ভারতের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভার ভোট-কাজিয়া এখন জমজমাট।
পাঁচ বছর আগের একটি অভিযোগকে প্রচারের অঙ্গ করে কংগ্রেস বিজেপির নেতা নরেন্দ্র মোদির ‘হিটলারি চরিত্র’ তুলে ধরেছে। আর এ নিয়ে কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে বিজেপি ১০ কোটি রুপির মানহানি মামলার নোটিশ দিয়েছে। আর আম আদমি পার্টি স্বাগত জানিয়েছে তাদের তহবিলের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশকে। সেই দাবিতে হাওয়া দিয়েছেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষৌ বেঞ্চ, সাধারণ তদন্তের আবেদনকে জনস্বার্থ মামলায় রূপান্তরিত করে।
নরেন্দ্র মোদির গুজরাটে ২০০৮ সালে আরএসএসের এক নেতার আত্মীয়ার ওপর সব ধরনের নজরদারি চালানো হয়েছিল। নজরদারি নিয়ে একজন পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে তখনকার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অমিত শাহর ফোনালাপ জানাজানি হওয়ামাত্র কংগ্রেস বলতে শুরু করেছে, মোদিই নাটের গুরু। নজরদারির নির্দেশ তাঁরই। কারণ, ক্যাসেটে অমিত বারবার একজন ‘সাহেব’-এর উল্লেখ করেছেন। কংগ্রেসের মতে, এমন একজন প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের নারী সমাজ আর নিরাপদ থাকবে না।
পাল্টা জবাব দিচ্ছেন মোদিও। বলছেন, দেশের নারী সমাজের জন্য তিনিই রক্ষাকবচ।
দুই দিন ধরে কংগ্রেস যখন এই প্রচারে তীব্রতা আনতে সচেষ্ট, ঠিক তখনই সোনিয়াকে বিপাকে ফেলতে তাঁর বিরুদ্ধে ১০ কোটি রুপির মানহানি মামলা ঠুকেছেন মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ও তাঁর স্ত্রী সাধনা। মধ্য প্রদেশের খবরের কাগজে যে মাপের বিজ্ঞাপন দিয়ে তাঁদের ‘সম্মানহানি ঘটানো হয়েছে’, ১৫ দিনের মধ্যে ঠিক সেই মাপের বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্ষমা না চাইলে ১০ কোটি রুপির মামলা। কংগ্রেস একটু চিন্তিত।
জমজমাট প্রচারযুদ্ধ দিল্লিতেও। বিজেপির ধারণা, আম আদমি পার্টি (এএপি) তাদের বাড়া ভাতে ছাই ফেলতে এগোচ্ছে। কংগ্রেসের সঙ্গে তাদেরও তাই ছেড়ে কথা বলছে না বিজেপি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচারই নবীন এএপি দলের মূল হাতিয়ার। তারা নির্বাচনী তহবিল গড়েছে জনগণের চাঁদায়।
এএপির ওয়েবসাইটে দাতাদের নামধাম ও দানের পরিমাণের উল্লেখ রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্ধে এক সপ্তাহ আগে ওই অর্থ সংগ্রহের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরের দিন থেকেই এএপিকে দেওয়া চাঁদার পরিমাণ সাত গুণ বেড়ে যায়। তাদের মোট সংগ্রহ ২০ কোটি রুপি ছাড়িয়ে গেছে। দলের নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালও জানিয়েছেন, দিল্লির ভোট লড়তে তাঁদের ২০ কোটিই প্রয়োজন।
অতএব, এখন আর দান চান না।
দিনে দিনে আদালত যেমন সক্রিয় হচ্ছে, তাতে বড় দলগুলোও নির্বাচনী ব্যয় নিয়ে তদন্তের মুখে পড়তে পারে। ছয়টি জাতীয় দল কংগ্রেস, বিজেপি, বিএসপি, এনসিপি, সিপিআই ও সিপিএমের নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী ২০০৪-০৫ থেকে ২০১১-১২ পর্যন্ত তাদের সম্মিলিত সংগ্রহ চার হাজার ৮৯৫ কোটি রুপি। এর মধ্যে তিন হাজার ৬৭৪ কোটি রুপির উৎসের কোনো ব্যাখ্যা নেই।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।