ওস্তাদ রশীদ খান। প্রথম তাঁর গান শুনে পণ্ডিত ভীমসেন যোশি মন্তব্য করেছিলেন, ‘হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় কণ্ঠসংগীতের ভবিষ্যৎ’। ওস্তাদ রশীদ খান নিজেকে সেভাবেই তৈরি করেছেন। বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবে গত রোববার দিবাগত রাতে তাঁর গান শুনে মুগ্ধ হয়েছেন শ্রোতারা। গতকাল সোমবার সকালে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
আমার অনুভূতিতে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব...
ভালো, খুবই ভালো। সব থেকে ভালো লেগেছে বাংলাদেশের শ্রোতাদের—এখানে এত সমঝদার শ্রোতা আছেন, সারা রাত তাঁরা গান শুনছেন, বিষয়টি আসলেই আনন্দের। এখানে উচ্চাঙ্গসংগীতের প্রতি মানুষের এমন ভালোবাসা আছে—এটা ভেবে ভালো লাগছে। এ উৎসবে গত বছরও আমি এসেছিলাম। তবে গতবারের চেয়ে এবারের ব্যবস্থাপনা আরও বেশি সুন্দর ও সুশৃঙ্খল।
আর যদি শিল্পীদের কথা বলি, নির্বাচিত সব শিল্পী এবার গান গেয়েছেন। শ্রোতারা ভালো কিছু শুনতে পেয়েছেন। তাই সব মিলিয়ে বলতে চাই, উৎসবটি ছিল মনোরম।
রশীদ খান যখন বুঝলেন তিনি শিল্পীই হবেন...
জীবনের প্রথম দিকে ভীষণ ফাঁকি দিতাম। কিন্তু যখন বুঝতে পারলাম, গানবাজনা কী জিনিস, গানবাজনা এত ভালো, তখন মুগ্ধ হয়ে গেলাম! সেটা হয়তো আমার ১০-১১ বছর বয়স থেকে।
এরপর চেষ্টা করে গেছি, চেষ্টা করতে থাকব, করছি। একজন শিল্পীর পরিচয় হলো, সব সময় তিনি মনে করবেন, তিনি এখনো শিল্পী হতে পারেননি, শেখার চেষ্টা করছেন মাত্র। আমিও তাই, আজও আমি শেখার চেষ্টা করছি।
মনেপ্রাণে শুধু উচ্চাঙ্গসংগীত...
যেদিন থেকে বুঝতে পেরেছি উচ্চাঙ্গসংগীত কী জিনিস, সেদিন থেকে এই গানে মনপ্রাণ সঁপে দিয়েছি। আর এ গান তো আমি গাই না, এটা ওপরওয়ালার দান—তিনি আমাকে দিয়ে উচ্চাঙ্গসংগীত গাওয়াচ্ছেন।
আমার হাতে কিছু নেই।
অতঃপর উচ্চাঙ্গসংগীত থেকে লঘুসংগীত...
উচ্চাঙ্গসংগীত আমার হূদয়, আত্মা এবং ভালোবাসা। আর লঘু গান গাওয়া হলো শখ। আমরা যাকে বলি লঘু বা হালকা ধাঁচের গান, উচ্চাঙ্গসংগীত না জানলে তা গাওয়া যায় না। চলচ্চিত্রে আমি গান করেছি কেন? করেছি এ কারণে যে আমার এই গান যে শ্রোতা শুনছেন, এরপর তিনি যেন আমার উচ্চাঙ্গসংগীত শুনতেও আগ্রহী হন।
আমার স্বপ্ন...
উচ্চাঙ্গসংগীতকে সব সময় আমি বর্তমান সময়ের উপযোগী করে পরিবেশন করতে চাই। আমার মনে হয়, এই শাস্ত্রীয় গানকে তরুণ প্রজন্মের উপযোগী করে গাওয়ার দরকার আছে। কোনো সময়ের ভেতর বাঁচতে চাইলে আপনাকে প্রথম ওই সময়ের তরুণদের মন বুঝতে হবে। তাই নিজের গানে সব সময় আমি এমন কিছু করতে চাই, যা লোকে পছন্দ করবে—যুগোপযোগী হবে।
বাংলাদেশের যা ভালো লাগে...
শাস্ত্রীয় সংগীতের জন্য এ দেশে এত মানুষ আছেন, তাঁরা উচ্চাঙ্গসংগীত শুনছেন, কতটা বুঝছেন—এটা বিষয় নয়, শুনছেন তো—এই ব্যাপারটি ভালো লাগে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।