আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বেলভিউ কেবিন ৬-বি

সুচিত্রা সেন এখন বেলভিউ হাসপাতালে। তার কেবিন নাম্বারটা জানেন? নাম্বারটা হচ্ছে_ ৬-বি।

এটা শুধু একটা নাম্বারই নয়। একটা ঘটনাও বটে।

সুচিত্রা বলেছেন, 'বেলভিউয়ের এই কেবিন থেকে কলকাতা শহরটা ভালোভাবে দেখা যায়।

'

এই ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি যতবার অসুস্থ হয়েছেন ততবার এই কেবিনে উঠেছেন। কিন্তু কেন?

একটু ফ্ল্যাশব্যাকে যেতে হচ্ছে।

১৯৬৬ সালের ঘটনা। নায়ক উত্তম কুমার প্রযোজিত হিন্দি ছবি 'ছোটি সি মুলাকাত' সুপার ফ্লপ। দেনার দায়ে জড়িয়ে গেলেন উত্তম।

কলকাতায় ফেরার পথে বিমানে করলেন হার্ট অ্যাটাক। বিমান ল্যান্ড করতেই তাকে দ্রুত বেলভিউ হাসপাতালের ৬-বি কেবিনে ভর্তি করানো হয়। এ ঘটনার সময় সুচিত্রার সঙ্গে উত্তম কুমারের দ্বন্দ্ব তুঙ্গে। ১৯৬২ সাল থেকে তারা একসঙ্গে অভিনয় করা বাদ দিয়েছেন। কিন্তু উত্তম কুমারের অসুস্থতার কথা শুনে অস্থির হয়ে গিয়েছিলেন সুচিত্রা।

তিনি ছিলেন মুম্বাইতে 'মমতা' ছবির শুটিংয়ে। তাই আসতে পারেননি উত্তম কুমারকে দেখতে। তবে ফোন করে ডাক্তারের কাছ থেকে সব খবর নিতেন। ঘটনাটি তখন আলোড়ন তুলেছিল।

এরপর উত্তম কুমার সুস্থ হয়ে ফিরলে সুচিত্রার সঙ্গে দেখা হয়।

সম্পর্ক আবার আগের মতো হয়ে যায়। দুজন মিলে অভিনয়ও শুরু করেন।

এরপর ১৯৭৫ এবং ১৯৮০ সালে উত্তম কুমার আরও দু-বার হার্ট অ্যাটাক করেন। দু-বারই তিনি বেলভিউ হাসপাতালের ৬-বি নাম্বার কেবিনে ভর্তি হন। ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই উত্তম কুমার মারা যান।

ভেঙে পড়েন সুচিত্রা। এরপর তো আর বেশিদিন ছবিও করেননি তিনি। আর উত্তম কুমারের মৃত্যুর পর সুচিত্রা যতবার অসুস্থ হয়েছেন ততবারই ভর্তি হয়েছেন বেলভিউ হাসপাতালে এবং অবশ্যই ৬-বি নাম্বার কেবিনে।

সুচিত্রা সেন এখনো বেলভিউ হাসপাতালের ৬-বি নাম্বার কেবিনে। এখানেই তার চিকিৎসা চলছে এখন।

কিন্তু কেমন আছেন তিনি?

এ প্রশ্নের উত্তরে চিন্তিত সবাই। কখনো তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, পরক্ষণেই আবার হচ্ছে অবনতি। চিকিৎসকরাও আছেন চিন্তার মধ্যে। তবে শুক্রবার তিনি একটু সুখ বোধ করেন। তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে দেখতে গিয়েছিলেন।

কিন্তু তাকে দেখে চিনতে পারছিলেন না সুচিত্রা। মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতালে তার কক্ষে ঢুকে সামনে দাঁড়াতেই সুচিত্রা প্রশ্ন করলেন, তুমি কে? এরপর ডাক্তাররা তাকে জানালেন, মমতা দি আপনাকে দেখতে এসেছেন। এ কথা শোনার পর সুচিত্রা আবেগজড়িত কণ্ঠে মমতাকে লক্ষ্য করে বললেন, তুমি আমার কে হতে?

প্রায় আড়াই ঘণ্টা হাসপাতালে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি হাসপাতালে থাকার সময় সুচিত্রার রক্তে অঙ্েিজনের মাত্রা কিছুটা বাড়ে এবং তার আচ্ছন্ন ভাবটাও কেটে যায়। এক পর্যায়ে তিনি নিজে চেয়ারে বসতে চান, সময় জানতে চান।

তিনি কিছুক্ষণ মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে থাকেন। মমতা তাকে বলেন, 'আপনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন। খিচুড়ি খেতে ভালোবাসেন তো! সুস্থ হয়ে খিচুড়ি খাবেন!'

সুচিত্রা বলেন, 'খিচুড়ি না, ফুচকা খেতে ইচ্ছে করছে। '

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.