আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মেয়ে হলেই কি ধর্ষিতা হতে হয়?????

ধরুন আপনি একজন মেয়ে। আপনাকে এক নরপশুর ভালো লাগলো- তাই সে আপনাকে ধর্ষন করে দিলো। এ ধর্ষনের অপরাধী কে জানেন? আপনি নিজেই! তথাকথিত একটি সমাজের মতে, আপনি মেয়ে মানুষ। আপনি কেন নিজেকে বাঁচিয়ে চলতে পারলেন না? আপনি কেন সারা শরীর আলকাত্রা দিয়ে ঢেকে চললেন না? কেন আপনি খোলা চুলে শাড়ির আঁচল উড়িয়ে রাস্তাঘাটে চলাফেরা করলেন? তাই আপনাকে ধর্ষন করা তো পুরুষদের জন্মগত অধিকার? আচ্ছা- ধর্ষন করা যদি পুরুষদের জন্মগত অধিকার হয়, তাহলে ব্যাংক ডাকাতি করা তো ডাকাতদেরো জন্মগত অধিকার! ধরুন, একটি কাচের দেয়ালের তৈরী ট্রান্সপারেন্ট ব্যাংক। ব্যাংকের প্রতিটি দেয়াল স্বচ্ছ।

রাস্তা থেকে দাড়িয়েই লকারের সব টাকা দেখা যাচ্ছে। তেমন একটা নিরাপত্তাও নাই। কি করবেন তখন? কি আর করবেন- নগদে সেই ব্যাংক লুট করবেন। এটা তো আপনার জন্মগত অধিকার! দোষ তো আর আপনার না। দোষ হচ্ছে সেই ব্যাংক মালিকের, যে কিনা ব্যাংকটাকে আলকাত্রা দিয়ে না ঢেকে উলঙ্গ করে রেখেছিলো।

সুতরাং আসল অপরাধী হচ্ছে ঐ ব্যাংক মালিক। আপনি হচ্ছেন সম্পূর্ন নির্দোষ! তাই না? যদি কেউ উলঙ্গ থাকলে- সেটা তাকে ধর্ষিত হবার জন্য প্রলুব্ধ করে, তাহলে রাস্তাঘাটে যে এতো পাগল/পাগলী ন্যাংটা হয়ে চলাফেরা করে তাদের কেউ গনধর্ষন করে না কেন? তখন তো দেখি উল্টা ঘটনা ঘটে। যারা পাগলীদের উলঙ্গ দেখে, তারাই লজ্জা পেয়ে মাথা নামিয়ে চলে যায়। কিন্তু কেন? আমরা এমন এক সমাজ ব্যবস্থা তৈরী করেছি যেখানে নারীদের শুধু ভোগের পণ্য হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। শেভিং ক্রিমের বিজ্ঞাপনে পর্যন্ত নারীরা ভোগের পণ্য! আমাদের স্মৃতিশক্তি তো দেখা যায় গোল্ড ফিশের চেয়েও দুর্বল।

হতেই হবে- আমরা আবার শেলফিস প্রজাতী কিনা! আমরা পুরুষেরা খুব সহজেই ভুলে যাই যে, আমাদের জন্ম হয়েছে কোন না কোন নারীর কাছ থেকেই। আমরা বিয়েও করবো কোনো না কোনো নারীকে। বোন হিসেবেও কিন্তু আমরা পাই সেই নারীকেই। আমাদের সন্তান হলেও- সেখানে ৫০% সম্ভাবনা আছে কন্যা সন্তানের পিতা হবার। সুতরাং আমরা নারীদেরকে কেন তাদের প্রাপ্য সম্মান দিবো না? আমাদের নিজের মা-বোন-স্ত্রী-কন্যা কে কেউ যদি ধর্ষন/ইভ টিজিং করে আমাদের কি রকম লাগবে? খুব কষ্ট হয় অপ্র্রাপ্ত বয়স্ক অবুঝ একটা মেয়েকে যখন দেখি তার বাবার সমবয়স্ক লোকের কাছে ধর্ষিতা হতে হয়, নিজের বাচ্চা মেয়েটার চেহারা কি তার সামনে আসেনা? নিজেকে শালীনতার মধ্যে রেখে চলার কথা মেয়েদেরকে অবশ্যই বলব তবুও বলছি-হ্যাঁ হতেই পারে, আপনার সামনের মানুষটি একজন চরিত্রহীনা।

তাই বলে আপনি চরিত্রহীন কেন হবেন? এটা শুধুমাত্র কোনো নির্দিষ্ট স্থান নয়, বরং সবার জন্য প্রযোজ্য! আর যারা কঠোর আইনের দোহাই দিয়ে পার পেতে চান। তাদের জন্য জেনে রাখা ভালো- আইনের হাত বিশাল লম্বা হলেও। আইনের পা কিন্তু ব্যাপক ছোট। তাই আইন কখনো সময়মত অপরাধস্থলে পৌছুতে পারে না। সবচেয়ে বড় আদালত হচ্ছে, মানুষের বিবেক।

সুতরাং নিজের বিবেককে জাগ্রত করতে হবে.... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.