একযোগে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যরা। গতকাল সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতেই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা তাদের পদত্যাগপত্র প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। তবে তাদের এ পদত্যাগপত্র ছিল তারিখবিহীন। নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মন্ত্রিসভার সদস্যরা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে পদত্যাগ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানের পর পর গত সপ্তাহেই পদত্যাগপত্র জমা দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলামসহ কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী।
মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়া হচ্ছে না। সর্বদলীয় সরকার গড়তে মন্ত্রিসভার পুনর্গঠন করা হবে। এর অংশ হিসেবেই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে সর্বদলীয় সরকারে যারা থাকবেন, তাদের পদত্যাগপত্র প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করবেন না। তাদের আর নতুন করে শপথ নেওয়ারও দরকার হবে না।
তবে যারা সর্বদলীয় সরকারে থাকবেন না, তাদের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। পরে এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী জানান, গতকাল বৈঠকের শুরুতেই মন্ত্রিসভার সদস্যরা একে একে তাদের পদত্যাগপত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাদের ধন্যবাদ জানান। একাধিক মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী জানান, পদত্যাগপত্রে তারা কেউ তারিখ উল্লেখ করেননি।
প্রধানমন্ত্রীই যথাসময়ে তারিখ বসিয়ে দেবেন। তারা আরও জানান, পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ার আগ পর্যন্ত মন্ত্রিসভার সদস্যরা তাদের নিজ নিজ দফতরে কাজ চালিয়ে যাবেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য জানান, পদত্যাগকারী মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে কয়েকজন পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পা ছুঁয়ে সালাম করেন ও দোয়া চান। এদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীও অনেকের মাথায় হাত রেখে দোয়া করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার সদস্যদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, আপনারা নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার কাজে নেমে পড়েন। এদিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভার বর্তমান কাঠামোতে এটিই হয়তো মন্ত্রিসভার সর্বশেষ বৈঠক। তিনি আরও বলেন, সর্বদলীয় মন্ত্রিসভার আকার ছোট হবে। প্রধানমন্ত্রী এ সংখ্যা এখনো বলেননি, এটি বললে প্রজ্ঞাপন খুব কম সময়েই হয়ে যাবে। নতুনভাবে যারা মন্ত্রী হবেন তাদের শপথ নিতে হবে, এরপর নতুন করে দফতরও বণ্টন হবে।
তিনি আরও বলেন, সর্বদলীয় মন্ত্রিসভা কী ধরনের কাজ করবে, কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবে কি না, সে বিষয়ে নতুন মন্ত্রিসভাই সিদ্ধান্ত নেবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সর্বদলীয় মন্ত্রিসভায় সবাইকে অফার দিয়ে রেখেছেন। সে অফার কে কে গ্রহণ করেছন সে তথ্য আমার কাছে নেই। তবে সেখানে বিভিন্ন দলের সদস্যরা থাকবেন। অন্যদিকে বর্তমান মন্ত্রিসভার শেষ বৈঠকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হওয়া নিয়ে নিজের লেখা একটি কবিতা আবৃত্তি করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।