আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুই বছরে রাজধানী ঢাকা হবে ফ্লাইওভার নগরী

ঢাকা হবে ফ্লাইওভারের নগরী। আরও নতুন চারটি ফ্লাইওভার (উড়াল সড়ক) নির্মাণের কারণে বদলে যাবে মেগাসিটি ঢাকার অবয়ব। নগরবাসী মুক্তি পাবেন অসহনীয় যানজটের যন্ত্রণা থেকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সাধারণ মানুষকে আর পড়তে হবে না ভোগান্তিতে। মহানগরী ঢাকার আধুনিকায়নে নতুনভাবে চার জায়গায় নির্মাণ করা হবে চারটি ফ্লাইওভার।

এমনটাই বললেন নির্বাচনী সরকারের যোগাযোগমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়ামের অন্যতম সদস্য ওবায়দুল কাদের। তিনি গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে আগামী দিনের কাজের ফিরিস্তির বর্ণনা দিয়ে বলেন, 'আমাদের সরকার পুনরায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণের পর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুরু করবে চার ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ। যোগাযোগ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় পৃথকভাবে বাস্তবায়ন করবে এসব ফ্লাইওভার। আমাদের সরকার যখন যেসব অঙ্গীকার করে অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করে তা। এবারও এর ব্যত্যয় ঘটবে না।

'

এদিকে ত্রিমুখী জটিলতায় আটকে গেছে নির্মাণাধীন রাজধানীর মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের কাজ। আর এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে নির্মাণস্থলের চারপাশের তিন সেবা সংস্থার অসহযোগিতার কারণে। এসব সেবা সংস্থার মধ্যে রয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, ঢাকা ওয়াসা ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কমিশন লিমিটেড (বিটিসিএল)। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তিন সংস্থার সার্ভর্িস লাইন সরিয়ে না নেওয়ার কারণে তিন সেবা সংস্থার সঙ্গে এলজিইডির শুরু হয়েছে ত্রিমুখী জটিলতা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ৭৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার কাজটির বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)।

এটি নির্মিত হলে কমে যাবে রাজধানীর যানজট। দুটি রেলক্রসিংয়ের ওপর দিয়ে আড়াআড়ি নেওয়া হবে ফ্লাইওভারটি। তিনটি ভাগে নির্মাণ হওয়া এ ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য হবে ৮ দশমিক ২৫ কিলোমিটার। এটি মগবাজার এলাকায় গিয়ে ত্রিতলবিশিষ্ট হবে। এ ছাড়া চারদিকে থাকবে আটটি লুপ।

২০১১ সালের ৮ মার্চ একনেকের সভায় ৭৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে চার লেনবিশিষ্ট মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে দুই বছর। ঢাকা মহানগরীর তেজগাঁও, সাতরাস্তা মোড়, এফডিসি মোড়, মগবাজার, হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল, বাংলামোটর, মৌচাক, মালিবাগ, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, চৌধুরীপাড়া ও শান্তিনগর চৌরাস্তা পর্যন্ত বিস্তৃত হবে এটি। জানতে চাইলে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) নাজমুল আলম সেবা সংস্থার অসহযোগিতার কথা স্বীকার করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ চলছে কয়েকটি ভাগে।

কাজের গতি বাড়ানোর জন্য সেতু এলাকার তিতাস, ওয়াসা ও টেলিফোন সংস্থার সার্ভিস লাইনগুলো অপসারণ দরকার ছিল। আমরা এসব সেবা সংস্থার সহযোগিতা সেভাবে পাইনি। ফলে কিছুটা মন্থর হয়ে গেছে কাজের গতি। কাজের গতি বাড়ানোর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এরই মধ্যে নেওয়া হয়েছে। ' নতুন চারটির মধ্যে রয়েছে জিপিও থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া পর্যন্ত ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ; গাবতলী থেকে আজিমপুর পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ; গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ; এবং হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বারিধারা পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার।

প্রতিটি সেতুতে থাকবে ডাবল লেন। পাশাপাশি চলাচলের জন্য থাকবে সাড়ে ৩ ফুট দীর্ঘ ফুটপাত। চার ফ্লাইওভার নির্মাণ করা গেলে মহানগরীর দীর্ঘ দিনের যানজটের দুর্ভোগ ও ভোগান্তি অনেকটা কমে আসবে বলে মনে করছেন নগর-বিশেষজ্ঞরা। বহুল প্রত্যাশিত এসব ফ্লাইওভার নির্মিত হলে ঢাকার উপকণ্ঠের মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, গাজীপুর, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলার সঙ্গে রাজধানী ও পাশর্্ববতী জেলা-উপজেলার যোগাযোগ সহজ হবে। পাশাপাশি কেরানীগঞ্জ, রূপগঞ্জ, সোনারগাঁ, টঙ্গী, শ্রীপুর, সাভার, উত্তরা, মিরপুর, বনানী, গুলশান, বারিধারা, রামপুরা, বাড্ডা, মহাখালী, তেজগাঁও ও বনশ্রী এলাকার অসহনীয় যানজট চিরতরে লাঘব হবে।

মাত্র দেড় থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে সরাসরি রাজধানীতে আসতে পারবেন ফরিদপুর, শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জের বাসিন্দারা। পাশাপাশি গাজীপুর ও উত্তরার বাসিন্দারা মতিঝিল এলাকায় যেতে পারবেন ২০ মিনিটের মধ্যে। দ্রুতগামী যানবাহন চলাচলের জন্য তৈরি করা হবে এসব ফ্লাইওভার। এমনকি বন্দরনগরী চট্টগ্রামের পথে যে কোনো যানবাহন বিনা বাধায় চলাচল করতে পারবে ঢাকার বাইপাস দিয়ে।

 

 



সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/index.php     দেখা হয়েছে ২০ বার     বুকমার্ক হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।