রহস্য
পদার্থের তিনটা অবস্থার কথা সকলে আমরা জানি।
১. কঠিন
২. তরল
৩. গ্যাসীয়।
মাঝে মাঝে চতুর্থ অবস্থা প্লাজমা অবস্থার কথাও শুনি। এই সব অবস্থার সবগুলোই মেনে চলে পদার্থবিজ্ঞানের সব নিয়ম। কিন্তু একদল গবেষক জানাচ্ছেন ভিন্ন কথা।
তাদের এই গবেষনাটি সকল ক্ষেত্রে সফলতা দেখালে পদার্থবিজ্ঞানের সকল বই লিখতে হবে নূতন করে। পদার্থকে সাধারণত চাপ দিলে সংকুচিত হয়। চাপ বেশি হলে সংকুচনটাও হয় বেশি। সংকুচিত হতে হতে একদম চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত হয়। কিন্তু শিকাগোর উপশহরের এক গবেষণাগারে প্রচণ্ড চাপের ফলাফল দেখা গেছে অন্যরকম।
যখনই কোনো কিছুতে চাপ প্রয়োগ করা হয় সেটি সংকুচিত হতে থাকবে যদি না সেটি করার সময় আপনি অবস্থান করেন শিকাগোর উপশহরের আর্গন ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে(Argonne National Laboratory)। সেখানে চাপের ফলে বস্তু সংকুচিত না হয়ে হয়ে গেছে অসংখ্য ছিদ্রযুক্ত স্পঞ্জের মত। যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা চলে পোরাসের(Porous) মত। ল্যাবরেটরিতে যখন এমনটা দেখা গেল তখন তো সেটা বেশ অবাক করার মতোই কথা। তারা এই পরীক্ষাটি বার বার করেছেন।
কঠোর পরিশ্রম করেছেন ক'বছর।
চিত্র: পাথর হয়ে গেছে সছিদ্র স্পঞ্জের মত।
জিনিসটা সহজলভ্য হলে কাজে লাগবে অনেক ক্ষেত্রে। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল ঘটনাটা এক অর্থে পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মকে বুড়ো আঙ্গুলই দেখিয়ে দিল! এই ল্যাবরেটরিতে একদল বিজ্ঞানী প্রচলিত চাপের বাইরে বিকল্প উপায়ে চাপ প্রদান করে পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মকে আপাত দৃষ্টিতে উপেক্ষাই করে ফেলেছেন! ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব এনার্জি ল্যাবরেটরির (U.S. Department of Energy laboratory) ক্যারেনা চ্যাপম্যান (Karena Chapman) বলেন "এটি একরকম নুড়িপাথরকে সংকুচিত করা এবং তা থেকে বড় আকৃতির এক স্পঞ্জে রূপান্তরিত হওয়া। পদার্থের ক্ষেত্রে মনে করা হয় চাপ প্রয়োগ করলেই সেটা অধিকতর বেশি ঘনত্ব বিশিষ্ট হবে এবং তার অণুগুলো ঠাসাঠাসি করে অবস্থান নিয়ে সংকুচিত হয়ে যাবে।
কিন্তু আমরা একদম নির্ভুলভাবে, নিশ্চিতভাবে সে ক্ষেত্রে ভিন্ন আচরণ, ভিন্ন ফলাফল দেখেছি। এমন চাপের ফলে বস্তুগুলো বড়জোর অর্ধেক পরিমাণ সংকুচিত হয়। এবং এটির এমন আচরণ পদার্থবিদ্যার নিয়মের বিপরীতেই অবস্থান করে। ".
যেহেতু পদার্থের এমন আচরণ অসম্ভব তাই চ্যাপম্যান ও তাঁর সহকর্মীরা কয়েক বছর ধরে তা নিয়ে টানা পরীক্ষা পুনঃপরীক্ষা করে গেছেন। তারা ততক্ষণ পর্যন্ত পরীক্ষা করে গেছেন যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা এই অবিশ্বাশ্য ব্যাপারটাকে বিশ্বাস করেছেন।
সব পরীক্ষাতেই প্রায় একই রকম ফলাফল পেয়েছেন তারা।
রসায়নবিদ চ্যাপম্যান বলেন "এক্ষেত্রে বন্ধনের পুরো ব্যাপারটাই পাল্টে গিয়ে নতুন বন্ধন-সজ্জায় সজ্জিত হয় তারা। "
এই নতুন সচ্ছিদ্র অবস্থার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে পানি শোধন, রাসায়নিক সেন্সর, সংকুচনযোগ্য স্টোরেজ সহ আরও অন্যান্য দিকে। void(0);
তাদের এই গবেষণাকর্ম নিয়ে তারা Journal of the American Chemical Society'র ২২তম সংখ্যায় একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন।
সূত্র: সায়েন্স ডেইলি ও ফিজ ডট
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।