রংপুর আদালত পাড়ায় যারা নিয়মিত তারা ‘ফড়িয়া’ শব্দটির সঙ্গে খুব পরিচিত। এটার একটা বাহারি ইংরেজী নামও আছে- টাউট। ভাবার্থটা নেতিবাচক হলেও তারা নিজেদের জনতার সেবক বলেই দাবি করে। আপনি কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করতে চান, ঠিক কোন উকিলের কাছে গেলে কাজ হবে তারা বলে দেবে, নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে তার কাছে নিয়ে যাবে। মিথ্যা স্বাক্ষী দরকার? নো প্রবলেম! তারা মাথায় ব্যান্ডেজ বেধে আপনার বাবা সেজে কাঠগড়ায় দাড়িয়ে কোরআন ছুয়ে শপথ নিয়ে বলবে প্রতিবেশীর ৭ বছরের ছেলে হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে ঢিল ছুড়েছিলো।
বলা চলে কোর্টকাচারিতে ভিড় করে থাকা জনতার ষাটভাগই এই সম্প্রদায়ের সেবক। এটা একটা অর্থকরী শ্রমবাজার।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশের টপ কর্পোরেটটির নাম জামায়াতে ইসলামী। কোটি কোটি টাকা এদের মার্কেটে। ধর্মের আফিমের পিনিক বাড়াতে তারা এটাকে পরিবেশন করছে বাহারি মোড়কে, সুদৃশ্য প্যাকেজে।
তাই সত্যিকার আলেমদের হটিয়ে তাদের ক্যানভাসাররাই পপুলার। এই পন্যের সঠিক বিপনন ও প্রসারেই নির্ভর করছে তাদের অস্তিত্ব। কিন্তু বনেদী সেই ব্যবসা বাঁচাতে এখন পাগলপারা অবস্থা, অতীতের পাপ যে তাদের বাপকে ছাড়ছে না। তা থেকে রক্ষা পেতেই ধান্দাবাজ বাঙালীর একটি কর্মঠ ও পরিশ্রমী প্রজন্ম তারা তৈরি করেছে। মিথ্যাচার যদি শিল্প হয় তাহলে তার মনযোগী ছাত্র এরা।
তোতাপাখীর মতো এরা মুখস্ত মিথ্যাসাক্ষ্য দিয়ে যায় নানা মাধ্যমে, কনফিডেন্টলি। তৈরি করে মিথ্যা পরিচিতি, মিথ্যা চরিত্র, বিলীন হয়ে যায় মিথ্যা স্বত্বায়।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে নানা বিষয়ে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ এই মুহূর্তে এগিয়ে আছে এই একটি ক্ষেত্রে। অনলাইন ফড়িয়াবাজি। বিশাল এই শ্রমবাজার তৈরির কৃতিত্বটা জামাতে ইসলামী আনলিমিটেডের।
খোলামকুচির মতো টাকা ঢেলে নিয়োগ দেওয়া ফড়িয়ারা নট নেসেসারিলি তাদের রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী কিংবা বিশ্বস্ত। কিন্তু টাকার জন্য সব পারি এই অ্যাটিচুডে বিবেক ভুলে,আত্মা বিক্রি করে এরা দিনরাত পতিতার মতো সেবা দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন জন্ম নিচ্ছে নতুন নতুন ফেসবুক পেইজ, দুই দিনেই লাইকার দশ হাজার! সেখানে ধর্ষিতা হচ্ছে দেশ, চেতনা, ইতিহাস, সংস্কৃতি। তবে সমৃদ্ধ হচ্ছে ফড়িয়ারা। দিনে দিনে বাড়ছে তাদের সংখ্যা, কম্পিটিশন হচ্ছে নিজেদের মধ্যে।
সেইসঙ্গে বাড়ছে উন্মত্ততা, সত্য বলতে ও মানতে ভুলে যাচ্ছে তারা লোভী উন্মাদনায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।