দিনাজপুর জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত এক সময়ের প্রমত্তা পুনর্ভবা, করতোয়া, আত্রাই, ঢেপা, তুলাই, কাঁকড়া, ইছামতি, তুলসীগঙ্গা, গর্ভেশ্বরী, ছোট যমুনার বুকে এখন চাষাবাদ চলছে। এসব নদীর শুকিয়ে যাওয়া অংশে চাষ হচ্ছে গম, ইরি-বোরো ধান, ভুট্টা, আলু, ডাল, সরিষা, কফি, মরিচসহ শীতকালীন সবজি।
জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ১৯টি নদীর দৈর্ঘ্য ৭২৪ কিলোমিটার। নদীগুলোর উৎসস্থল হিমালয় পর্বত। শুকনো মৌসুমের শুরুতে আত্রাই ছাড়া অন্য কোনো নদীতে পানি থাকে না।
দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, নদীর উজান থেকে পলি আসায় নদী-খালগুলো ভরাট হয়ে গেছে। অনেক নদী হারিয়েছে গতিপথ অথবা অস্তিত্ব। অনেক স্থানে নদী টিকে আছে নামেই। এতে দিনাজপুর এলাকার প্রায় ২০ হাজার জেলে পরিবার হারিয়েছে তাদের পেশা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুল মালেক জানান, ড্রেজিং না করায় ঢেপা নদীসহ কয়েকটি নদীর প্রস্থ ও গভীরতা কমে প্রায় সমতল হয়ে গেছে।
বর্ষা মৌসুমে পলি ও বালু পড়ে বর্তমানে নদীগুলো ভরাট হয়ে মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। নদীতে জেগে উঠা চরে চলছে চাষাবাদ।
ঘোড়াঘাট উপজেলার মহিলা নদীর দুই পাশে বোরো ধানের বীজতলা তৈরি ও ইরি-বোরো আবাদের উপযোগী করতে ওই এলাকারই কিছু অসাধু ব্যক্তি নদী ভরাটের উৎসবে মেতে উঠেছে।
বিরল উপজেলার মঙ্গলপুর, বিরল, রানীপুকুর এবং ভাণ্ডারা ইউপির ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তুলাই নদী দক্ষিণে মিলিত হয়েছে ভারতের টাঙ্গন নদীর সঙ্গে। এ নদীর পানি দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে ৫-৬ বছর আগেও এ এলাকার প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হতো।
ঢেপা নদীসহ সব নদ-নদী খনন ও অবৈধ দখলমুক্ত করে এলাকার জীবিকা হারানো জেলেসহ গ্রামীণ জীবনযাত্রাকে ধরে রাখতে সরকার ব্যবস্থা না নিলে নদ-নদী ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়বে। কারণ নদী, খাল-বিল বাঁচলে; বাঁচবে কৃষক, বাঁচবে জেলে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।