যারা মা হতে চলেছেন প্রথম মাসে যখন তাদের মাসিক বন্ধ হয় এবং গর্ভকালীন শারীরিক পরিবর্তনগুলো পরিলক্ষিত হতে থাকে তখন তারা ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। ডাক্তার মায়ের সঙ্গে কথা বলে এবং পরীক্ষা করে প্রসবের সম্ভাব্য একটি তারিখ দিয়ে দেন। এ তারিখটি হবে মহিলাটির শেষ মাসিকের প্রথম দিন থেকে ৯ মাস ৭ দিন অর্থাৎ ৪০ সপ্তাহ পরে। যেমন কারও শেষ মাসিকের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি হলে তার সম্ভাব্য প্রসবের তারিখ হবে অক্টোবরের ৮ তারিখ।
প্রিটার্ম লেবার : যদি কোনো কারণে ৩৭ সপ্তাহের আগে প্রসব বেদনা ওঠে, তবে তাকে Pre term labour আর যদি সম্ভাব্য প্রসবের তারিখ পার হওয়ার দুই সপ্তাহ পরও প্রসব বেদনা না ওঠে তবে তাকে Post term pregnancy বলে।
প্রিটার্ম লেবার-এর কারণ : পুষ্টিহীনতা, রক্তশূন্যতা, Preeclampsia, গর্ভকালীন সময়ে রক্তপাত হওয়া, জরায়ুর মুখের শিথিলতা, জরায়ুর যে কোনো জন্মত্রুটি, ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, যে কোনো Infection বা সংক্রমণ, জ্বর, ডায়রিয়া, Appendicitis, বার বার প্রস্রাবের ইনফেকশন বা Urinary tract infection. এ ছাড়া যমজ শিশু, গর্ভের বাচ্চাটির কোনো রূপ জন্মগত ত্রুটি, শিশুটি কোনো কারণে পেটের ভেতরে মারা গেলে Preterm labour pain হতে পারে।
ব্যথা শুরু হয়েছে কিনা তা কিভাবে বোঝা যাবে?
যদি ৩৭ সপ্তাহের আগে প্রতি ১০ মিনিট অন্তত একবার বা প্রতি ঘণ্টায় চারবার বা তার বেশি জরায়ুর সঙ্কোচনের ফলে তলপেটে ব্যথা অনুভূত হয়, পাশাপাশি কোমরে ব্যথা হয়, রক্ত ও পানি মিশ্রিত স্রাব যায় এবং Pre vaginal examination করে যদি দেখা যায় জরায়ুর মুখটি দৈর্ঘ্যে ছোট এবং কিছুটা নরম হয়ে খুলে গেছে তবে ধরে নেওয়া যেতে পারে এটি হয়তো সময়ের আগের ব্যথা। অনেক সময় দেখা যায়, প্রসব ব্যথা বা labour pain ওঠার আগেই গর্ভ ঝিল্লি বা Membrane টি ফেটে যায় এবং বাচ্চাটি জরায়ুর ভেতর যে তরলে ডুবে থাকে তা বের হয়ে আসে। ইনফেকশন, Multiple Pregnancy, Polyhydramnios বা তরলের পরিমাণ বেশি থাকা, জরায়ুর মুখের শিথিলতার কারণে এরকম ঘটতে পারে।
সাধারণত ৩৭ সপ্তাহের পরে যদি গর্ভ ঝিলি্ল ফেটে যায়, তবে শতকরা ৮০ থেকে ৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রসব বেদনা শুরু হয়ে যায়।
তবে গর্ভ ঝিলি্ল আগে ফেটে গেলে ইনফেকশন এবং বাচ্চার নাড়িটি আগে বের হয়ে গিয়ে জটিলতা তৈরির ঝুঁকি থাকে।
প্রোস্ট টার্ম প্রেগনেন্সি : Delivery-র জন্য নির্ধারিত তারিখের দুই সপ্তাহ পরও যদি বাচ্চা Delivery না হয় তবে তাকে Post term pregnancy বলা হয়। এটি অনেক ভাবে হতে পারে। যেমন- মা যদি তার শেষ মাসিকের তারিখটি ঠিকমতো মনে না রেখে থাকেন, বেশি বয়সে যদি প্রথম মা হন, পরিবারে বা তার নিজের যদি এর আগে Post term pregnancy এর হিস্টোরি থাকে, বাচ্চাটির যদি জন্মগত কোনো ক্রটি থাকে তবে প্রসব ব্যথা উঠতে দেরি হতে পারে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায় মায়ের ওজন আর না বেড়ে স্থির আছে বা কিছুটা কমেও যেতে পারে।
জরায়ুর উচ্চতা এবং liquor বা পানির পরিমাণ কমে যেতে পারে এবং সবুজ হলুদ বর্ণ ধারণ করে নির্দেশ করে পেটের বাচ্চাটি হয়তো খারাপ আছে। এ ধরনের pregnancy তে বাচ্চাটির দৈর্ঘ্য ও ওজন বেশি হয়। বাচ্চার মাথাটি তুলনামূলক শক্ত, চামড়া পাতলা, নখগুলো বড় থাকে। বাচ্চা জন্মানোর পর ইনফেকশনসহ শ্বসনতন্ত্রের জটিলতায় ভুগতে পারে, বাচ্চার শরীরে glucose এর পরিমাণ কমে যাওয়ার মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে।
লেখক : গাইনি বিশেষজ্ঞ, পূরবী'স হেলপ ডেস্ক,
ই-মেইল : dr.purabi@yahoo.com
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।