দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রি করে সাড়ে সাত কোটি টাকা আয়ের পরিকল্পনা করেছে আওয়ামী লীগ। বিক্রির দ্বিতীয় দিনেও আজ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছিল ব্যাপক উত্সাহ-উদ্দীপনা। দ্বিতীয় দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৭৬ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
টার্গেট সাড়ে সাত কোটি টাকা
গত দুই দিনে মনোনয়নপত্র বিক্রি করায় দলটির আয় হয়েছে দুই কোটি ৮৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ বিষয়ে দলটির একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ‘প্রথম আলো’কে বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এ মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে সাড়ে সাত কোটি টাকা আয়।
যেভাবে মনোনয়ন ফরম বিক্রি হচ্ছে আশা করি, এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। ’
শেখ হাসিনার মনোনয়নপত্র কিনলেন আশিকুর
রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মনোনয়নপত্র কিনেছেন দলটির কোষাধ্যক্ষ এ এইচ এন আশিকুর রহমান। তাঁর মনোনয়নপত্র ক্রয়ের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় দ্বিতীয় দিনের ফরম বিক্রয় ও জমা কার্যক্রম। এ সময় রংপুর বিভাগীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই আসনে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মনোনয়ন নেওয়ায় ব্যাপক উত্সাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারও তিনি এই আসনে প্রার্থী হবেন।
দল-মতনির্বিশেষে আমরা তাঁর জয়ের জন্য কাজ করব। ’
দ্বিতীয় দিনে ৪৭৬ জনের মনোনয়ন ক্রয়
দ্বিতীয় দিনে ঢাকা বিভাগ থেকে শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মজিবুর রহমান ফকির, কামরুল ইসলাম, সানজিদা খানম, মিজানুর রহমান খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, মহিউদ্দিন মহিসহ ১২৬ জন; চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, লুত্ফুন্নাহার মুন্নী, সুজিত রায় নন্দী, শাহজাদা চৌধুরীসহ ১০৪ জন; রাজশাহী বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন-বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের ছেলে তানভীর ইমাম, শামসুল হক টুকুসহ ৫৭ জন; খুলনা বিভাগে অর্থ উপদেষ্টা মশিউর রহমান, শহিদুজ্জামান, মনোয়ারা ফারুকসহ ৫৬ জন; বরিশাল বিভাগে আমির হোসেন আমু, এ কে এম এ আওয়াল, পঙ্কজ দেবনাথ, শফিকুল ইসলামসহ ৫৩ জন; রংপুর বিভাগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মাহমুদ হাসান রিপন, মাজহারুল হক প্রধানসহ ৪৬ জন এবং সিলেট বিভাগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, জেবুন্নেসা, শামিমা শাহরিয়ার প্রমুখ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। দ্বিতীয় দিনে মনোনয়ন কিনেছেন ৪৭৬ জন। আর দুই দিনে ৩১২টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।
দ্বিতীয় দিনেও উত্সবের আমেজ
মনোনয়নপত্র বিক্রির দ্বিতীয় দিনেও ব্যাপক উত্সাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে।
সকাল ১০টা থেকেই মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা, ঢোল-তবলা ও বর্ণাঢ্য মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আসেন। এ বিষয়ে উপদপ্তর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘হরতাল নামক জনস্বার্থবিরোধী কর্মসূচি চললেও কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে উত্সাহ-উদ্দীপনার কমতি ছিল না। এবারও আওয়ামী লীগ জয়ের মুকুট ছিনিয়ে আনবে। ’
সাংসদদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ
এদিকে সাংসদদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনী এলাকায় অনুপস্থিতি, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছেন অনেক নতুন মনোনয়নপ্রত্যাশী। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা বলছেন, সাংসদেরা নিয়মিত এলাকায় যান না।
তৃণমূল নেতা-কর্মীরাও তাঁদের সমর্থন করে না। সুতরাং এবারে তাঁদের মনোনয়ন না দেওয়ার দাবি তাঁদের।
সাংসদদের আবারও প্রতিশ্রুতি
আগামীতে দলীয় মনোনয়ন পেলে এলাকাকে মডেল নির্বাচনী এলাকা এবং বিএনপি-জামায়াতের ‘অপকর্মের’ দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ার কথা বলেছেন বর্তমান সাংসদেরা। ঢাকা-১৫ আসনের সাংসদ কামাল আহমেদ মজুমদার মনোনয়নপত্র ক্রয়ের সময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘এবারও যদি দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হই—তাহলে আমার নির্বাচনী এলাকা একটি মডেল নির্বাচনী এলাকা হবে, যেন অন্য এমপিরা এটা অনুসরণ করতে পারেন। ’ পিরোজপুর-১ আসনের সাংসদ এ কে এম এ আউয়াল প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচার করার আন্দোলন আমার নির্বাচনী এলাকা থেকে শুরু হয়েছিল।
এটা যেন থেমে না যায়, তা অব্যাহত রাখব। আমার এলাকার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করব। ’
তরুণদের প্রাধান্য দেওয়ার দাবি
মনোনয়নপত্র বিক্রির দ্বিতীয় দিনেও তরুণ প্রার্থীরা সর্বাধিক মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন। তরুণদের মতে, দলের উন্নয়নের জন্য পুরোনোদের মানুষ এখন চায় না। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাসান মাহমুদ রিপন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আশা করি, তরুণদের প্রাধান্য দিয়েই মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
’ নোয়াখালী এলাকার মনোনয়নপ্রত্যাশী লুত্ফুন্নাহার মুন্নী প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘তরুণ প্রজন্ম চায় সত্, যোগ্য, স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতৃত্ব। এ ধরনের প্রার্থী মনোনয়ন দিলে সেটা দেশ ও দলের সবচেয়ে ভালো। ’
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।