বাংলা আমার...................
আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক জনাব আশরাফুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে হাসি মুখে ব্যাঙ্গাত্বক কিছু কথা বললেন। চমৎকার কথা তবে তার শব্দ চয়ন ছিলো ঠিক রাস্তার টোকাই স্বরুপ। খালেদা জিয়া কি ধরনের কাপড় পরে কোথায় যাবেন তা কি সরকারকে বলে যেতে হবে?? তিনি সেজেগুজে বের হবেন নাকি জিন্সপ্যান্ট পরে পিস্তল কোমরে গুজে বের হবেন তা আশরাফ বলে দেয়ার কে? সামান্য ভদ্রজ্ঞান যার নাই তিনি এতোবড় একটা দলের সাধারন সম্পাদক এবং দেশের সবচেয়ে বড় মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী!!
বিরোধীদলের লংমার্চ নিয়ে ব্যঙ্গ করলেন আশরাফ, বললেন কোন মার্চই দেখেননি! আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় ক্যাডার বাহিনী দিয়ে দেশ অবরুদ্ধ করে রেখে এতো বড় কথা বলতে এতোটুকু লজ্জাও করেনা এসব নেতাদের!!
নৈতিক ভাবে লংমার্চ কর্মসূচি সফল হয়েছে বললে ভুল হবে বলে মনে হয়না। প্রত্যেকটা পয়েন্টে লীগ ক্যাডার ও আওয়ামী পুলিশ লীগ দিয়ে ঘিরে অত্যাচার করে সাধারন খেটে খাওয়া মানুষকেও ঢাকা ঢুকতে না দিয়ে বিএনপির লংমার্চ ব্যর্থ হয়েছে বলে গলা ফাটানো মানে নৈতিক পরাজয় বলেই ধরে নেয়া যায়। এক্ষেত্রে গৌরবিত হবার কোন কারন নেই, এটা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার নাম মাত্র।
বিরোধী দলের মিছিল মিটিংএ আওয়ামী লীগের এতো ভয় কেন? তাহলে তারা মুখে যা বলে অন্তরে তা বিশ্বাস নেই বলেই ধরে নেয়া অন্যায় হবে কি?
ডিএমপি যে কারনে বিএনপির সমাবেশের অনুমতি দেয়নি সেখানে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সরকারী দল পুলিশ, র্যাব নিয়ে সমাবেশ করলো তার অনুমতি কি ডিএমপি দিয়েছিলো!! তারা কি অনুমতি নিয়েছিলো? যদি অনুমতি না নিয়ে থাকে তবে কেন পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি, বরং দেখা গেছে পুলিশ,র্যাব ও আলীগ ক্যাডারের মধ্যে কোন পার্থক্য ছিলোনা সব যেন আওয়ামী লীগের দলীয় ক্যাডারে পরিনত হয়ছে। শান্তিপূর্ণ অবস্থানে পুলিশ ও দলীয় ক্যাডার যেভাবে মারমুখি আচরন করছে তা টিভিতে দেখে অতংকিত হয়েছে সাধারন মানুষ।
দেশের সাধারন নাগরিকের জান,মাল রক্ষার কথা বলে বর্তমানে যা করা হচ্ছে তাতে একটা প্রশ্ন মাথায় আসা স্বাবাভিক তা হলো, যারা আওয়ামী সমর্থন করে তারাই শুধু দেশের নাগরিক বাকি সব দেশের শত্রু বা দুষ্কৃতিকারী। সরকারী দলের নেতাদের কথায় বোঝা যায় বর্তমানে আওয়ামী লীগ ছাড়া বাকি সব মানুষ বাংলাদেশের নাগরিক নয়।
টিভিতে দেখলাম সাধারন মানুষ রাস্তায় নামতে পারছেনা, দিন মজুর যাদের হাতে ছিল কোদাল-সাজি বা টিফিন ক্যারিয়ার, যারা বেড়িয়েছিল কাজের খোঁজে তাদেরকেও ঢুকতে দেয়া হচ্ছেনা।
হাসপাতালের কার্ড দেখানোর পরও ঢুকতে দেয়া হয়নি কিন্তু তার আপনজন হাসপাতালে ভর্তি তার হাসপাতালে যাওয়া খুব জরুরী। এসব ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের নেতা গং হাসি মুখে ক্যামেরার সামনে নির্লজ্যের মতো বড় বড় কথা বলেন কি করে? এরা দেশের মানুষকে আর কতো বলদ ভাববেন? এদের বোধদয় আর কবে হবে!!!
যারা পুলিশ ও ক্যাডার পরিবেষ্ঠিত না হয়ে রাস্তায় বের হতে সাহস পায় না তারা দাবি করে জনগন তাদের পক্ষে!! যারা ১৫৪ জন সাংসদ ভোট বিহিন নির্বাচিত করেন দেশের অর্ধেকের বেশি সংখ্যক জনগনের ভোটের অধিকার বঞ্চিত করেন তারা দাবি করে জনগন তাদের পক্ষে!! কি নির্মম রসিকতা করছেন জনগন নিয়ে!!
জনতা যদি সব আপনাদের হয় তবে এতো ভয় কেন পাচ্ছেন? স্বাভাবিক নির্বাচন দিয়ে প্রমান করুন জনগন আপনাদের পক্ষে আছে এতে কিসের ভয় আপনাদের!!
বিরোধী আন্দোলন,অবরোধ,হরতাল নিয়ে আবেঘন বক্তৃতা দেন নিয়মিত, মানুষের দুর্দশার কথা বলেন সব সময় আর গত ২ দিন যাবত আপনারাই অবরোধ বা হরতাল দিয়ে দেশ অচল করে বসে আছেন। এখন আপনাদের বিবেক, আবেগময় ভাষন কোথায় গেল! সব কি খোয়ার বন্দি করে রাখছেন!! গত ২ দিন কি জনগনের কষ্ট হচ্ছেনা? এতে কি দেশের ক্ষতি হচ্ছেনা? দিন মজুর খেটে খাওয়া মানুষের ঘরে ঘরে কি সরকার খাদ্য পৌছে দিয়েছেন?
এমন স্ববিরোধী আচরনেও যার তৃপ্তি লাভ করেন তাদের মুখে কি বড় বড় কথা মানায়? এমন দ্বিমুখি আচরন কি গনতান্ত্রিক বলা চলে? এটা কেমন গনতন্ত্র তা আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে বুঝতে পারছিনা।
বিরোধী দলের প্রধানকে রাজপথে নামতে সরকার প্রধান আহবান করলেন আর আজ যখন তিনি রাজপথে নামতে চাইলেন তখন তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হলো কি কারনে? কেন তার বাসা ঘিরে আছে পুলিশ ও র্যাব? বালু ভর্তি ট্রাক এনে বিরোধী দলের বাসার সামনে এনে ব্যারিকেট দেয়ার মতো হাস্যকর কাজও আজ দেখতে পেলাম!! এটা কি ট্রাক ভরা গনতন্ত্র? ট্রাকের হেলপার ড্রাইভারকে প্রশ্ন করা হলে বললো যে আমরা বালু ও পাথর নিয়ে যাচ্ছিলাম পুলিশ আমাদের ধইরা নিয়া এইখানে নিয়া আইসা চাবি নিয়া গেছে!! এটাকে কি ধরনের গনতন্ত্র বলা উচিত??
প্রধানমন্ত্রীত্বের, বা ক্ষমতার লোভ নাই শুধু মুখে বললেই কি প্রমানিত হয়? যদি তাই হয় তবে ক্ষমতা ছেড়ে নির্বাচন দিতে কেন এতো ভয়!! যেহেতু মুখে বলেছেন কোন লোভ নাই সেহেতু এর প্রমানের দায়িত্ব যিনি বলেছেন তার। প্রমান করুন আপনার এসবের প্রতি কোন লোভ নাই।
যদি প্রমান করতে পারেন তবে জনগন আপনাকে মাথায় তুলে রাখবে আরো অনেক অনেক বছর।
জনগনকে বলদ ভাবেন তার আরেকটা উদাহরন হলো আমাদের প্রধানমন্ত্রী ইদানিং বার বার বলছেন ১/১১ এর ভূত আবার অনতে চায় বিরোধী দল! আজব কথা ১/১১ এর পর তিনি বলেছিলেন ১/১১ আমাদের আন্দোলনের ফসল!! এখন হঠাৎ সেই ফসল খারাপ হলো কিভাবে? আপনি নিজে যে ফসল বুনলেন গত ৫ বছর যে ফসল দলবল নিয়ে খাইলেন এবং তৃপ্তি নিয়েই খাইলেন আর বদ হজম হলো ৫ বছর পর!! এমন স্ববিরোধী কথা বাংলার মানুষ বুঝেনা মনে করলে মহা ভুল করবেন। এই ভুলটা দয়াকরে আর করবেন না, বাংলার মানুষকে আর বলদ ভাববেন না দয়াকরে।
পদ্মা সেতুর দুর্নিতীর অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে আছে তারা প্রধানমন্ত্রীর কেউ না বলে নিজেই ঘোষনা করলেন কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম যার জনসভায় যার জন্য ভোট চাইতে দাড়িয়ে এসব কথা বললেন সেই নিক্সন চৌধুরী পদ্মা সেতু দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত একজন!! এ যেন ভূতের মুখে রাম নাম। আপনার যদি কেউ না হয় তবে এদের নমিনেশন কেন দিলেন আবার ভোট চাইতেও বা কেন গেলেন? মানুষকে আর কতো বোকা ভাববেন বলবেন কি??
যুদ্ধাপরাধী বিচার বাংলার মানুষের প্রানের দাবি এর বিচারের জন্য ধন্যবাদ তবে পক্ষপাতহীন বিচার দেখতে চায় জনগন।
আপনার দলে যুদ্ধাপরাধী রয়েছে এবং আপনি অনেককেই মন্ত্রী করছেন এটা কি আপনার দ্বিমুখী আচরন নয়? আপনি বলেছেন "ইঞ্জি:মোশারফ" ৭১ এ রাজাকার ছিল তবে যুদ্ধাপরাধী ছিলেন না! কি আজব কথা রাজাকার ছিল আবার যুদ্ধাপরাধী ছিলোনা কিভাবে সম্ভব!! একজন রাজাকারের ছেলের সাথে নিজ কন্যাকে বিয়ে দিতে আপনার চেতনায় একটু আঘাতও করলোনা!! আপনার চেতনার ভেতরেই বিশাল ফাঁকা রয়েছে এখানে তাই কি প্রমান করেনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?? আপনাদের মতের মিল হলে রাজাকার হয়ে যাচ্ছে দেশপ্রেমিক ক্ষেত্র বিশেষ মুক্তিযোদ্ধা আর মিল না হলে বীর মুক্তিযোদ্ধাও হয়ে যাচ্ছে রাজাকার! কি চমৎকার বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকি আপনার কাছে এখন রাজাকার আর মোশারফ, মখা আলমগীর গং এখন মুক্তিযুদ্ধের বড় ধারক ও বাহক!! শুধু এ দুজন নয়, আপনার দলে এই নির্বাচনে আপনি নমিনেশন দিয়েছেন এমন প্রায় ২ ডজন প্রার্থী আছেন যাদের নাম যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় রয়েছে এবং অনেকে প্রহসনের নির্বাচনে ইতিমধ্যেই জয়ী হয়েছেন!! এরা কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক ও বাহক!! এদের বিচার কি আপনি করবেন? যদি এদের বিচারের আওতায় আনেন তবে খোদার কসম ক্ষমতা আপনার খুজতে হবে না বরং ক্ষমতা আপনাকে খুজে নিবে।
যুদ্ধাপরাধীদের গাড়ীতে জাতীয় পতাকা দিয়ে বিএনপি অপরাধ করেছে তা ১০০% সত্য, কিন্তু রাজাকারকে প্রার্থী করে মন্ত্রী বানিয়ে আপনিও পতাকা দিয়ে কি অপরাধ করেননি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী? বিএনপির সাথে আপনিও কি সমান অপরাধ করেননি? নিজের ঘারের এ দায় আপনি কিভাবে এড়িয়ে যাবেন? কিভাবে আপনি শুধু বিএনপিকে দোষারপ করবেন!! আপনার নিজের দায় মুছবেন কেমন করে? যুদ্ধাপরাধীদের গাড়ীতে জাতীয় পতাকা দিয়ে বিএনপির সাথে আপনিও সমান অপরাধ করেছেন এবং এর দায় আপনি কোন ভাবেই এড়িয়ে যেতে পারেন না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। শুধু মুখের কথায় এখন আর চিড়ে ভিঁজে না কাজেও প্রমান করতে হয়। চেতনা চেতনা বলে চিৎকার করলেই চেতনাধারী হওয়া যায় না, চেতনা হৃদয়ে ধারন করতে হয় পালন করতে হয় এবং অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করতে হয়।
আপনাদের মতের মিল না হলে সে হয়ে যায় রাজাকার তাই আমি জানি আমাকেও ঐ নামেই গালাগালী করবে আপনার কতিপয় পেইড দালাল ব্লগার, যদিও আমার বাবা ও তার ৩ ভাইসহ ৪ জনই মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় যোদ্ধা ছিলেন এবং আমার জন্মও মহান স্বাধীনতার বেশ কয়েক বছর পর।
চাটুকার পরিবেশিষ্ঠ হয়ে আত্মতৃপ্তিতে ভুগবেন না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এই চাটুকার দালাল গং আপনাকে সঠিক তথ্য জানতে দিচ্ছেনা। এরা সবাই আপনাকে অন্ধকারে রেখে নিজ নিজ আখের গুছাতে ব্যস্ত, যার প্রমান তাদের সম্পদের দিকে তাকালেই পরিস্কার হয়ে যায়। এদের বিশ্বাস করে নিজেক জনবিচ্ছিন্ন করবেন না। জাতীর জনকের হত্যাকান্ডের পর প্রতিবাদ করার জন্য তখন এদের কেউ সামনে আসেনি,অনেকে ৭৫ এ উল্লাস করছে যে জালিমের পতন হয়েছে বলে। কেউ কেউ অনন্দ মিছিল করেছে মিষ্টি বিতরন করেছে কেউ কেউ জাতীর জনকের চামরা দিয়ে ডুগডুগিও বাজিয়েছে, এখন তারাই বড় আওয়ামীলীগার ও বড় বড় নেতা ও প্রভাবশালী মন্ত্রীও বটে!!
বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে প্রতক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে এরা অবশ্যই দায়ি, এরা সঠিক পরিস্তিতি বঙ্গবন্ধুকে কৌশলে জানতে দেয়নি যার পরিনাম ৭৫ এ আপনি হাড়িয়েছেন আপনার সব কিছু।
ওরা কিন্তু কিছুই হারায়নি বরং কেউ কেউ পুরুস্কৃত হয়ছিলেন মোস্তাক সরকারের মন্ত্রী সভায়, আর কেউ কেউ বিদেশ পালিয়ে আয়েসি জীবন যাপন করেছেন। কিন্তু সারা জীবন কাঁদছেন আপনার ২ বোন।
এদের বলয় থেকে আপনি বেরিয়ে আসেন এবং বাস্তব পরিস্তিতি নিজ চোখে দেখুন, এতে আপনার লাভ ছারা ক্ষতি হবেনা নিশ্চিত।
চোখ খুলুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সময় ফুড়িয়ে যায়নি এখনো.....এখনো অনেক সময় পরে আছে আপনার সামনে।
ইতিহাস বড় নিষ্ঠুর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আর ইতিহাসে দু'ভাবে স্থান করে নেয়া যায় ১)মীর জাফর হয়ে ২)সিরাজুদদৌলার মতো দেশ প্রেমিক হয়ে।
দুটো পথ আপনার সামনে খোলা আছে, এখন আপনি কোন পথ ধরে হাটতে চান তা একান্তই আপনার বিষয়। শুধু মনে রাখতে হবে ইতিহাস কখনো কাউকে ক্ষমা করেনি আর আগামীতে ক্ষমা করবে না।
......................................................................................
...............................................
........................
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।