সিমিকে মনে আছে? ঢাকার মেরাদিয়াতে ছিল সিমিদের বাসা। সিমি পড়ালেখা করত নারায়ণগঞ্জ চারুকলাতে। কিন্তু ওকে প্রায়ই দেখতাম ঢাকা ইউনিভার্সিটি চারুকলা অঙ্গনে। বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিত। কপালে বড় টিপ পরত।
খুব মিস্টি মুখ ছিল সিমি মেয়েটার। তখন ২০০০ সাল হয়তো।
নারায়ণগঞ্জ চারুকলাতে ক্লাস করে, ঢাকার চারুকলার দিকটাতে আড্ডা দিয়ে প্রতিদিন সিমি ফিরে যেত বাসায়, ঢাকার মেরাদিয়ায়। মেরাদিয়া তখনো কিছুটা উপশহর। প্রতিদিন রাতে, বাসায় ফেরার পথে, মেরাদিয়ার কিছু ছেলে সিমিকে উৎপাত-অত্যাচার করত।
দিনে দিনে অত্যাচারের সীমানা ছাড়িয়ে যাচ্ছিল, ফলে, সিমির পক্ষ থেকে থানায় জিডিও করা হয়েছিল। এজন্যে সিমির বাবা-মা'ও সিমিকে হয়তো ভর্ৎসনা করেছিল। একদিন, সেই ছেলেদের উৎপাতে অসহ্য হয়ে বাসায় ফিরে ছোট্ট একটা চিরকুট লিখে বিষ খেয়ে মরে গেল সিমি। ঢাকার পত্রিকায় প্রায় তিনমাস টানা লেখালেখি হলো সিমিকে নিয়ে। পরে, সিমির বাবা-মা'রও মেরাদিয়ায় নিজেদের বাড়িতে থাকা দায় হয়ে গেল।
সিমির আরেকটা বোন ছিল। এটুকু পর্যন্ত সবাই জানল। এরপর আর জানা হলো না। তখন তো আর ফেসবুক-ব্লগ-ওয়েভের দিন আসেনি। তাই সিমিকে হয়তো আজকের অনেকেই চিনবে না।
সিমির কোনো ছবিও কখনো দেখিনি ফেসবুক-ব্লগে। সিমির বন্ধুরা চাইলে ওর দুএকটা ছবি আপলোড দিতে পারেন। সিমিকে নিয়ে দু'চার কথা লিখতেও পারেন। অবশ্য এই অসহায় দেশে কত সিমি মরে গেল, কত সিমি মরে যাচ্ছে প্রতিদিন। কত আর লেখা হবে? তবু চাই, কেউ লিখুক ওকে নিয়ে, কেউ ওর ছবি আপলোড করুক ইন্টারনেটে।
শুধু সিমি কেন, যে কোনো অসহায় মানুষের পাশেই দাঁড়াক আমাদের ব্লগার-বন্ধুজনেরা। কিছুটা কাজ হয়ই, মনে হয়।
এটা সত্য, এক নষ্ট সামাজিক প্ররোচনায় সিমিকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছিল। আমি সিমিকে চিনতাম। স্বপ্নভরা চোখে সিমি আর্টিস্ট হতে চেয়েছিল... ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।