জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের হালনাগাদ তথ্য যাচাই করে দেখা যায়, চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি প্রায় ১০ গুণ বেড়েছে। আর পুরো অর্থবছরের চেয়ে বেড়েছে পাঁচ গুণ।
শুধু নভেম্বর মাসেই গত অর্থবছরের পুরো সময়ের সমান বিক্রি হয়েছে।
ব্যাংকগুলোর আমানতের সুদের হার হ্রাস এবং পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিনের মন্দার কারণে মানুষ এখন সবচেয়ে ‘নিরাপদ বিনিয়োগ’ সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকেছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।
অর্থনীতিবিদ জায়েদ বখত বলছেন, “রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং হল-মার্কসহ ব্যাংক খাতের নানা কেলেঙ্কারির কারণে মানুষ এখন আর বিনিয়োগে কোনো ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না।
”
সঞ্চয় পরিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা।
গত বছরের এই পাঁচ মাসে বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩৮৫ কোটি টাকা, পুরো অর্থবছরে ছিল ৭৭২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
এর আগের অর্থবছরে (২০১১-১২) ৪৭৯ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল।
নভেম্বর মাসে নিট বিক্রি দাঁড়িয়েছে ৬৭০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। গত বছরের নভেম্বরে এই বিক্রি ছিল ১২৬ কোটি ১০ লাখ টাকা ঋণাত্মক (-)।
অর্থ্যাৎ ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে যতো টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল তার থেকে ১২৬ কোটি ১০ লাখ টাকা বেশি সুদ-আসল বাবদ শোধ করতে হয়েছিল।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুলাই-নভেম্বর সময়ে যেসব সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে তার ৮০ শতাংশই পরিবার সঞ্চয়পত্র। ১৫ শতাংশ পেনশনার সঞ্চয়পত্র। বাকি ৫ শতাংশ অন্যান্য সঞ্চয়পত্র।
ফরাসউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ব্যাংকগুলো তাদের আমানতের সুদের হার কমিয়েই চলেছে।
শেয়ার বাজারের মন্দা কাটেনি। সে কারণে মানুষ একটু বেশি মুনাফার আশায় সঞ্চয়পত্র কিনছে।
“এটা একটা ভালো দিক। প্রয়োজন হলে সরকার এই খাত থেকে ঋণ নিয়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালু রাখতে পারবে। গত দুই-তিন বছরের মতো ব্যাংক ঋণের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভর করতে হবে না।
”
সাবেক গভর্নর বলেন, সাধারণত মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তরা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে থাকে। এই সরকার আসার পর পরিবার সঞ্চয়পত্র ফের চালু করে। এর সুদের হার অন্যান্য সঞ্চয়পত্রের চেয়ে বেশি।
“সে কারণেই এই সঞ্চয়পত্রের বিক্রি বেশি হচ্ছে। ”
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।