নিপুণ লেখনীর শানিত গর্জন / লিখব আজ নিপুণ কথন
১) "খুব জার নাগজে, তাই কানচি"
-শিরোনামে আজকের প্রথম আলোর বিশাল
বাংলায় (পৃষ্ঠা ৪) একটা প্রতিবেদন
ছাপা হয়েছে । সেখানে উঠে এসেছে বস্তির এক
হতদরিদ্র পরিবারের এক ছিন্নমুকুল শিশুর কান্নার
ধ্বনি । এই ধ্বনি আমার চোখেও জল এনে দিয়েছে ।
দেশের সবচেয়ে শীতল অঞ্চলটির পাঁচ-ছয় বছর
বয়সের এই শিশুর শীতের উপযোগী কোন গরম
কাপড় নেই । অনেক চেয়েও বাবা-মা কেন
একটা "ছইটার" কিনে দেয়না?- এটাই ওর প্রশ্ন
।
এই বাস্তবতা বোঝার বয়স ওর হয়নি । যখন
বুঝবে, তখন এই সমাজ, এই দারিদ্র্যের প্রতি ওর
ঘৃণা জন্মাবে । হয়তো অভাবের
জ্বালা সইতে না পেরে ও
হয়ে উঠবে সন্ত্রাসী! এই আশংকা উড়িয়ে দেই
কি করে? আমরা ব্যর্থ । এই শিশুটির
মতো হাজারো সুবিধাবঞ্চিত শিশুর অসহায়ত্বের
দায় আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না ।
২) "দেশ ছেড়ে আমি কোথাও যাব না"
- শিরোনামে প্রথম আলোর
খোলা কলমে একটি হৃদয়স্পর্শী লেখা লিখেছেন
সাংবাদিক অরুণ বসু ।
বিষয়ঃ সাম্প্রাদায়িক
নির্যাতন । একজন প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা ও
সাংবাদিক হয়েও কতটা অসহায় বোধ
করলে তাঁর হাতের লেখনীতে লেখা হয়-
"এই মাটিতে আমি জন্মেছি। দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ
করেছি। শরীরে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের
দোসরদের নির্যাতনের চিহ্ন আজও
আমি বয়ে বেড়াই। এ দেশ আমার।
এখানে আমার
ভিটে আছে। ঘন কালিতে মোটা হরফে তাই
লিখে দিতে চাই—দেশ ছেড়ে আমি কোথাও যাব
না। "
নিজ ভূমে পরবাসের মতো এই লেখাটি সব সচেতন
অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষের মনেই আঘাত
করে । একটু আগে লেখককে ফোন করে নিজের
অনুভূতি জানালাম । গত কিছুদিন
তাঁকে দেখেছি প্রথম আলোর
অফিসে কপালে দুশ্চিন্তার ভাজ এঁকে একের পর
এক সিগারেট শেষ করতে ।
এই লেখাটি সম্ভবত
সেইসব
দুশ্চিন্তা এবং পেরিয়ে আসা ৪৩টি বছরে মুক্তিযুদ্ধ
চেতনা বাস্তবায়নের ব্যর্থতার কথাই বলে ।
এই লেখাটিতেও একটি শিশু সন্তান ও তার
মায়ের কান্নাভেজা ছবি আছে । ঘর নেই,
থাকার জায়গা নেই; খাবার
জুটবে কোত্থেকে? যা ছিল সবই তো শেষ
করে দিয়ে গেছে হায়েনার দল! বাচ্চা শিশুটির
অশ্রুসজল চোখের দিকে আমি বেশিক্ষণ
তাকিয়ে থাকতে পারিনা । ওর ঐ অশ্রুবান
আমার চোখেও প্লাবন এনে দেয় । '
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।