আজকে শনিবার। সপ্তাহের ব্যস্ততার শুরু। শুক্রবার দিন ছুটি কাটিয়ে শনিবার অফিস আসতে খুব আলসেমি লাগে। কিন্তু দায়িত্ব বলে কথা। দায়িত্বকে কোনোভাবেই এড়ানো যায় না।
প্রফেশনাল লাইফটাই এমন। অনেক কিছু মেইনটেন করে চলতে হয়।
আমাকে এখন যেতে হবে জাভেদের রুমে। একটা পেপার ওকে করেছি সেটা দিয়ে আসতে হবে। জাভেদ কী আজ অফিসে এসেছে! ওর সাথে তারপর আর কোনো যোগাযোগ হয়নি।
তবে ছুটি কাটিয়ে আজই তার অফিসে জয়েন করার কথা।
জাভেদ তার কক্ষে ছিলো না। তবে সে অফিসে এসেছে। আমি পাশের ডেস্কে জিজ্ঞেস করে জানতে পারি। সুতরাং তার আসার অপেক্ষায় বসে রইলাম।
সে নাকি মনির স্যারের রুমে গিয়েছে। মিনিট পাঁচেক পর সে এই কক্ষে প্রবেশ করে।
‘কেমন আছ, কৃপা। ’
‘ভালো’। বলে পেপারটা তার দিকে এগিয়ে দেই।
। ও একনজর চোখ বুলিয়ে ফাইলে দেখে দেয়। আমি তাকে মনে করিয়ে দেই, ‘পেপারটা কিন্তু আজই ফজলু স্যারের কাছে পৌঁছাতে হবে। ’
‘আমি খানিক পরেই যাচ্ছি। ’
‘তা ইলোরা এখন কেমন আছে।
আর বাবুই বা কেমন। ’
‘আছে। দুজনই ভালো আছে। ’
‘ঠিক আছে। আপনি আপনার কাজে মনোনিবেশ করুন।
পরে আলাপ হবে। ’
জাভেদের রুম থেকে আমি আমার রুমে চলে আসি। আজকে আমার কাজের চাপ তুলনামূলকভাবে কম। অবশ্য কোনো দায়িত্ব পড়তেও বেশি সময় লাগে না। তাই এই ফাঁকা সময়টায় ইন্টারনেট ব্রাউজ করছি।
লাঞ্চ আওয়ার একটায়, এখন বাজছে বারোটা। বাকি সময়টা এভাবেই কাটিয়ে দেবো। ভাবছি আজকে জাভেদের সাথে লাঞ্চ সারবো কিনা। উনি যদি বলেন তাহলে না হয় যাবো। এই অলস সময়টাতে আইরিনের সাথে কথা বলা যায়।
আমি সেলফোনটা হাতে নিয়েছি আর তখনি জাভেদের কল।
‘হ্যালো। ’
‘কৃপা, শোনো আমি একটু বাসায় যাচ্ছি। ’
‘কেন কী হয়েছে। ’
‘ঠিক বুঝতে পারছি না।
অফিসে আসার পর থেকে ইলোরার নাম্বারে কল দিচ্ছি। ও কল রিসিভ করছিলো না। একটু আগে কল দিয়েছি দেখি মোবাইল বন্ধ। ’
‘হয়তো ঘুমিয়ে আছে। মোবাইলে চার্জ শেষ তাই সেটি আপনাতেই বন্ধ হয়ে গেছে।
আপনি এতো অস্থির হচ্ছেন কেন!’
‘কখনো তো এমন হয়নি! আর ওতো সকালে আমার সাথেই ঘুম থেকে উঠলো। তাছাড়া একবারের বেশি দু’বার কখনো হয়নি আমার কল রিসিভ করতে। আমি সেই নটা থেকে ওকে টানা কল দিয়ে যাচ্ছি। ’
‘আচ্ছা, আপনি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তারপর আবার ট্রাই করুন। ’
‘কৃপা, আমার না খুব টেনশন লাগছে।
’
‘অযথা টেনশন করবেন না তো। টেনশন করার মতো কিছুই হয়নি। দেখবেন, খানিক পর ওই আপনাকে ফোন করবে। ’
‘তাই যেন হয়। ঠিক আছে কৃপা, এখন রাখছি।
তুমি বোধহয় ব্যস্ত ছিলে। ’
‘না তেমন কিছু না। ’
‘আরেকটা কথা, পেপারটা ফজলু স্যারের রুমে দিয়ে এসেছি। ’
‘স্যার কিছু বলেছেন। ’
‘না আমাকে তেমন কিছু বলেননি।
’
‘ওকে। বাই। ’
নাহ্ , আইরিনকে আর কল করা হলো না। আমাকে এখন যেতে হবে ফজলু স্যারের রুমে। উনি আমাকে তলব করেছেন।
পেপারে আবার কোনো সমস্যা হলো কিনা বুঝতে পারছি না। তবে জাভেদের উপর আমার আস্থা আছে। ও ভালো ভাবে নিরীক্ষা করেই নিশ্চয়ই স্যারের হাতে দিয়েছে।
অযথা দুঃশ্চিন্তা করছিলাম। পেপারে কোনো সমস্যা হয়নি।
উনি একটা শিপমেন্টের ব্যাপারে আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন। স্যারকে সন্তুষ্ট করেই আমি তার রুম থেকে বেরিয়ে আসছি। লাঞ্চ আওয়ার হয়ে গেছে। জাভেদ তো লাঞ্চের ব্যাপারে কিছু বললো না। ওকে আর এ ব্যাপারে ফোন দিতে ইচ্ছে করছে না।
আমি বরং সেরে আসি। আমার ডেস্কে এখন আর ফিরে যাবো না। লাঞ্চ করে একেবারে আসবো।
আমাদের অফিসের দুটো বিল্ডিং পরেই ভালো মানের একটি রেস্টুরেন্ট আছে। আমার অনেক সহকর্মীই এখান থেকে লাঞ্চ সেরে যায়।
কেউ কেউ এখান থেকে ফুড আইটেম কিনে অফিসেই লাঞ্চ করে নেয়। আমার ওতো ঝামেলা ভালো লাগে না। ভরপেট খেয়ে এখানে কিছুক্ষণ বসে অফিসে ফিরি।
আজ রেস্টুরেন্টে জুনিয়ার এক সহকর্মীর সাথে এক টেবিলে বসি। মেয়েটি নতুন জয়েন করেছে।
মেয়েটির নাম অ্যামি। অ্যামির সাথে অনেক গল্পগুজব হলো। অফিস আওয়ার শুরু হলে আমাদের টনক নড়ে। আমাকে সে কোনোভাবেই বিল পরিশোধ করতে দিবে না। একসাথেই আমরা অফিসে ফিরে এসেছি।
আমি এসে বসেছি আমার ডেস্কে। ভোজন ক্রিয়ায় কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা বুঝতে পারছি না। পেটটা কেমন হাসফাঁস করছে। ভাবছি পরবর্তী আধাঘণ্টা কেউ ডেকে পাঠালেও এখান থেকে উঠবো না। ঠিক তখনি জাভেদের কল আসে।
‘কৃপা তুমি কী আমার বাসায় এখন একটু আসতে পারবে!’
‘আপনি কোথায়!’
‘আমি বাসায় এসেছি। ’
‘বাসায় গিয়েছেন, জানাননি তো!’
‘জানানোর মতো অবস্থা আসলে ছিলো না। ’
‘কী হয়েছে, খুলে বলেন তো!’
‘তুমি এক্ষুণি বাসায় আসো। তারপর এসে দেখো। প্লিজ কৃপা।
’
‘আচ্ছা আমি আসছি। ’
সিরিয়াস কিছু হয়েছে কিনা। জাভেদের ভয়ার্ত কণ্ঠ, অনুনয় বিনয় শুনে তো তাই মনে হলো। আমি এখনি যেতে মনস্থির করি। কিন্তু একটা ভুল হয়ে গেছে।
আমি তো জাভেদের বাসার ঠিকানা জানি না। ওকে আবার ফোন করে জেনে নেবো কিনা ভাবছি। পরে মনে হলো বোঝাই যাচ্ছে কোনো ব্যাপারে ও চরম উত্তেজিত এবং উদ্বিগ্ন। এমন অবস্থায় ফোন করে বাসার ঠিকানা জিজ্ঞেস করাটা ঠিক হবে না। বিকল্প কী পন্থা, সেটাই ভাবছি।
উপায় একটা পেয়ে যাই। আমি তো আইরিনের কাছ থেকে ওদের বাসার ঠিকানা নিতে পারি। আমি সাথে সাথে আইরিনকে কল করি।
‘হ্যালো আইরিন। ’
‘আপু, কেমন আছ?’
‘হ্যাঁ ভালো।
আচ্ছা তুমি তোমাদের বাসার ঠিকানাটা আমাকে বলো তো। ’
আইরিন যা বলেছে আমি কাগজে তা লিখে নিয়েছি। আইরিনকেও বলি, এখন নয় আমি তোমার সাথে পরে আলাপ করবো। আমাদের ডিভিশনের যিনি হেড আনিস স্যারকে বলে তক্ষুণি অফিস থেকে বেরিয়ে যাই।
বনানী পৌঁছাতে আমার মিনিট চল্লিশের মতো সময় লাগে।
রিকশায় উঠেছি। রিকশা চালককে বাসার ঠিকানা ভালোভাবে বুঝিয়ে বলেছি। তারপরও পথে দু’একজনকে জিজ্ঞেস করে বাসার লোকেশন সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হলো।
জাভেদ হয়তো আমার অপেক্ষাতেই ছিলো। কলিংবেল বাজানোর সাথে সাথেই দরজা খুুলে দেয়।
ওর চোখ দুটো রক্তিম লাল। ওকে এমন দেখাচ্ছে যেন ও কাউকে খুন করতে যাবে। ওর এইরূপ দেখে আমি নিজেই ভয় পাচ্ছি। নাকি আবার আমার উপরই হামলা করে বসে। ভয়ে ভয়ে উনাকে জিজ্ঞেস করি, ‘জাভেদ ভাই, কী হয়েছে!’ এর কোনো উত্তর না দিয়ে জাভেদ আমাকে সরাসরি তাদের বেডরুমে নিয়ে যায়।
ছোট্ট শিশুটি বিছানায় শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে আছে। জাভেদ ড্রেসিং টেবিলের উপর রাখা একটি চিরকুটের দিকে ইঙ্গিত করে। আমি সেটা হাতে তুলে নেই। ও ভাঁজ খুলে আমাকে পড়তে বলে। অনুমতি পেয়ে আমি পড়া শুরু করি।
জাভেদ,
এটা সত্য আমি তোমার সাথে প্রতারণা করেছি। তবে আমিও যেমন পরিস্থিতির স্বীকার ঠিক তেমনি তুমিও। ঐদিন রাতে সত্যিই আমি মল্লিকার কাছে এসেছিলাম। এবং ঠিকানা ভুল হওয়াতে চলে আসি তোমার ফ্ল্যাটে। আমি কেন মল্লিকার এখানে আসতে চেয়েছিলাম সেটাই এখন বলবো।
এটাও সত্য যে আমার বাবা-মা আমাকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলো। তাদের ঐ পছন্দনীয় পাত্রের সাথে। আর পাত্রটি সম্পর্কে আমি তোমাকে বলেছিলাম। সুতরাং ওকে বিয়ে করা ছিলো আমার জন্য অসম্ভব। অসম্ভব ছিলো আরেকটি কারণে যেটি তোমাকে বলিনি।
আমি হচ্ছি কামনার দেবী। যদি আমার সাথেই তুমি প্রথম মিলিত হও তবে বুঝবে না। কিন্তু যদি পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে বুঝবে দেবী আর মানবীর সাথে মিলিত হওয়ার পার্থক্যটা। আমি উদ্দাম যৌনজীবন উপভোগ করতে চেয়েছি। আমি আমার বন্ধুদের সাথে গ্রুপ সেক্সে আসক্ত হয়ে পড়েছিলাম।
সুতরাং আমি বিয়ের কথা ভাবতে পারিনি। আর গৎ বাঁধা দাম্পত্য জীবন আমার কখনোই ভালো লাগবে না। সুতরাং সিদ্ধান্ত নেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যাবার। বন্ধুদের সাথে উদ্দাম জীবনের নেশায় পাড়ি জমাই তাদের সাথে। তারা আমাকে নিয়ে আসে যশোরে।
মিথ্যা পরিচয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়ে ভালোই উপভোগ করছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে টের পাই তাদের দুরভিসন্ধির কথা। তারা আমাকে পাচার করতে চেয়েছিলো ভারতে। তখন আর আমার করার কিছু ছিলো না। বাবা-মার কাছে ফিরে যাবার মতো কোনো অবস্থাও নেই।
নোয়াখালী গিয়ে কারো কাছে আশ্রয় নেবো এমন কাউকেও খুঁজে পাইনি। তাছাড়া যেটি মহাবিপদ হিসেবে আবির্ভূত হয়। আমি প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়ি। সুতরাং আÍীয়-স্বজন কেউই আমাকে ঠাঁই দিবে না। তারপর ঢাকায় আমার বান্ধবী মল্লিকার কথা মনে পড়ে।
ওর ওখানেই কিছুদিন আশ্রয় নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওর যে ঠিকানা আমি সংগ্রহ করেছিলাম সে অনুযায়ী এসে ওকে আর পেলাম না। পেয়েছি তোমাকে। যে করেই হোক যেখানেই হোক আমাকে একটা আশ্রয় খুঁজে নিতেই হবে। তুমি আসলেই মহৎ হৃদয়ের অধিকারী।
আমাকে আশ্রয় দিলে। এই আশ্রয়টা কিভাবে দীর্ঘস্থায়ী করা যায় সেটাই ভাবতে শুরু করি। ঐ রাতের ঐ ঘটনাই সে পথ সুগম করে দেয়। মানে যে রাতে আমরা মিলিত হয়েছিলাম। হ্যাঁ জাভেদ, যে শিশুটি এখন তোমার বিছানায় শুয়ে আছেÑ তোমার ঔরসজাত নয়।
আমি আপাতত বাবা-মার কাছে ফিরে যাচ্ছি। আমি তাদেরকে ম্যানেজ করতে পেরেছি। তারা আমাকে গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। তোমার সাথে আমার সারাজীবন কাটানো সম্ভব হলো না, হবেও না। কারণ তোমাতে আমি আর সন্তুষ্ট হতে পারছি না।
আর আমার সন্তুষ্টি কারো প্রতি বেশিদিন থাকেও না। মোদ্দা কথা তোমার কাছে থাকার আমার আর কোনো প্রয়োজন নেই।
জাভেদ, তবে এতটুকু বলবো, তুমি অনেক অনেক ভালো। আর তুমি ভালো বলেই আমি তোমাকে ব্যবহার করতে পেয়েছি । কী করবো বলো, এছাড়া তখন আর কোনো উপায় ছিলো না।
তাছাড়া বাচ্চাটাকে আমি নষ্ট করে ফেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তুমি তো দিলে না।
আরেকজনের কথা বলবো—আইরিন। সেও অনেক ভালো মেয়ে। আমি অযথাই ওর উপর রুক্ষ্ম হয়েছি।
নির্যাতন করেছি। এতটা না করলেও চলতো। কী করবো বলো, আমি যে খারাপ একটি মেয়ে। অতীব খারাপ মেয়ে। শিক্ষাতো একবার পেলাম হয়তো ভবিষ্যতে আবারও পেতে হবে।
সেই অপেক্ষাতেই থাকবো। তবে তা এড়ানোর জন্য চেষ্টাও করে যাবো। হয়তো আমি পারবো। কারণ খারাপ মেয়েরা সবই পারে।
আর কী বলবো! এতটুকুই বলার, তোমার জীবনে যে নারী আসবে সত্যিই সে অনেক সুখী হবে।
তুমিও যেন তাকে নিয়ে সুখী হও। হয়তো আশা করছÑ আমি সবশেষে তোমার কাছে ক্ষমা চাইবো। কিন্তু না, খারাপ মেয়েরা কখনো কারো কাছে ক্ষমা চায়না। যদি চায়, সেটাও ওদের অভিনয়। তোমার সাথে আর কত অভিনয় করবো! তুমিই বলো।
ভালো থেকো।
শুভ কামনায়
ইলোরা
(প্রকৃত নাম নয়)
জাভেদ রাগে গরগর করছে। আমি তাকে শান্ত হতে বলি। কিন্তু বললেই কী আর এমন ঘটনায় শান্ত হওয়া যায়! আমি চিন্তা করছি এই শিশুটিকে নিয়ে। অবুঝ, কয়েকদিন বয়সী এক শিশুÑ এর যতœ কে নিবে! একে তো বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
কিন্তু ওর যতœ নেওয়ার মতো এ বাড়িতে আর কেউ নেই। জাভেদের উপর আস্থা রাখা যাচ্ছে না। যা করার আমাকেই করতে হবে। আমাকেই সবকিছু সামাল দিতে হবে। এহেন পরিস্থিতিতে আমাকে মাথাঠাণ্ডা রাখতে হবে।
তাৎক্ষণিক কিছু সুদূর প্রসারী এবং বিজ্ঞ সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
‘জাভেদ, আপনি এই শিশুটিকে নিয়ে কি করতে চান?’
‘ওকে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে দিবো। ’
‘মাথা গরম করবেন না, প্লিজ। ওর তো কোনো দোষ নেই। আপনাদের জীবনে যা কিছু ঘটেছে তার জন্য ও কোনোভাবেই দায়ী নয়।
ওকে আপনি কেন শাস্তি দিতে চান! আমি আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করছিÑ আপনি কী ওর দায়িত্ব নিতে চান?’
‘না, ওতো আমার কেউ নয়। আরেকজনের ভুল, প্রায়শ্চিত্ত, প্রতারিত বা সন্তুষ্টির ফসল আমি বয়ে বেড়াতে পারবো না। আর ইলোরার কোনো স্মৃতিচিহ্ন আমাকে তাড়িয়ে বেড়াবে আমি তা চাই না। এই শিশুর কোনো দায়ভার আমি নিতে চাই না। ’
‘তাই যদি হয় তবে আপনাকে এখন দুটি কাজ করতে হবে।
প্রথমটি এই শিশুটিকে রানীকুঠি অনাথ আশ্রমে রেখে আসবেন। আর দ্বিতীয় হচ্ছে আইরিনের কাছে ক্ষমা চেয়ে তাকে রানীকুঠি থেকে এ বাড়িতে ফিরিয়ে আনবেন। ’
রক্ত গরম চোখেই জাভেদ আমার দিকে তাকায়। তবে তা ক্রোধে নয়, কৃতজ্ঞতায়।
‘এক্ষুণি যান।
আমি অপেক্ষা করছি। ’
মাস চারেক পরের কথা। আইরিন আজকে বেজায় খুশি। খুশির কারণ তো বেশ কয়েকটি। তবে এই মুহূর্তে যে দুটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্যÑ ইতালি থেকে তার আপু মানে জাভেদের বড় বোন আসছে।
জাভেদ, কৃপা, আইরিন তিনজনই এখন এয়ারপোর্টে যাচ্ছে। আর তার আপুর দেশে আসার যেটি প্রধান উপলক্ষ্যÑ আগামী শুক্রবার জাভেদের বিয়ে। পাত্রী কে হতে পারে অনুমানে ঘাম ঝরার কথা নয়। ট্যাক্সি ক্যাবে যে মেয়েটি জাভেদ ও আইরিনের মাঝে বসে দুজনের হাত ধরে রেখেছেÑ সেই প্রাণোচ্ছল মেয়েটিই। আইরিনের খুশির অন্য কারণগুলো তো তার পাশে থাকা এই মেয়েটি হতেই উদ্ভূত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।