এই লেখাটি সেইসব অ্যান্ডড্রয়েড প্রেমীদের জন্য যারা এখনও প্রিয় অ্যান্ডড্রয়েড ডিভাইস টি রুট করবেন কিনা তা নিয়ে উভয়সঙ্কটে পড়েছেন। আপনারা অনেকেই হয়তো রুট প্রসেস টি সম্পর্কে পরিচিত, আবার অনেকে হয়তো প্রথমবার রুট শব্দটি শুনছেন। অনেকে হয়তো পরিচিত কিন্তু রুট প্রসেসটি ভয় পান। আশা করি আজ আমার এই ছোট্ট লেখাটির মাধ্যমে আপনাদের এই বিষয়ে ধারনা পরিষ্কার হবে।
অ্যান্ডড্রয়েড ডিভাইসে রুটঃ আসলে ব্যাপার টা কি?
যদি অল্প কথায় বলি রুট ব্যাপার টি হচ্ছে আপনার প্রিয় ডিভাইসটির অ্যাডমিন প্রিভিলেজ হ্যাক করা।
হ্যাঁ, শব্দটি হ্যাক এবং রুট এর মাধ্যমে আপনি আপনি আপনার ডিভাইসটির মূল কন্ট্রোল হ্যাক করতে চলেছেন। আপনি যখন বাজার থেকে আনকোরা নতুন সেটটি কিনে আনেন তখন ব্যাপার টা এরকম থাকে যে আপনার ইউজার প্রিভিলেজ হচ্ছে গেসট ইউজার এর মত। আপনি সবকিছুই করতে পারবেন কিন্তু সিস্টেম ফাইল মডিফাই করতে পারবেন না।
রুট করবার ফলে আপনি অ্যান্ডড্রয়েড এর রুট নামক ফোল্ডার টির কন্ট্রোল নিয়ে তার সিস্টেম ফাইল পরিবর্তন করতে পারবেন এবং এর মাধ্যমে স্টক অ্যান্ডড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমটিকে আপনি পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।
রুট করার সুবিধা :
রুট করলে আপনি প্রথম যে সুবিধাটি ভোগ করতে পারছেন তা হচ্ছে যেকোনো বিশেষ অ্যাপস আপনি আপনার সেট এ ইন্সটল করে চালাতে পারবেন।
আপনি রুট করার পর ইচ্ছা হলে অপ্রয়োজনীয় সিস্টেম অ্যাপস ডিলিট করে দিতে পারবেন। ভার্চুয়াল মেমোরি বাড়িয়ে নিতে পারবেন এবং সেই সাথে অ্যাপস স্টোরের সব পেইড গেমস ও চালাতে পারবেন।
কাস্টম রম ইন্সটল :
আজকাল বিভিন্ন ফোরাম এবং ব্লগ সাইট গুলিতে গেলেই দেখা মেলে নানাবিধ অ্যান্ডড্রয়েড কাস্টম রম। সাধারণত অ্যান্ডড্রয়েড নিয়ে আগ্রহী ইউজাররাই এই সকল রম নিয়ে গবেষণা করেন। এই কাস্টম রমগুলির সবথেকে বড় সুবিধা হল এগুলি বিভিন্ন ভাবে টিউন করা যার ফলে পারফরম্যান্স স্টক রম থেকে অনেক সময় বেশ উন্নত থাকে।
অ্যান্ডড্রয়েেডর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা মানা হয় তার ব্যাটারিকে এবং কাস্টম রম অনেক সময় এই দুর্বলতা দুর করতে পারঙ্গম।
কাস্টম কারনেল ব্যবহার :
অ্যান্ডড্রয়েড ডিভাইস চালানর মূলে রম থাকলেও, কাজগুলোর কম্যান্ড করে কারনেল ফাইল। আপনি যখন আপনার ফোনে টাচ করেন বা ফোনটিকে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে ঘোরান, তখন কার্নেল নির্দেশ করে অ্যাপ্লিকেশানকে। আপগ্রেড কার্নেল ব্যবহার করে আপনার ফোনের পারফরমান্স বাড়াতে পারেন।
ব্যাটারি এবং সিপিউ স্পিড :
রুট করার পরে যদি কাস্টম রম ইন্সটল করেন তবে সিপিউ কিভাবে ব্যবহার করবেন তার কিছু অপশন পাবেন যেমন Governor, Performance ইত্যাদি।
এগুলি ব্যাবহার করলে আপনার ফোনের স্পিড সর্বনিম্ন ব্যাটারি খরচে পেতে পারেন। এছাড়া Overclock এবং Underclock এর মাধ্যমে সিপিউ স্পিড মেন্টেন করতে পারবেন। (Further reading: http://www.xda-developers.com
)
আরো কিছু অ্যাপস আছে যেগুলো দিয়ে আপনি ইচ্ছা মত সিপিউ ইউসেজ কন্ট্রোল করতে পারবেন।
• Set CPU
• No-frills CPU
• Tegrak Overlock
ইন্টারনাল Storage বাড়ানো :
যাদের ফোনে ইন্টারনাল মেমোরি কম তারা চাইলে রুট করার মাধ্যমে যেকোনো অ্যাপ্লিকেশান SD কাের্ড ট্রান্সফার করে নিতে পারবেন। কিন্তু এই কাজটির জন্য রুট করা আবশ্যক।
কিছু কিছু অ্যাপ্লিকেশান Storage ট্রান্সফার করার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা দিলেও অনেক অ্যাপস আছে যেগুলো রুট করা ছাড়া ট্রান্সফার একরকম অসম্ভব। যেমন আপনি চাইছেন আপনার সেটে জেলিবিন আপডেট করবেন কিন্তু তার জন্য আপনি সেটের ডাটা ব্যাকআপ নিতে চাইছেন। এখন আপনি যদি ব্যাকাপ নেবার জন্য কোন বিশেষ অ্যাপস ইন্সটল করতে চান তার জন্য অবশ্যই আপনার সেটটিকে রুট করে নিতে হবে।
ব্যাকআপ তৈরি :
রুট করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে ব্যাকআপ তৈরি করা যেখান থেকে আপনি পরবর্তী যেকোনো সময়ে সিস্টেম রিস্টরের মত পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারবেন। আর এটা বলা বাহুল্য যে সেট রুট না করলে আপনি কখনই সম্পূর্ণ ব্যাকআপ নিতে পারবেন না।
আর এই ব্যাকআপটি এমনই যে আপনি যে অবস্থা থেকে ব্যাকআপ নিয়েছেন পরবর্তীতে ঠিক সেই অবস্থায় ফিরে যেতে পারবেন আপনার অ্যাপ্লিকেশান সেটিংস্ সহ।
রিস্ক ইন রুটিং :
রুটিং এর রয়েছে নানাবিধ ঝামেলা এবং অসুবিধা। সাধারনত এক্সপার্টরা রুটিং করার পরামর্শ দেননা। আপনি যদি জানেন আপনার সেট রুট করা কেন দরকার, সেক্ষেত্রে আপনি রুট করার কথা ভাবতে পারেন।
ব্রিকিং অথবা ব্রিক দ্যা ডিভাইস :
আপনি যদি রুট করতে গিয়ে আপনার ডিভাইসে ভুল রম ইন্সটল করেন যা আপনার ফোনের সাথে কম্প্যাটিবল নয় বা রুট প্রসেসের কোন ধাপ অসাবধানতায় মিস করেছেন অথবা রুট প্রসেসের মাঝপথে বিদ্যুৎ বিঘ্ন ঘটলে আপনার প্রিয় সেটটি একটি brick অথবা ইটের টুকরায় পরিনত হবে।
Brick দুইভাবে হতে পারে, সফট ব্রিক অথবা হার্ড ব্রিক। সফট ব্রিকের ক্ষেত্রে তাও একটু আশা আছে, হার্ড ব্রিকের ক্ষেত্রে সেটাও ক্ষীণ।
ওয়ারেন্টি নষ্ট :
সাধারনত কোন কোম্পানি চায়না তাদের ডিভাইসটা অন্যকেও কাসটমাইজ করুক। যার কারনে ওয়ারেন্টি থাকাকালীন সময়ে রুট করলে ডিভাইসের ওয়ারেন্টি ভয়েড হয়ে যেতে পারে।
স্লো স্পিড :
স্পিড বাড়ানো যদিও রুট করা মূল উদ্দেশ্য, তারপরও অনেক সময় ডিভাইসের সমস্যার কারনে রুট করার ফলে স্পিড কমে যেতে পারে।
এছাড়া ভাইরাস নামক যন্ত্রণাতো আছেই। কিন্তু কিছু পেতে গেলে কিছু ছাড় তো দিতেই হয়।
এছাড়া সবসময় মোবাইল ও ইন্টারনেটের খুটিনাটি জানতে এ পেজ ক্লিক করুন। হয়ত পেয়ে যাবেন আপনার প্রত্যাশিত অজানা তথ্যটি এবং আপনার জানা বিষয়টিও এ পেজ এ শেয়ার করলে আমরা অনেকেই উপকৃত হতে পারি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।