ভালো লাগা বা ভালোবাসার কথার সময় বাইরের সৌন্দর্য দেখার চেয়ে ছেলেদের মধ্যে কাজ করে হরমোনের নিঃসরণ। ছেলেদের চোখে মেয়েদের সুন্দর দেখানোর জন্য দায়ী এ হরমোনটির নাম ‘অক্সিটোসিন’। সম্প্রতি জার্মানির গবেষকেরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেদের বরাতে ‘ডেইলি মেইল’-এর এক খবরে বলা হয়েছে, অক্সিটোসিন নামের বিশেষ ধরনের এই রাসায়নিক যখন মানুষ নিবিড় সম্পর্কে জড়ায়, তখনই নিঃসরণ হতে পারে। সহকর্মী বা আগন্তুকদের দেখে এ হরমোনের নিঃসরণ ঘটে না।
গবেষকেরা ৪০ জন যুবক নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন। তাঁদের প্ল্যাসেবো নামের বিশেষ উদ্দীপক স্প্রে ও অক্সিটোসিন দিয়ে পরীক্ষা করানো হয়, যাতে দেখা গেছে অক্সিটোসিনের প্রভাবে ঘনিষ্ঠজনকেই বেশি সুন্দর হিসেবে মস্তিষ্ক সায় দিয়েছে।
‘প্রোসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস’ সাময়িকীতে গবেষণাসংশ্লিষ্ট নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণা নিবন্ধের প্রধান লেখক ডার্ক স্কেলি জানান, প্লাসেবোর পরিবর্তে পুরুষ যখন অক্সিটোসিন গ্রহণ করে, তখন মস্তিষ্কে পরিচিত সঙ্গীর ছবি দেখে প্রাপ্তির পদ্ধতিটি সক্রিয় হয়ে উঠতে দেখা যায়, যা অপরিচিত ছবি দেখে ঘটে না।
গবেষকেদের দাবি, নাসারন্ধ্রে অক্সিটোসিন হরমোন স্প্রে করলে যুগলের মধ্যে পারস্পরিক আকর্ষণ বাড়ে।
এর আগে অক্সিটোসিন হরমোন নিয়ে আরও গবেষণা হয়েছে। ইসরায়েলের বার-ইলান ইউনিভার্সিটির গবেষকেদের মতে, শরীরে অক্সিটোসিন হরমোনের পরিমাণ দেখেই সম্পর্কের গভীরতা ও স্থায়িত্ব জানা সম্ভব। এ হরমোনকে তাই ‘লাভ হরমোন’ বলা হয়। বিজ্ঞানীরা বলেন, মা ও সন্তানের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলে অক্সিটোসিন হরমোন। বিশেষত এ হরমোনের জন্যই মা ও সন্তানের মধ্যে সম্পর্কের গভীরতা অধিক হয়ে থাকে।
শুধু প্রেমের সম্পর্ক তৈরিতে নয়, সম্পর্কে ভাঙন বা বিচ্ছেদের ঘটনার পেছনেও এই হরমোনটি রয়েছে বলে জানান মার্কিন গবেষকেরা। যাঁদের সম্পর্ক ভেঙে যায়, তাঁদের কষ্ট বহু গুণ বেড়ে যায়। এর নেপথ্য কারণ হিসেবে মার্কিন বিজ্ঞানীরা বলছেন, অক্সিটোসিন নামের একটি হরমোনই এমন দুঃখের অনুভূতির জন্য দায়ী।
যুক্তরারে নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ফেইনবার্গ স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকদের দাবি, কোনো কষ্টের অনুভূতি বা নেতিবাচক সামাজিক অভিজ্ঞতার ফলে তৈরি ভয় ও উদ্বেগের সংবেদনশীলতাকে বাড়িয়ে দেওয়ার পেছনে অক্সিটোসিনের ভূমিকা রয়েছে। গবেষকেরা বলেন, নেতিবাচক অনুভূতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার কৌশল অবলম্বনে অগ্রগতি অর্জনের এ গবেষণার ফলাফল মানুষের জন্য সহায়ক হতে পারে।
’
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।