‘যাক, বাঁচলাম! পরীক্ষা আজ শেষ হবে। হরতাল তো এই দুই ঘণ্টার মধ্যে হওয়ার চান্স নেই। ’
জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার শেষ দিন আজ শুক্রবার এ কথা বলে লাফিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তাহমিদুল হক।
বেলা সোয়া একটার দিকে মিরপুর বাংলা স্কুলে পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রবেশপথে তাহমিদের পাশে থাকা সহপাঠী ফয়সল আহমেদও একই অনুভূতি জানায়। আজকের শারীরিক শিক্ষা পরীক্ষার আগে ফয়সল বলে, ‘আসলে এই পরীক্ষার চেয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে সময়মতো পৌঁছাতে পারা না-পারা নিয়েই বেশি চিন্তা হয়েছে।
একের পর এক হরতাল দেওয়ার সময় আমাদের কথা কেউ একটি বারও ভাবলেন না। ’
তাহমিদ ও ফয়সালের সঙ্গে দাঁড়ানো অন্য পরীক্ষার্থীদের অভিব্যক্তিও একই। তারা জানায়, এবার ৪ নভেম্বর পরীক্ষা শুরু হওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০ নভেম্বর। কিন্তু এ সময়ে সাত দিন হরতালের কবলে পড়ে দুই দফা পরীক্ষা পিছিয়েছে।
এ জন্য এবার শুক্রবার ছুটির দিনও পরীক্ষা দিতে হয়েছে তাদের।
জেএসসি পরীক্ষার্থী জুনায়েদ আমিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে, ‘আমাদের প্রস্তুতি বারবার নষ্ট হয়েছে। সারা বছর পড়াশোনা করে কঠিন পরীক্ষাগুলো সহজ করেছিলাম। কিন্তু হরতাল আমাদের সব ওলটপালট করে দিয়েছে। এখন রেজাল্ট খারাপ হলে দায় নেবে কে?’
জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার্থীরা স্বস্তির কথা জানালেও আসছে সপ্তাহে রাজনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়ে শঙ্কিত প্রাইমারি স্কুল সার্টিফিকেট (পিএসসি) ও ইবতেদায়ি পরীক্ষার্থীরা।
তাদের গণিত ও বাংলা পরীক্ষা যথাসময়ে হয়েছে। আসছে সপ্তাহে হরতাল-ধর্মঘট না হলে নির্ঝঞ্ঝাটে বাকি চারটি পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবে।
কাফরুলের বনফুল আদিবাসী গ্রিনহার্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের পিএসসি পরীক্ষার্থী হিমাদ্রী বড়ুয়া তার মা একই স্কুলের শিক্ষিকা মৌসুমী বড়ুয়াকে বলে, ‘আমি হরতাল কিছুই চাই না। মা, হরতাল হলে আমার সব কষ্ট নষ্ট হয়ে যাবে। ’
আগামী সপ্তাহের হরতাল-অবরোধের আশঙ্কার কথা জানিয়ে মৌসুমী বড়ুয়া বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে হরতাল না হলে পরীক্ষা চারটি ভালোভাবে হতে পারবে।
তবে এই হরতাল হওয়া না-হওয়া নিয়ে একজন অভিভাবক হিসেবে আমি উদ্বিগ্ন এবং শিক্ষক হিসেবে চিন্তায় রয়েছি। ’
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।