! হ্যাগো গদির টানাটানিতে আমরা না খাইয়া মরি। নিজের সুবিধার লাইগ্যা হ্যারা সব পারে। হরতাল দিয়া এসি রুমে বইসা থাকে, আমরা বৌ-পোলাপাইন লইয়া না খাইয়া মরি। রাস্তায় আগুনে পুইড়া মরি। একদিকে আয়-রোজগার বন্ধ, আবার হরতালের কারণে দোকানদাররা জিনিসপত্রের দাম বাড়ায়া দিছে।

আমরা যামু কই কন? মনে যা লয় (চায়)......। ''

আজ শনিবার কথাগুলো বলছিলেন পঞ্চাশোর্ধ বয়সের সিএনজি চালক ইমতিয়াজ। প্রায় ২০ বছর রাজধানীতে সিএনজি চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। ভেতরে ক্ষোভ থাকলেও রাজনীতিবিদদের কাছে তার এখন কোন আশা-প্রত্যাশা নেই। বলেন, ''আমি কোন দল করি না।

ভোট আইলে যাগো ভাল লাগে হ্যাগোরে ভোট দেই। কিন্তু, লাভ কী? সব দল এক। হরতালে সিএনজি বাইর করলে আগুন দেয়। ছয়দিন হরতাল গেল। কাইল (আগামীকাল) থাইকা আবার ৪ দিন হরতাল।

পাঁচজনের সংসার চলে কেমনে? বাজারে যাওন যায় না। সব জিনিজের দাম বেশি। জিগাইলে কয় হরতালে মাল আইতে পারে নাই। এর চেয়ে দ্যাশের সব গরীব মানুষরে একবারে বিষ খাওয়াইয়া মাইরা ফালান। ''

ইমতিয়াজ দেশের অগনিত হতদরিদ্র ও নিম্নবিত্ত মানুষের একটা প্রতিচ্ছবি।

চলমান হরতাল, রাজনৈতিক সহিংসতায় আয় রোজগার বন্ধ হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অসহায় দিনাতিপাত করছে এমন লাখো ইমতিয়াজদের পরিবার।

এদিকে সম্প্রতি পর পর দুই দফা হরতালে সপ্তাহের ব্যবধানে নিত্যপণ্যের দাম আবার বেড়েছে। আগামীকাল থেকে ফের টানা ৮৪ ঘণ্টার হরতাল বাজারকে আরেক দফা উসকে দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এরইমধ্যে মাছ-মাংস, কাচা সবজিসহ সব ধরণের পণ্যের দাম কিছু কিছু বাড়াতে শুরু করেছে বিক্রেতারা।

কয়েক মাস ধরে পেঁয়াজের ঝাঁঝে দিশেহারা ক্রেতা।

দাম নিয়ন্ত্রনে আনতে টিসিবি ৬৫ টাকা দরে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করলেও দাম নিয়ন্ত্রনে আসেনি। এখনো খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১০৫ এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৯৫ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে রসুনের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি ও চায়না রসুনের দাম ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়ে চায়না রসুন ৮০, দেশি ৯০, একদানা রসুন ১১০ থেকে ১২০ ও নাটরের রসুন ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ১৫ টাকার আলু বাজারভেদে ৫ থেকে ৭ টাকা বেড়ে গিয়ে ২০ থেকে ২২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কেজিপ্রতি ১ থেকে ২ টাকা বেড়েছে মোটা ও চিকন চালের দাম।

চালের দামও কেজিপ্রতি ১ থেকে ২ টাকা বেড়েছে। প্রতিকেজি ভাল মানের মিনিকেট ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা,  আটাশ ৪১ থেকে ৪২, ভাল মানের নাজির ৫০ থেকে ৫২, বাশফুল ৪৩ থেকে ৪৫, মোটা ৩৩ থেকে ৩৫, পাইজাম ৩৮ থেকে ৪০ ও পারি ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারভেদে সবজির দাম আকাশ-পাতাল তফাৎ দেখা গেছে। প্রতিকেজি পটল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, শসা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৭০, উস্তে ৮০, শিম ৬০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি ৮০, পেঁপে ১৬ থেকে ২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে মশুরডালের দাম। প্রতিকেজি মশুরডাল দেশি ১১০ থেকে ১১৫ টাকা, চিকন দানা নেপালী ১২০ থেকে ১২৫ ও মোটা ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে মুগডাল ১০০ থেকে ১২০ টাকা, এ্যাংকর ৪০ থেকে ৪৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

স্থিতিশীল আছে মাংসের দাম। প্রতিকেজি গরুর মাংস ২৮০ টাকা, ব্রয়লার ১২০ থেকে ১২৫, দেশি মুরগি ২৮০ এবং পাকিস্তানি কক ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে, কমেছে ডিমের দাম। প্রতিহালি সাদা ফার্মের ডিম ২৮ টাকা, লাল ২৬, দেশি ৩৮ ও হাঁসের ডিম ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।