কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া রাজ্যের মনোরম এক দ্বীপশহর ভ্যানকোভার। এই দ্বীপেই ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রকৃতিপ্রেমীদের আকৃষ্ট করে চলেছে বুটচার্ট গার্ডেন। বাগানটির উদ্যোক্তা রবার্ট পিম বুটচার্ট ছিলেন মূলত একজন সিমেন্ট উৎপাদনকারী শিল্পপতি। সিমেন্ট তৈরির অন্যতম উপাদান চুনাপাথরের সন্ধানে রবার্ট পিম বুটচার্ট তার স্ত্রী জেনী বুটচার্টকে নিয়ে কানাডার পশ্চিম উপকূলে আসেন। ভ্যানকোভার দ্বীপে এসে তারা এতটাই মুগ্ধ হন যে, এখানেই তারা বসত গড়ে তোলেন।
১৯০৯ সালে চুনাপাথর উত্তোলন প্রায় শেষ হয়ে এলে স্ত্রী জেনী বুটচার্ট এলাকাটিতে একটি বাগান গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। প্রায় এক যুগের প্রচেষ্টায় ১৯২১ সালে তিনি সম্পন্ন করেন মনোরম এই বাগান তৈরির কাজ। বাগানসংলগ্ন বাড়িটির নাম রাখেন বেনভেনুটো, ইতালীয় এই শব্দের অর্থ স্বাগতম? আর সেই থেকেই বংশ পরম্পরায় বুটচার্ট পরিবার বাগানটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে চলেছেন যা বছরে প্রায় ১০ লাখ পর্যটকের পদভারে মুখরিত থাকে। বর্তমানে বাগানটির একটি অংশে রয়েছে শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা। ৩০ ধরনের জীবজন্তু নিয়ে অন্যদিকে গড়ে তোলা হয়েছে একটি চিড়িয়াখানা।
বাগানের অন্যতম আকর্ষণ মনোমুঙ্কর বেশ কিছু ঝরনা। আর গোলাপপ্রেমীদের জন্য রয়েছে নানা জাতের গোলাপের এক রঙিন জগৎ। বাগান তৈরির শুরু থেকেই স্ত্রী জেনি বুটচার্ট যখন নানা প্রজাতির গাছ, লতা আর গুল্ম সংগ্রহে ব্যস্ত ছিলেন তখন স্বামী বুটচার্ট মনোনিবেশ করেন দেশ-বিদেশের পাখি সংগ্রহে। আর পাখিদের জন্য তখন থেকেই গড়ে তোলা হয় নিরাপদ আবাসস্থল। তারই ফলশ্রুতিতে ময়ূর, টিয়া, কবুতর ও হাঁসসহ নানা প্রজাতির কলকাকলিতে বছরজুড়ে মুখর থাকে বাগানটি।
অন্যদিকে ব্রোঞ্জসহ নানা প্রকার মূল্যবান ধাতু এবং অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে বাগানটিতে গড়ে তোলা হয়েছে হরেক রকম ভাস্কর্য। বছরজুড়েই নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এ বাগানে। বাগানটি কানাডার ঐতিহ্যেরই একটি অংশ হয়ে আছে। তাই কানাডা সরকার বাগানটিকে জাতীয় ঐতিহ্যের ধারক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।